গুচ্ছ কবিতাঃ অষ্টপদী ৫ – পল্লববরন পাল
১ গানের ওপারে
অচেনা গলিতে ঢুকে মনে হয়, যেন কতো পরিচিত
মাঝে মাঝে চেনা রাস্তাও যায় হারিয়ে
নিজেকে কি চিনি? ঘুম থেকে উঠে প্রশ্ন অতর্কিত
চেনা যন্ত্রণা চেনা আশংকা – হোক না অবাঞ্ছিত
দামি দুঃখের ড্রইংরুমের সোফায় রয়েছি স্থিত
এই অসময়ে কে দিলো বাঁহাত বাড়িয়ে?
সন্ধ্যাবেলার আলোয় বাজছে রবীন্দ্রসংগীতও
তুমি কি গানের ওপারেই আছো দাঁড়িয়ে ?
২ কেলেংকারি
কুশীলবগণ সপরিবারেই এলেন
এইটুকু ঘর, স্থান অকুলান ভিড়ে
আমার ঠিকানা কোত্থেকে যে পেলেন
এগারো স্বামীকে নিয়ে ট্রয়রাণী হেলেন
বারোকে খুঁজতে দামোদর মিস্ত্রী লেন
ঘুপচি এ ঘরে আলোঝলমলে হীরে
ধাঁধাচোখে আমি ‘এসো বোসো’ ব’লে কেলেং-
কারিটা বাড়িয়ে এগিয়ে দিলাম পিঁড়ে
৩ কলমের নখে
জানলার কাঁচে নখ আঁচড়ায় জল
কলমের নখ আঁচড়ায় মস্তিষ্কে
তন্নতন্ন শব্দের জঙ্গল
শব্দিত – শুধু অক্ষম কোলাহল
শব্দনারীকে খুঁজে খুঁজে চঞ্চল
কবুতরডানা উড়িয়ে দিয়েছি ইশ্কে
চোখের জল-ও কি অবশেষে নিষ্ফল
কলমে কমলকামিনীকে লিখছিস কে?
৪ ছিঃ
আকাশের কতো বয়স হয়েছে জানো?
মেঘের সাথে কী অশালীন খুনসুটি!
কস্মোলজি কী বলছে জিওর্দানো?
আকাশ –সে তুমি মানো ছাই নাই মানো
বখে যাওয়া ছেলে – বাপ-মা ঘর খেদানো
মেঘের সঙ্গে যেন খাজুরাহো জুটি
আষ্টেপৃষ্ঠে লজ্জাহীন জড়ানো
এটা সেন্সর সৌরশাখার ত্রুটি
৫ ঝাল কুমির
অন্য মুখের ঝাল খাওয়া অভ্যেস
জিভে বাজে কাঁচালঙ্কার ঝাঁপতাল
তালে তালে বোধবুদ্ধি নিরুদ্দেশ
অভিজ্ঞতায় অধুনা পক্ককেশ
অন্য মুখের ঝালকেই জিজ্ঞেস
করে জেনে নিই সব হকিকৎ হাল
ঝাল খেয়ে ঝাল উগরে হাপিত্যেস
এবার কুমির ডাকতে কাটছি খাল