অমর চক্রবর্তীর দুটি কবিতা
একুশের কবিতা
স্তুপীকৃত অসার শ্লোগানগুলি
জমা দিই চৈত্রের বাতাসের কাছে
সেগুলি আমার নয় আমার ভাষার নয়
উড়ে যাক উড়ে যাক যাবতীয় ব্যর্থ কথা
দিকভ্রান্ত উৎসমুখ যে প্রচ্ছদে সেজেছে
তার বর্ণ ভাষা তোলপাড় মেঘ
বিষন্নতা ছুঁইয়ে দেয় মনে
যে কৃষ্ণচূড়া রাধাচূড়া এক্কা দোক্কা খেলবে
সে হারাচ্ছে আবহের পথ
সেই পথ বাংলাভাষার
সেই সরণি একুশের।
২.
কিছুকথা কিছুতেই ভাল হয়না
হৃদয় সেখানে অহং অনুগামী
কিছুকথা শুনে আমার গা ছমছম করে
সে যেন ব্যর্থ প্রেম কচ ও দেবযানী!
কথা হোক সবার বন্ধু, আমন্ত্রণ বৃষ্টি
কথা যেন স্মরণ করায়
রক্ত পথে সৃষ্ট রক্ত পলাশ
কোনো প্ররোচনায় আনবেনা ভাষার পরাধীনতা, অনাসৃষ্টি।
৩.
বাংলার মাটি শুনছে
উন্নয়নকামীরা আর বলবেনা মাতৃভাষা
পাখিরা আলোচনা করছে
দেখ, মানুষ কেমন অনাসৃষ্টি
ডেকে আনছে, ভুল স্রোতে
ভাসিয়ে দিচ্ছে ইতিহাস শিল্পকলা
কবি শামসুর রাহমান সেই আক্ষেপে বলেছেন:বর্ণমালা আমার দুঃখিনী বর্ণমালা।
ভাষা
কাঁটাতার পেরিয়ে উড়ে আসে পাখি
ঠোঁটে আনে বিশ্বাস
সাহসের মাঠে বুনে দেয় আলো
বোঝায় নিজ ভাষায় এই রোপন
অন্যথায় সর্বনাশ।
আমি দেখি মানুষ দলছুট স্মৃতিছুট
বুলবুলি টিয়া ময়না ভাষা শুনি
তাদের কন্ঠে রিমিক্স নেই
ঠিকরে পড়ে পরিচিত আলো
ওদের একুশ ছিলনা তবু
ভাষাকে অন্তহীন রাখলো
আমরা মানুষ আত্মঘাতী
রক্তস্নাত হয়েও
কথাকে করি ছন্দহীন
একবার একুশ একবার ঊনিশ তবু
হৃদি-হাওয়াকে হারাতে ব্যস্ত অহর্নিশ!
ইউক্রেন থেকে উড়ে এলে বুলবুলি
বিশ্বায়নের দোহাই দিয়ে
ঠোঁটে নেয়নি কৃত্রিম বুলি।