কবিতাঃ চিঠি – অনিরুদ্ধ সুব্রত

চিঠি
অনিরুদ্ধ সুব্রত

অনিন্দ্য যতটা পুরোনো, লেটারবক্সটা তার চেয়ে
পলাশপুরের রায় ভবনের ভাঙা ফটকে ঝুলে
প্রত্ন সাক্ষী যেন,
কুয়াশা ফেটে হেলা সূর্যালোকে
পুরনো চশমা শ্লথ অনিন্দ্য বাক্সটা নেড়ে দেখে
চিঠি তাতে আসেনি কতদিন, হয়েছে যুগান্তর
লেটারবক্সটা লজঝরে,ভেঙে সরিয়ে দিলেই ভালো
বুড়ো হাড়, হাতের লাঠি দিয়ে ভাঙতে সে
পারবে ?
অন্তত ফটক থেকে সরে যাক, দূরে, আঁস্তাকুড়ে।
বিড়বিড় করে, ভাঙা দাঁতের শুকনো ঠোঁট,
ক্ষোভ
অনিন্দ্য চিঠির বাক্সটা নিঃশ্চিহ্ন করতে উদ্যত,
কাঁপা হাতে এগিয়ে লাঠি ছোঁয়াতেই,
ফুড়ুৎ করে
উড়ে যায় একটা ছোট্ট পাখি,লেটারবক্স থেকে
পুরনো চশমার কাঁচে অনিন্দ্য স্পষ্ট দেখে,
পাখির দুটো ছোটো ডিম বাক্সের মেঝেতে।
বুড়ো কন্ঠ অনিন্দ্য,শ্বাস দোষ,
তবুও চিৎকার করে,
দ্যাখো দ্যাখো লেটারবক্সে চিঠি এসেছে নতুন,
সাদা ক্ষুদ্র ডিম দুটো তখনও কত কথা নিয়ে
নিদারুণ শান্ত, রয়েছে শুয়ে,
লেটারবক্সটা তাই ফের রয়ে গেল ঝুলে
পলাশপুরের রায় ভবনের ভাঙা ফটকে।

4 thoughts on “কবিতাঃ চিঠি – অনিরুদ্ধ সুব্রত

  1. খুব ভালো লাগলো। সবকিছু রয়ে যায় মনের অন্তঃপুরে। পুরনো অনেককিছু আঁকড়ে ধরে বাঁচতে ভালো লাগে।

  2. “ডিম দুটো তখনও কত কথা নিয়ে নিদারুণ শান্ত, রয়েছে শুয়ে” জীবনের মূল্যবোধের সুন্দর প্রকাশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *