চৌত্রিশ অক্ষ-১২
দয়াময় পোদ্দার
সূত্রধর:
ভূমিরাপোহনলো বায়ু: খঙ মনো বুদ্ধিরেব চ।
অহংকার ইতীয়ং মে ভিন্না প্রকৃতিরষ্টধা।।
ভূমি, জল, বায়ু, অগ্নি, আকাশ, মন, বুদ্ধি এবং
অহংকার- এই আট প্রকারে বিভক্ত আমার প্রকৃতি।।
শ্রীমদ্ভাগবতগীতা,৭ম অধ্যায়,৪র্থ শ্লোক।
মতিচকের আকাশে খুব ভোরে একঝাঁক লক্কা পায়রা
সুতোয় প্যাঁচ কেটে কেটে উড়তে থাকে।
ঘনীভূত বাষ্প তার নিচে বিছিয়ে থাকে আমাদের বিছানায়,
অস্পষ্ট সেই কুয়াশার ভিতরে একজোড়া নারী-পুরুষ
প্রশান্ত হাওয়ায় রাত-প্রহর শেষের সঙ্গম সেরে নেয়।
সমগ্র প্রকৃতি, এই চরাচর, ফসলের জমি, ধারাবতী নাহার
এবং আমাদের চেতনা রজা:স্বলা থাকে সেসময়।
শকুনি পাশায় চক্রবুহ্য ফন্দি রচিত হয়েছে নিরন্তর,
মৃত্যু, চতুর হিংসার সিঁড়ি, ক্ষেত্রফল
চাকা গতিশীল জীবনের প্রতীক, তাকে মাটিতে
স্তব্ধ গেঁথে কত কর্ণর প্রাণ গিয়েছে এবং
এখনও যাচ্ছে, সেই বুহ্য ভেদ করে
চলেছি-
এভাবেই অগ্নি এবং জল পাশাপাশি জ্বলেছে।
* * *
নিস্তব্ধ রাত্রি পাথর ভিজে যায় অশ্রুমোহে, পাথর তার
অনুরণন ফেরায়না, রাত্রিও বধির অথবা
সে শিখিয়েছে অস্থিরতা মুছে অসীম ধৈর্যের পাঠ।
কেননা তার একটু পরে
নারায়ণপুরে আখের খেতের মাঝ থেকে সৌম্যকান্তি
সিঁদুরের মতো লাল টকটকে সূর্য ঠেলে ওঠে।
সম্ভাব্য মৃত্যুকে বুক পকেটে রাখি,
পিছনে ফেলে আসা জন্ম, খিদে এবং পূর্ণিমা চাঁদের আলো
জলের বুকে…. যুধিষ্টিরের অনুগত কুকুর হেঁটেছি
শুধু একমুঠো ভাতের জন্য নয় এই
ধনুক থেকে ছুঁড়ে দেওয়া তীর।
শব্দভেদী বাণ ছুঁড়ে তার সঙ্গে ছুটে চলা মোটেও
তৃষ্ণার সমার্থক নয়!
* * *
কিছু দ্রোহ মুঠিতে রেখে চিৎকার ছুঁয়েছে
অস্পষ্ট বীজের খোলস,
পত্র-পুষ্প-ফলম আকাঙ্খায় তোমার অভিমান
যথার্থ এবং মাটির গভীরে
শীতঘুমে চলে যায় তীব্র আবেগ বেড়ে ওঠে
লাউডগা আকর্ষের মতো কালসাপ,
এইজন্ম ফুরোয়না হাজার মৃত্যুতেও- তুমি তাকে করতলে রাখো!