পরিচয় পর্ব শেষে
পার্থ রায়
ছেলে পরেশ চাকলাদার তার বাপ সুরেশ চাকলাদারকে দেখতে পেয়ে বেজায় খুশি। দুজনেই খুশির চোখের জলে ভাসছে। প্রণাম করতেই সুরেশ ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। আবেগ, ভালবাসা, খবরাখবর আদান প্রদান হল। হবে নাই বা কেন? কতো দিন থুরি কতো বছর পরে দেখা। সিনেমার মতো শেষ দৃশ্যে ‘বিছরে হুয়ে’ বাপ ব্যাটার মিলন। যা তা ব্যাপার তো নয়। এখানে আসার পরে বাবাকে খুঁজে বের করতে পরেশের কম কালঘাম ছুটেছে? যাই হোক প্রাথমিক উচ্ছ্বাস একটু লাঘব হতে দুজনে মিলে একটা শান বাঁধানো আসনে বসল।
“বাবা, তোমার সাথে এদের পরিচয় করিয়ে দিই। তুমি তো এদের দ্যাখোইনি”
“বেশ, বেশ”
“ওই যে দেখছ “রাণী রাসমণি” সিরিয়াল দেখছে ও তোমার বৌমা লতা। চলো পাশের ঘরে। অন লাইনে ছাত্রছাত্রি পড়াচ্ছে যে মেয়েটা ও হল তোমার নাতনী পায়েল”
সুরেশের চোখে আনন্দাশ্রু।
“একটাই সন্তান তোর?”
“না। আর একজন আছে। ডাইনিং টেবিলে বসে মোবাইলে বন্ধুদের সাথে চ্যাট করছে যে ও হল তোমার নাতি বল্টু”
“বাহ! কী সুন্দর সংসার তোর! তুই তো বাউন্ডুলে টাইপের ছিলিস। তোর মা অকালে চলে যাবার পরে তোকে নিয়ে আমার চিন্তা ছিল। যাক নিশ্চিন্ত হলাম। বৌমা, দাদুভাইরা সবাই ভারী মিষ্টি দেখতে। তা এবার ওদেরকে আমার পরিচয়টা দে”
থমকে যায় সুরেশ। করুণ, অসহায় দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকায়। গলা বুজে আসে।
“কী হল রে তোর? চল পরিচয় করাবি”
“বাবা, তুমি ভুলে গেছ। ওরা যে অন্য লোকের বাসিন্দা”
সুরেশকে কেমন হতভম্ব দেখায়।
অস্ফুটে পরেশ বলে, “ওরা যে এখনও ইহলোকে”।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা টিম অবেক্ষণকে।