রাজীব দে রায়ের দুটি কবিতা
১)
শিকড়সমেত
নাভিকুন্ডে জমে আছে অনন্ত বিষাদ,
যে নীরব চাহনিতে
বরাভয় ও প্রশ্রয় ছিল এতকাল,
সেই মুখখানি ছিন্নপত্রের মত বেমালুম হারিয়ে গেছে…
তবু সেই মুখ ডাহুকের ডাকের মত আসে,
ঘুমের দাওয়ায় বসে তৃষ্ণার জল খায়,
তাঁর তর্জনীর
সুবর্ণ অঙ্গুরীয় থেকে এক অলৌকিক দ্যুতি
ঘরময় ছিটকে পড়ে ,
উজ্জ্বল এই থইথই আভা
কবচ-কুন্ডলের মত আমাকে
অক্ষয় আগলে রেখেছিল এতকাল…
নেমে আসি উঠোনের এককোণে,
মৃত গাছটির পায়ের কাছে চাতালে বসি,
শাখাহীন-পাতাহীন কর্তিত গুড়ি স্পর্শ করি…
টের পাই, গভীরে প্রোথিত পিতার শিকড় ।
(২)
মেটামরফোসিস
কয়েকজনের সামনে দাঁড়িয়ে যখন সে
মৃদু স্বরে কথা বলে,
পারস্পরিক কুশল বিনিময় করে ;
তখন তাকে স্পষ্ট দেখা যায়।
ভীড় যত বাড়ে, লোকটি তত চ্যাঁচায়,
নাদান চোখ-মুখগুলো ধীরেধীরে
ক্রমশ ফ্যাকাশে হতে থাকে..
এখন তার অঙ্গ-ভঙ্গিমায় আমূল রূপান্তর ঘটেছে,
তাকে বেশ হিংস্র লাগছে,
যে মানুষটিকে এতক্ষণ ধরে দেখছিলাম
সে ক্রমশ ঝাপসা হয়ে
ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেল…
অধিকাংশ মানুষকে
দ্রুততার সাথে কীভাবে বশ মানাতে হয়
আমি কোনোদিনই হয়ত জানতে পারতাম না
এই বক্তৃতা মঞ্চের কাছাকাছি না এলে !