ছোটগল্পঃ কপাল – অতনু গাঙ্গুলী (চাকদহ)

কপাল
অতনু গাঙ্গুলী

দোকানের কাউন্টার থেকে আস্তে আস্তে রাস্তার দিকে তাকাল ভানু। চারিদিকটা রোদে খাঁ খাঁ করছে। সাত মাস আগে চাকরিটা খুইয়ে এই দোকানটা ভাড়া নিয়েছে। একটা গামের্ন্টস ফ্যাক্টরিতে স্টোরকিপার ছিল সে।মালিক সদানন্দবাবু খুব ভালোবাসতেন।মালিকের শালার আত্মীয় চাকরিতে ঢুকতেই ছাঁটাই হল সে। মালিকও খানিকটা বাধ্য হয়েই মেনে নিয়েছিল। হাতে কিছু অতিরিক্ত টাকাও দিয়েছিল আসার সময়। ভানুর অবস্থা খুব খারাপ ছিল না। মালতী খুব গোছালো। শুধু ইদানীং কেমন খিটখিটে হয়ে গেছে। একটা ছেলের খুব শখ ছিল মালতীর।এমনিতে মেয়েটাকে ওরা দু’জনেই খুব ভালোবাসে। মেয়েটা ভানুর খুব পয়া।জন্মাবার পর পরই পাড়ার মোড়ের দাসেদের পশ্চিমপাড়ার দেড় কাঠা জমিটা বেশ খানিকটা কমদামেই কিনেছিল সে। সেই থেকে কপালে খুব বিশ্বাস ভানুর। তাই মালতী ছেলের কথা বলতেই বলত, কপাল আবার খুললে দেখা যাবে। চাকরি যাওয়াটা তাই কপাল বলেই মেনে নিয়েছে। দোকানটা চালাতে সদানন্দবাবুর টাকা ছাড়াও ব্যাঙ্কের জমানো টাকাতেও হাত পড়েছিলো। এখনো পড়ছে। ভাবতে ভাবতে দোকানটা বন্ধ করবে বলে উঠে পড়ল। বাড়ি ফিরতেই মালতীর মুখটা দেখে বেশ অবাকই হল। কেমন একটা ভালোলাগা ভালোলাগা ভাব। হাত-পা ধুয়ে খেতে বসতেই মালতী বললো তোমার মালিক সদানন্দবাবু এসেছিলেন আজ।কালকে সকালেই দেখা করতে বলেছেন।ভানুর হাতটা মুখের কাছে গিয়েও থেমে গেল। মালতীর মুখটা এখন গোলাপী রঙে ভরে গিয়েছে। শরীরটাও কেমন যেন ভারী মনে হচ্ছে। দ্রুত ভাত মাখতে শুরু করলো ভানু।

4 thoughts on “ছোটগল্পঃ কপাল – অতনু গাঙ্গুলী (চাকদহ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *