মুক্তগদ্যঃ আমার শহর, ঘুমাও – ঈশিতা পাল

আমার শহর, ঘুমাও
ঈশিতা পাল

       সামনে একটি লেক প্রশ্নচিহ্ন হয়ে জেগে আছে। লেকের ওপারে আমার শহর, আহ্লাদী আলো পরিধানে। নতুন বৌয়ের সাজে শহর আর স্বর্গের সিঁড়ির রূপক লেকটির মাঝখান জুড়ে শুয়ে থাকা যে একফালি অন্ধকার,ওটাই আমি। আকাশের শামিয়ানার নীচে এত মনিহারী জ্যোৎস্নাও ওই অন্ধকারকে স্পষ্ট করতে পারেনি।লেকটিকে প্রশ্নচিহ্ন তথা স্বর্গের সিঁড়ি নামাঙ্কিত করার পেছনে গূঢ় অর্থ আছে।রাতের অভিধান খুলে সেই কারণসমূহ ব্যক্ত করার ইচ্ছে লিখে রাখছি। লেকটি স্বর্গের সিঁড়ি হবে বলে আশা ছিল। সেই স্বর্গ যেখানে পৌঁছলে আর ফিরে আসতে হতনা এই অন্ধকার রাতে। যেখানে সন্ধ্য আসে পা টিপে তেলের কুপির পাশটি দিয়ে। শেয়াল ডাকে অথচ নির্ভয়ে রাত নামে তারা ফোটায়।মরুসম বন্ধ্যা শহরের বুকে এই এক একটি লেক যেন পরম কাঙ্ক্ষিত মরূদ্যান। অথচ লেকের মনোলোভা রূপ এক গণ্ডুষে পান করেও সিঁড়ির তিলেকও আমার ছোঁয়া হলনা। স্বর্গ তো দূর। এই প্রেতপুরীর মত শহর কৃত্রিম আলোর ঠাঁটবাটে জাগিয়ে রেখেছে সহস্র শতাব্দী। ঘুমায়না রাত। বড় গোল বেঁধেছে। দিনরাত এক করে দিয়েছে।জোনাকিরা আমার বুকের ওইটুকু অন্ধকারে ককিয়ে কেঁদে চলেছে অবিরাম। এত ঝড়,কাঁটার মত ধুলো বিঁধছে চোখে। একটু বৃষ্টি এনে দেয়না এই রুখাশুখা শহর।দেমাকের তীব্র ছটায় চোখ জ্বালিয়ে দিলে!লাজের অন্ধকারটি হয়ে কেঠো শহর ও মজা লেকের মাঝে মুখ গুঁজে গন্ধর্ব সেজে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *