ভালোবাসার গল্প: মুখোমুখি বসিবার – ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না

মুখোমুখি বসিবার
ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না

মাথার নীচে দুহাত রেখে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে পায়ের ওপর পা তুলে আর গভীর চিন্তায় ডুবে আছে কৌস্তুভ। এভাবে সোফায় বসে থাকতে থাকতে পিঠে একটা ব্যথা অনুভব করল সে। টি ভি টা মিউট করে রাখা। গত এক ঘন্টা যাবৎ সে ওসব খবর টবরে মন দিতে পারছে না। তার চোখের সামনে ভেসে উঠছে স্বাগতার ক্লান্ত রুগ্ন মুখটা। সেই চনমনে উচ্ছ্বল মেয়েটার কোনও চিহ্নই আর নেই। ড: দিবাকর যখন তাকে পরীক্ষা করছিল তখন তার শীর্ণ হাত দুটোর দিকে চোখ যায় কৌস্তুভের। বুকের মধ্যে একটা চাপ অনুভব করে সে। অথচ ডাক্তারের তো এমন হবার কথা নয়। প্রথম প্রথম টার্মিনাল কেসগুলোর চাপ সে নিতে পারত না। হসটেলে ফিরে মনমরা হয়ে থাকত। ডাক্তার হবার স্বপ্নটা ভেঙেচুরে যেত। আসলে স্বপ্নটা তার কোন দিনই ছিল না। স্বপ্নটা ছিল তার মা- বাবার। প্রফেসর বাবা -মার স্বপ্ন পূরণ করেছে সে মাত্র। আজ আবার সেই হাউসস্টাফশিপ ইন্টার্ন শিপের কঠিন নির্মম দিন গুলোর সামনে যেন সে এসে পড়েছে। গত মাস থেকে এই স্বাগতা পাণিগ্রাহীকে দেখছে সে আর দিবাকর স্যার। স্যার তো জানেন না যে কৌস্তুভ এই মেয়েটিকে আগে থেকে চেনে। স্যারকে কথাটা বলতে না পারার কারণও তো স্বাগতাই যাকে সে নাম দিয়েছিল ‘ব্লুজ’। স্বাগতাতো একবারও চেনে বলে ভাব দেখাল না। আজও ও দিবাকর স্যারের সামনে বসে রইল নির্লিপ্ত ভঙ্গীতে যেন কোনো দূরের মানুষের প্রোটোকল শুনছে। সঙ্গে যে ভদ্রলোক আসেন তাঁকে কখনও স্বাগতা ডক্টরস্ রুমে আসতে দেয় না। দিবাকর স্যার বাড়ির কেউ আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে খুব জোর দিয়ে বলেছিল ” আমাকেই সব বলুন”। ওরা যখন কথা বলছে কৌস্তুভ “একটু আসছি” বলে বেরিয়ে করিডোরে অপেক্ষমান ভদ্রলোকটিকে ডাকল। লোকটি এগিয়ে আসতেই তাকে ইশারায় থামিয়ে দিয়ে নিজেই এগিয়ে গিয়ে জানতে চাইল পেশেন্টের সাথে তার কী রিলেশন। ভদ্রলোক একটু ইতস্তত করে বললেন তাঁর স্ত্রীর কলেজের বন্ধু স্বাগতা। স্বাগতার বাড়িতে কেউ নেই এবং এ শহরে ওদের ভরসাতেই সে চিকিৎসার জন্য এসেছে। কৌস্তুভ যতদূর জানে স্বাগতার বাবা মা ও এক ভাই ছিল। সে এটাও ভাবল বিশেষ কিছুই তো জানা হয়নি মাত্র কয়েক মাসে । এম বি বি এস এর রেজাল্ট ভাল হয়েছিল বলে দু’সপ্তাহের ট্যুরে বাবা মা আর সে বেরিয়েছিল দেশ দেখতে। অজন্তায় এসেছিল স্বাগতাদের “ইয়াং ওয়ান্ডার্স” গ্রুপ। ওরা ছিল একেক জন এক এক গুণে গুণী। সকলেই কোন এক সময়ে ভুবনেশ্বরের একই ইনস্টিটিউট থেকে এম বি এ করে এখন নানা শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। কলকাতা থেকে শুধু মাত্র স্বাগতাই ছিল। বিখ্যাত মাল্টি ন্যাশনালের কর্মী। তার মানে স্বাগতা আবার কলকাতায় ফিরে এসেছিল কোন একটা সময়ে। কৌস্তুভ ভদ্রলোককে ধন্যবাদ দিয়ে দ্রুত ফিরে এল। স্বাগতা তখনও বসে আছে। দিবাকর স্যার কম্পিউটারে চোখ রেখে ব্রেইন স্ক্যানের রিপোর্টটা আর একবার দেখছেন। হঠাৎ উঠে পড়লেন বললেন আমি একটু রেডিওলজিতে যাচ্ছি
তুমি এর স্কেডিউল টাইপ করে দাও। নেক্সট স্যাটারডে সার্জারি হবে কি না জানানো হবে। তার আগে পেট সিটি স্ক্যান রিপোর্ট টার হার্ড কপি পেশেন্টের হাতে দিতে হবে। উই উইল স্টার্ট ট্রিটমেন্ট অ্যাজ আর্লি অ্যাজ পসিবল্। কৌস্তুভ কম্পিউটারে বসতে বসতে বলল, ” তুমি কি আমাকে চিনতে পারনি স্বাগতা? স্বাগতা নির্লিপ্ত গলায় বলে “হ্যাঁ পেরেছি। আমাকে জ্যোতি বলেছে তুমি এখন এখানে আছো। জ্যোতিকে তোমার মনে আছে তো হারমনিকা বাজিয়েছিল?”এত দূর থেকে নির্লিপ্ত ভাবে সে কথাগুলো বলল যে কৌস্তুভের মনটা ব্যাথায় কুঁকড়ে গেল। জ্যোতিকে তার বাবা মায়ের খুব পছন্দ ছিল কিন্তু অবাঙালি বলে একটু আপত্তি ছিল। মায়ের আবার বাঙালি সুন্দরী মেয়ে চাই ছেলের জন্য। তবে তখনও সে সেটেল্ড নয় বলে এসব ভাবনা বেশি দূর গড়ায় নি। কৌস্তুভের পছন্দ হয়েছিল স্বাগতাকে। তৃতীয়দিনেও কৌস্তুভ আর একবার অজন্তার বিশেষ কয়েকটা কেভ দেখার জন্য গেছিল আর মেয়েদের দলটাও ছিল। সেদিন কৌস্তুভ স্বাগতাকে তার মনের কথা কিছুটা বুঝতে দিয়েছিল। স্বাগতাও আগ্রহ দেখিয়ে বলেছিল “আমার মন চাইছে তোমার সাথে যেন যোগাযোগটা থাকে। এর বেশি এখনই কিছু চাইছি না।” কৌস্তুভ ওর হাতটা ধরে রেখেছিল কয়েক মিনিট। উচ্ছ্বল, যখন তখন গেয়ে ওঠা মেয়েটির হাতের পাতা ঘামে ভেজা ছিল। ভালবাসার সামনে হঠাৎ এসে পড়া দুই তরুণ তরুণীর মনের অবস্থা নিজেদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল সেদিন। ফোন নম্বর আদান প্রদান করেই সেবারের ট্যুর শেষ হয়েছিল। কলকাতায় এসে ফোনে গল্প করার খুব লম্বা সুযোগ ছিল না দিনের বেলা। রাতে তাদের লম্বা ফোনালাপ চলত। মাঝে মধ্যে দু একবার কফিশপে দেখাও করেছে দুজনে। একদিন কৌস্তুভের বাড়িতেও গেছিল নেমতন্ন খেতে। স্বাগতা তার পরিবার সম্বন্ধে বিশেষ কিছু বলত না। সে যে ওড়িষার রিয়ালিটি শো চাম্পিয়ান সেটাও অনেক পড়ে জানিয়েছিল। অথচ ফোনে সে সর্বদাই রসিকতা করত, রবীন্দ্রসংগীতও শুনিয়েছিল একরাতে। সেদিন কৌস্তুভের নাইট শিফ্ট সার্থক হয়েছিল। কিন্তু তারপর হঠাৎ একদিন ফোন বন্ধ করেছিল স্বাগতা, ফোন ধরছিলও না। বেশ কদিন নানা রকম দুশ্চিন্তা ও আশংকায় ভুগে একদিন মরিয়া হয়ে ওর অফিসে চলে গেছিল কৌস্তুভ। স্বাগতার খোঁজ করতে ওর অ্যাসিস্ট্যান্ট মেয়েটি বলেছিল, “ম্যাডাম হ্যাস গন টু নিউইয়র্ক ফর ওয়ান ইয়ার ডেপুটেশন।” কৌস্তুভ বলে ফেলেছিল “হোয়াট! হাও ক্যুড শী ডু দ্যাট?” মেয়েটি অবাক হয়ে তাকিয়েছিল। হাল্কা করে কাঁধ ঝাঁকিয়েছিল। খানিক্ষণ বোকার মতো দাঁড়িয়েছিল কৌস্তুভ।
কৌস্তুভ বর্তমানে ফিরে আসে। স্বাগতা চুপ করে সামনের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। একটা রুগ্ন, অসহায়, মৃত্যুর মুখে একা দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে বা নারী কী করে এমন নির্লিপ্ত হতে পারে? কৌস্তুভ স্বাগতাকে বলে ” তুমি কি আমার সাথে কোথাও কিছুক্ষণ বসতে পার? অনেক কথা বলার আছে। ইউ হ্যাভ স্টিল হ্যাভ এ চান্স। ড: দিবাকর সেই রকমই মনে করেন। প্লিজ ডোন্ট সে নো অ্যান্ড গিভ মি এ চান্স অলসো।” স্বাগতা বলে, “এত কিছুর পরেও?” খানিক্ষণ থেমে বলে, “আই নো মাই ডেজ আর নাম্বার্ড। বল কোথায় যাবে?”
তারপর পরশু দিন স্বাগতার বন্ধুর বাড়ি সল্টলেক থেকে তাকে পিক আপ করে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে কৌস্তুভ। মা বাবার যাদবপুরের বাড়িতে সে থাকে না। এখনও বিয়ে করার সময় পায়নি। দিল্লি থেকে অঙ্কোলজি নিয়ে স্পেশালাইজেশন করার পর এই হসপিটালে জয়েন করে আর কোনো দিকে তাকাবার সুযোগই পায়নি। এখানে একটানা ছত্রিশ ঘন্টা ডিউটিও করতে হয়েছে। সাত বছর আগের সেই হঠাৎ প্রেমে পড়ে যাবার মন আর নেই। স্বাগতা অনেকক্ষণ চুপ করে শুনছিল তার কথা। হঠাৎ বলে “আমার কয়েকটা কথা তোমায় বলা হয়নি। আসলে আমার কোনও ফ্যামিলি নেই। আমি অরফ্যানেজে বড় হয়েছি। অরফ্যানেজের প্রিন্সিপালকেই আমরা মা বলে ডাকি। আমার পুরো পড়াশোনাটাই স্পনশরশিপে হয়েছে। আমি হয়তো স্বাগতা পাণিগ্রাহী নামটাও পেতাম না যদি না প্রিন্সিপাল ম্যাম নিজের সারনেম আমায় দান করতেন। আমার গোটা জীবনটাই কারো না কারো দানে চলেছে। আমিও ওই অরফ্যানেজে দুটি মেয়ের স্পনসর। আমার সব শিক্ষা আর গড়ে ওঠাটাই মায়ের অবদান। আমার কাস্ট অ্যান্ড রিলিজিওন আমি নিজেও জানি না। তাই ভাল করে মন দিয়ে কোনো ঈশ্বরকেই ডাকতে পারি না। আমার কোনো ছোট পরিবার নেই। এক বিশাল পরিবারের আমিও একজন। তুমি কি এটা মানতে পারতে?”
কৌস্তুভ এতটা অবাক জীবনে আর কখনোই হয়নি। এ যেন কোনো মুভির গল্প শুনছে। সে এতদিন ভেবে গেছে স্বাগতা নিশ্চয়ই অন্য কাউক ভালবাসে। ওর প্রতি ক্ষোভ ও অপমানে সে অন্য কোনো মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়াতে পারেনি। বিয়ে করার তাগিদও অনুভব করেনি। শুধু কাজ আর পড়াশোনা করে গেছে। ও বুঝতে পারে না এই মেয়েটিকে ক্ষমা করবে না কি ঘৃণা করবে। সেই সুন্দর তাজা মুখটা এখন ভেঙে চুড়ে গেছে। নিটোল মসৃন হাতগুলো শীর্ণ শিরা ওঠা। ঠোঁট বিবর্ণ। কৌস্তুভ বলে,”কিন্তু আমার কী অপরাধ ছিল,হোয়াই ডিড ইউ ডাম্পড মি? আমার দোষ ছিল কোনো? তুমি একবার বলে দেখতে পারতে।”
স্বাগতা অনেকটা কথা বলার পর হাঁপিয়ে গেছিল। কয়েকটা মুহূর্ত চুপ করে থেকে বলল, “আসলে আমি খুব হ্যাজিটেটেড হয়ে গেছিলাম। তোমাদের বাড়ি যেদিন যাই সেদিন তোমার মা ফোনে কারো সাথে কথা বলছিলেন। তোমাদের কোনো আত্মীয় একটি চাইল্ড অ্যাডাপ্ট করতে চাইছিলেন তোমার মা আননোন ব্লাডের বাচ্চা ফ্যামিলিতে আসবে এটা পছন্দ করছিলেন না। আমি কল্পনায় দেখতে পেলাম উনি আমাকেও অস্বীকার করছেন, অপমান করছেন।” আমি ফিরে এসে ডিসিশন নিই এই শহর ছেড়ে ভুবনেশ্বরে চলে যাব আর তখনই সুযোগটা এল স্টেটস এ যাবার।” কৌস্তুভ চুপ করে রইল। মায়ের যে কত বাতিক তাতো সে জানে আর বাবাও খুব একটা প্রতিবাদী নয়। নীরা বৌদি জেদ না ধরলে বাবিন হয়তো অনাথই থেকে যেত। এত কথার এখন আর কোনো মানে নেই তাই শুধু বলল “তুমি আমাকে আন্ডার এস্টিমেট করেছিলে আর বিশ্বাসতো করই নি। আমার ভালবাসাকেও মর্যাদা দাওনি। একবার আমার দিকটা ভাবনি।”
স্বাগতা বলল “তোমরা যারা নিজের মা বাবার কাছে বড় হয়েছো তারা কোনোদিনই আমাদের মতো অরফ্যানদের মানসিকতা বুঝতে পরাবে না। আমাদের ডিলেমা, কনফিউশন অ্যাঙ্গার, অ্যান্ড হোপলেসনেস বুঝতে পারবে না। সারাজীবন ধরে আমরা খুঁজে চলি কে আমার বাবা কে আমার মা? মনে মনে অনেক প্রশ্ন সাজাই। সব কটাই হোয়াই দিয়ে শুরু হয়। অ্যাবানডানড্ হবার বেদনা লেগে থাকে সব ভাবনায়। তাই হয়তো প্রত্যাঘাত করার ইচ্ছেটা থেকে যায় সাবকনশাসে। আমাদের সম্পর্কটা একবারে একটানে না কাটলে আর পারতাম না। আর এখন তো সবই শেষ।” কৌস্তুভ নিজের অজান্তেই বলে ওঠে “কে বলেছে সব শেষ? আমি তোমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। আমরা আবার শুরু করতে পারি”। তারপর অনেক্ষণ স্বাগতা চুপ করে থেকে বলেছিল জানতো আমি এবার একেবারে একা হয়ে গেছি। মাও চলে গেছে। চিকিৎসার পর যদি কোনো টাকা থাকে তা যেন অরফ্যানেজের হাতে যায় সে ব্যবস্থা হয়েই আছে।” তারপর ফ্ল্যাটটার চার পাশে চোখ বোলাতে থাকে। এক সময় বলে, “হসপিটালের এত কাছে তোমার ফ্ল্যাট, আমাকে একটা ঘর দেবে? অরুনিমার ফ্ল্যাটটা বড্ড ছোট। আমি ওর ছেলের ঘরটায় আছি। বেচারার বড় অসুবিধা। বাট দে আর ভেরি ডিসেন্ট পিপল্ ইউ নো। দে নেভার কমপ্লেন। তবে কোনো পরিবারের মধ্যে থাকলে এই শেষ সময়টা ইমোশনালি দুর্বল হয়ে পড়ছি।” কৌস্তুভ চমকে ওঠে প্রস্তাবটায় তবে রাজি হয়ে যায়। তবু জিজ্ঞেস করে,”আর এখানে থাকলে?” স্বাগতা মৃদু হেসে এড়িয়ে যায়।আজ এখন তাই এত ভাবনা তার। গেস্ট রুমটা যতটা পারে রেডি করেছে। কেয়ার টেকারকে বলেছে একজন রাঁধুনি জোগাড় করতে। কিছুদিন পরে আয়াও হয়তো লাগবে। কী যত্ন করবে কী গল্প করবে কী বলে মনের জোর বাড়াবে সব কথা হুড়মুড় করে মাথায় আসছে। কিন্তু কিছুতেই স্বাগতার মৃত্যু দৃশ্যটার মুখোমুখি দাঁড়াতে পারেনা। সে কি পারে না স্বাগতার আয়ুকে আর একটু বাড়িয়ে দিতে? কালই তো চেকআপের পর স্বাগতা তার বাড়িতে চলে আসবে। শনিবার অপারেট করা সম্ভব কিনা জানাও যাবে। কৌস্তুভ স্বাগতার এইভাবে ফিরে আসাতে খুশি নাকি আবারও ভুল হচ্ছে বুঝতে পারে না। বুঝতে পারে না কেন স্বাগতা তার কাছে থাকতে চায়? তাকে কি এখনো ভালবাসে? না কি একা এই কঠিন অসুখের সাথে লড়াইটা ডাক্তারের সাথে মিলে করতে চায়? অপারেশনের সময় ওর পরিবারের খোঁজ পড়বে। স্যারকে সব বলতে হবে মা বাবাকে এখনো কিছু জানায়নি সে। বাবার কার্ডিয়াক সমস্যা আছে। মা ডায়াবেটিক। ওরা কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করবে সেটা অনুমান করতে পারে সে। মাথার ভেতর আনন্দ,ভয়,বেদনা আর চিন্তা কিলবিল করছে যেন একদল সাপ জড়াজড়ি করছে, হিস হিস করছে। পরিত্রাণ পাবার জন্য বহুদিন পর সেতারটা হাতে নেয় কিন্তু বাজাতে পারে না। জগৎ সংসারের ওপর কী এক অভিমান চেপে বসে। দুহাতে মুখ ঢেকে কাঁদতে থাকে সে শব্দ করে। আর স্বাগতা এক অচেনা বিছানায়, আধানচেনা শহরে নতুন করে বেঁচে ওঠার অসম্ভব স্বপ্নটা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ে।

One thought on “ভালোবাসার গল্প: মুখোমুখি বসিবার – ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না

  1. খুব টানটান গল্প, দারুণ লাগলো আমার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *