গল্পঃ জীবনের রঙ – পার্থ রায় (কলকাতা)

জীবনের রঙ
পার্থ রায়

সব না হলেও, কোলকাতার বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ঢোকার মুখে কফির দারুন একটা সিডিউসিং গন্ধ পাওয়া যায়। অনিকেতের ভালো লাগে। ওর ভাষায় জীবনের গন্ধ। কড়া কফির গন্ধ ওর প্রিয় গন্ধগুলোর মধ্যে একটা। কাঁচের পুশ-পুল দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলে রাধা কৃষ্ণের কিম্বা সিদ্ধিদাতা গনেশের সৌম্য সুন্দর মূর্তিও শঙ্কিত মনে ভরসা যোগায়, যদিও অনিকেত মা কালীর ভক্ত। কালীর ছবি অথবা মূর্তি অবশ্য অবাঙ্গালী পরিচালিত এইসব হাসপাতালে থাকে না। সে যাই হোক, কিন্তু তারপরে? তারপরের চিত্র পৃথিবীর সব হাসপাতালেই বোধ হয় এক। রুগীদের শারীরিক যন্ত্রণা, অনিশ্চিতি আর রুগীর প্রিয়জনেদের উদ্বিগ্ন মুখের বলিরেখার নির্বাক কথনে কোন পার্থক্য নেই। স্ত্রীর ন্যাজলবিয়াল শিষ্ট এক্সিশন অপারেশনের কারণে এবার অনেক দিন পরে হাসপাতালে যাতায়ত করতে হল। নিকট দূর আত্মীয় স্বজন, সহকর্মীদের জন্য শহরের বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি হাসপাতাল আর শ্মশানে যাওয়ার ব্যাপারে অনিকেতের অভিজ্ঞতার ঝুলি পরিপূর্ণ। দুটো জায়গাতেই অনিকেত যায় অনিচ্ছায় তেতো গেলার মতো। প্রতি ক্ষেত্রেই ওর সংবেদনশীল মনে অনুভূতি গুলো কোন না কোন ঘটনার ঘাত প্রতিঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়। প্রকৃতিতে প্রতিটি অস্তিত্বের অস্থায়ী অবস্থানের যে অমোঘ জীবন দর্শন সেটা এই দুটো জায়গাতে বড় প্রকট। ব্যাতিক্রম শুধু একটা ক্ষেত্রেই, সেটা হোল শিশু জন্মের ক্ষেত্রে। তা কোন সরকারী হাসপাতালের হৈ হট্টগোলের ডরমিটরিতেই হোক অথবা বেসরকারি হাসপাতালের শীতল, পরিচ্ছন্ন, আরামদায়ক কেবিন ঘরে। জন্মদাত্রী মায়েদের অনাবিল স্নেহ উপচে পড়া হাসিতে সন্তান সুখের পরমানন্দ, এখানেও অনিকেত জীবনের গন্ধ পায়।

অনিকেতের স্ত্রী ইন্দুরেখা ছয়তলায় ফিমেল ওয়ার্ডের যে রুমটাতে ছিল সেখানে পাঁচটা বেড। একদিকে তিনটে, আর একদিকে দুটো। প্রতিটা বেডের চারপাশে পর্দা লাগানো আছে। ইচ্ছেমতো ঢেকে দেওয়া যায় আবার সরিয়ে ফেলা যায়। যেদিকে দুটো বেড, সেদিকে বেড দুটোর মাঝে ভিজিটিং ডাক্তারবাবুদের বসার জন্য একটা টেবিল চেয়ার রাখা আছে, যদিও অনিকেত যে কদিন হাসপাতালে গেছে, কোন ডাক্তারবাবুকেই ওখানে বসতে দেখে নি। পাঁচটা বেডের একটা খালি, একদিকে ইন্দুরেখা আর বছর ২২/২৩ এর হাসি মুখের আয়েশা বিবি, ওদের মাঝে বেড খালি। অন্যদিকে তিন বছরের বিবাহিতা আহ্লাদী আদুরী ঝুলন আর মিষ্টি মুখের বিহারী মেয়ে ছিপলি। হাসপাতাল যেন একটা সাময়িক সংসার। যে যার সংসার থেকে রোগ নিরাময়ের কারণে এসে আর এক অস্থায়ী সংসার গড়ে তোলে, একা আরামে থাকার অগুনতি বাসভূমিতে এ যেন কিছু হাতে গোনা একান্নবর্তী পরিবার। যে মানুষগুলো অনেক সময় সামান্য অ্যাডজাস্টমেন্ট না করে এবং সহিষ্ণুতা না দেখিয়ে সংসার ভেঙ্গে আলাদা হয়, তারাই হাসপাতালে সহমর্মিতার অসাধারন নিদর্শন রাখে। রাতভর ছিপলির যন্ত্রণা আর কান্নায় অন্যরা এতোটুকু বিরক্ত না হয়ে ওকে সাহস জুগিয়ে গেছে। এখানেই মানুষ অনন্য। তাসের আড্ডায় যেমন বড় ছোট ব্যাপার থাকে না, একসাথে সিনিয়র জুনিয়ররা সিগারেট, খৈনি খায় এখানেও এই চারজনের সংসারে অনিকেত সেই একই ব্যাপার দেখতে পেল। ওদের আলোচনায় কোন বাধা নিষেধ নেই, নেই কোন লাগাম। সকাল দশটা থেকে এগারোটা যে ভিজিটিং আওয়ারস সেই সময়টাতেই স্বামীর কাছে নানা রকম রসালো তথ্যের ঝুলি উপুড় করে দিত ইন্দুরেখা। আয়েশা আর ঝুলনের ক্ষেত্রেও ওদের স্বামীদের সাথে একই ব্যাপার। ছেলে মেয়ে অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতিতে বিকেলবেলা সেটা সম্ভব ছিলনা। অনিকেত জেনে গেছে কার কি রোগ। ঝুলনের ব্রেসটে টিউমার হয়েছিল, অপারেশন হয়ে গেছে। ছাড়া পাবার অপেক্ষায়। আয়েশার বাচ্চা হয় না, তার মধ্যে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো গল ব্লাডারে পাথর এবং সেটা থেকে জন্ডিস হয়ে প্রাণ সংশয় হয়েছিল। জন্ডিস অনেকটা ঠিক হয়েছে। পুরোপুরি ঠিক হলে টেস্ট করে তবে গল ব্লাডারের স্টোন অপারেশন করতে হবে। জড়ির কাজ করা ওর মিষ্টি কিশোর কিশোর মুখের স্বামী ইমাদুল আপাতত ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। সেই নিয়ে ঝুলনের বক্তব্য, “আহারে, বউকে কাছে পাচ্ছে না তো। বেচারা হাঁফিয়ে উঠেছে”। তার উত্তরে আয়েশা চোখ নাচিয়ে বলেছে, “কি করবে বলো? তার যে তোমার বরের মতো পর্দা টেনে চুমু খাওয়ার সাহস নেই গো”।

শুনে ঝুলনের মুখে সিঁদুরের রঙ। বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে পয়সা যেমন নেয়, তেমনি নানা রকমের কায়দা কানুন। কতো রকমের কর্মী; হাউস কিপিং স্টাফ, ফ্লোর ম্যানেজার, ডায়েটিসিয়ান-তাছাড়া ডাক্তার, নার্স, চিফ নার্স তো আছেই। সত্যি বলতে কি এরা হাসি মুখে মেশিনের মতো নিরলস কাজ করে। ইন্দুরেখার মারফত অনিকেত জেনে গেছে কোন তরুণী সুন্দরী নার্স কোন হ্যান্ডসাম ডাক্তারের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, সেই ডাক্তারও যে সেটা উপভোগ করে এবং কিছু অতিরিক্ত প্রশ্রয় দান করে, চিফ নার্স নমিতাদির আপাত কঠিন দৃষ্টির আড়ালে রুগীদের এবং ট্রেনি নার্সদের প্রতি মাতৃ-সুলভ মমত্ব বোধ, এমন আরও কতো কথা। এসবই ঝুলন আর আয়েশা হাউস কিপিং মেয়েদের খাবার ঘুষ দিয়ে সংগ্রহ করে আর ইন্দুরেখাকে দেয়। আসলে রোগের গুরুত্ব অনুযায়ী ঝুলন আর আয়েশা এই হাসপাতালে স্থায়িত্বের দিক দিয়ে ইন্দুরেখার থেকে সিনিয়র। ##

এবার আসি ছিপলির কথায়। বছর তিরিশের ছিপলি স্বামী আর দুটো বাচ্চা নিয়ে মেটিয়াবুরুজে ভাড়া থাকে। ওদের ঘরের সাথেই ওর স্বামীর একটা ছোট্ট ছাতুর দোকান। তাছাড়া বিহারে কিছু ভাগের ক্ষেতি জমি আছে। রোগের যন্ত্রণা ক্লিষ্ট মুখের আড়াল থেকে শ্যামলা রঙের, শান্ত হরিণ চোখের মেয়েটির মুখে যখন হাসি ফোটে অনিকেতের মনে হয় বেশীর ভাগ সময় মেঘে ঢাকা দার্জিলিঙের ম্যালে সোনালী নরম রোদের তুলির টান। কোন বোন না থাকা অনিকেতকে যখন মিষ্টি করে “ভাইয়া” বলে সম্বোধন করে কিছু বলে, ওর মনের আকাশে কেউ রামধনুর রং ছড়িয়ে দেয়। এই মিষ্টি ডাক হাসপাতালের ওই পরিবেশেও একটা নরম ভালো লাগা এনে দেয়।

কোলকাতার এক সরকারী হাসপাতালে ছিপলির ইউটেরাস অপারেশন হয়েছিল। মধ্য বয়েসে অধিকাংশ মহিলার এই অপারেশন হয়, সাধারনত ইউটেরাসটা বাদ দিয়ে দেয়। কিন্তু চাকুরী আর মনের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়ার ক্ষেত্রে যেমন ভাগ্য একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রেও বোধ হয় তাই। জানা গেল অপারেশন পরবর্তী স্টেজে ওর সাংঘাতিক ইনফেকশন হয়ে যায়। সেটা ডাক্তারের অপারেশন বা হাসপাতালের পরিকাঠামোগত ত্রুটি, না কি অশিক্ষিত পরিবারটির কোন অসাবধানতাবশত হয়েছে তা অজানাই থেকে গেছে। ইন্দুরেখা যবে থেকে ভর্তি হয়েছে তবে থেকে দেখেছে ও কোন খাবার খেতে পারে না। কোন মতে খেলেও হয় বমির উদ্রেক না হলে বমি হয়ে সব খাবার বেরিয়ে যায়। তাছাড়া আছে প্রস্রাব পায়খানার সাথে রক্তপাত। এই ব্যয়বহুল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা চালাতে চালাতে স্বামীর ধার দেনা হয়ে গেছে। বাংলা ভালো বলতে না পারলেও সবটাই বোঝে। ফলে ও জেনে গেছে ওর সাথের বাকী তিনজনের আগেই ছুটি হয়ে যাবে। স্বামীর কাছে কেঁদে বুক ভাসায়, “মুঝে ঘর জানা হ্যে। ঘর জানেসে হাম জরুর ঠিক হো জায়েগা। মেরা বাচ্চা লোগোকো সাথ রহনে সে ম্যে আচ্ছা হো জায়ুঙ্গি”। ভিজিটিং ডাক্তারকেও বলে, “মুঝে ছুটটি চাহিয়ে ডাগদারবাবু। হামলোগ গরীব আদমি। ইন লোগো কি পেহেলে আপ মুঝে ছুটটি দে দো। ম্যে হিয়া পড় অকেলা নেহি রহুঙ্গি। ম্যে আপকি পায়ে পড়তি হ্যু”। স্বামী, ডাক্তার, চিফ নার্স নমিতাদি সবার মুখেই এক বেদনাক্লিষ্ট অসহায়তা।

আজ সকালের ভিজিটিং আওয়ারসে ইন্দুরেখাদের রুমে সকাল থেকেই ছোটাছুটি ব্যাস্ততা। ছিপলিকে ঘিরে হাসপাতালের ডাক্তারবাবু, নমিতাদি অন্যরা ছাড়াও একজন অভিজ্ঞ বড় ডাক্তার রয়েছেন। আয়েশা, ইন্দুরেখার থমথমে মুখ। দুজনেরই আজ ছুটি হয়ে যাবে। ওদের ডাক্তাররা লিখে দিয়ে গেছেন। ঝুলনের গতকাল ছুটি হয়ে গেছে। অন্যদিন রুমে ঢোকার সাথে সাথেই অনিকেত প্রথমেই দরজার উল্টোদিকে শুয়ে থাকা আয়েশার হাসিমুখ দেখতে পায়। ইন্দুরেখার দিকে তাকিয়ে বলে, “দিদি, তোমার মনের মানুষ এসে গেছে”। আজ আয়েশা নিশ্চুপ। কারুর মুখে খুশী দেখতে না পেয়ে অবাক হল। মুখে আষাঢ়ে মেঘ নিয়ে ইন্দুরেখা ধরা গলায় বলল, “কাল রাত্রে সাংঘাতিক ব্লিডিং হয়েছে। সারা রাত চিৎকার করেছে যন্ত্রণায়। আর এক কথা- মুঝে ছুটটি চাহিয়ে, মুঝে ঘর জানা হ্যে। বড় ডাক্তার আজকেই ইমারজেন্সি অপারেশন করার জন্য ও.টি রেডি করতে বলেছিলেন। কিন্তু যে খরচ পড়বে ওর স্বামী দিতে পারবে না। সে বেচারার অলরেডি অনেক টাকা ধার দেনা হয়ে গেছে। অথচ যা অবস্থা ইমিডিয়েটলি এই অপারেশন না করলে ওকে বেশীদিন বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। স্বামী বন্ড দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে”।
স্ত্রী ছাড়া পাবে বলে অনিকেত আজ বেশ একটা খুশিয়াল মুডে হাসপাতালে এসেছিল, সাথে ছেলে মেয়েকেও নিয়ে এসেছে। ইন্দুরেখার কথা গুলো শুনে গুম মেরে গেলো। একরাশ মন খারাপি ওকে গ্রাস করল। মনে মনে কালী মাকে দোষারোপ করে বলল, “ মা, এ তোর কি লীলা? এমন কেন করিস তুই? কি অপরাধ করেছিল মেয়েটা? এতো কষ্ট কেন ওর? ওর কিছু হয়ে গেলে, ছোট ছোট বাচ্চা দুটোর কি হবে? আমার যদি অনেক টাকা থাকত, আমি ছিপলির অপারেশনের জন্য দিতে পারতাম”। যে খুশী নিয়ে ও এসেছিল, সেটা নিমেষে উধাও হয়ে গেলো।

একটু আগে ছিপলির ছুটি হয়ে গেছে। আয়েশার স্বামী আর অনিকেতদের আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে ডিসচার্জ সংক্রান্ত নিয়ম কানুনের জেরে। হাসপাতালে ইন্দুরেখাদের ঘরটার কাঁচের জানালাগুলো দিয়ে আসা বিকেলের নরম রোদেও যেন বিষণ্ণতার সুর। বাইরে ব্যাস্ত জনবহুল শহরের কোলাহলে জীবনের কথকতা চলছে। বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছে দেবার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটা অ্যাম্বুলেন্স আর বেশ কিছু ওষুধ সাথে দিয়েছে। নমিতাদি আর ছিপলির ডাক্তার ডাঃ সেন ব্যাক্তিগত উদ্যোগে হাসপাতালের খরচ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন। অনিকেত জোর করে ছিপলির স্বামীর হাতে দু-হাজার টাকা দিয়েছে। নিতে চাইছিল না স্বাভিমানি দুঃখী মানুষটা। অনিকেত বলেছে, “ইয়ে ম্যে মেরা বহিন কে লিয়ে দে রহা হু। আপ মানা মত কিজিয়ে। উসকি ‘ভাইয়া’ বুলানা মুঝে জিন্দেগি ভর ইয়াদ রহেগা”। অনিকেতের মনে হল এই মুহূর্তে সব চেয়ে দুঃখী লোক ছিপলির স্বামী। ডাঃ সেন ওকে সব বলেছে। তাই তার যে বুক ফাটে, মুখ ফোটে না। স্ত্রীর আরোগ্যের জন্য সাধ্যের বাইরে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে একগাদা টাকা খরচ করেও ওর মুখে মেঘলা আকাশের ছায়া। তবুও স্ত্রীকে নিয়ে বেরনোর সময় সব কান্না, দুশ্চিন্তা সরিয়ে ও হাসার চেষ্টা করে যাচ্ছিল।

ছিপলি ওদের আগে ছুটি চেয়েছিল, সেটা ও পেয়েছে। হুইল চেয়ারে বসে সবার থেকে বিদায় নেবার আগে ওর সমস্ত যন্ত্রণা এক লহমায় সরিয়ে সেই অমলিন হাসি মুখে এনে বলল, “মুঝে ছুটটি মিল গয়া। ম্যে ঘর যা রহা হু”। অনিকেত ক্ষণিকের জন্য জীবনের গন্ধ পেল, এই গন্ধ হাসপাতালে ঢোকার মুখের স্ট্রং কফির থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী। কিন্তু তারপরে? অনিকেত জানে বড় ক্ষণিক এই গন্ধ। জীবনের বিপরীতে দাঁড়িয়ে যে অমোঘ, অন্তিম সত্যি সে ছিপলির জন্য অপেক্ষা করছে – বড় অসময়ে এই অপেক্ষা।

3 thoughts on “গল্পঃ জীবনের রঙ – পার্থ রায় (কলকাতা)

  1. অপূর্ব জীবন সুবাস। অপূর্ব ।

  2. জীবনের কঠিন বাস্তব চিত্র । মন ছুঁয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *