মায়াকোরক
মন্দিরা ঘোষ
এখানে ছায়ারা দীর্ঘ খুব। দিন গোছানোর আগেই রোদের লগ্ন ফুরিয়ে যায়। সন্ধের ছায়া নেমে আসার আগে কেউ যেন তুলি হাতে শেষ আচঁরে ফুটিয়ে তুলতে তৎপর ডুবে যাওয়া আলোর স্বর।ঢিমে আলোর সূর্যাস্তের রং তখন হাতবদলের গান খুঁজে নিতে উৎসুক।
সন্ধের জরুলে খোলা উলোটপুরাণ । ধিকিধিকি জ্বরের সাইকেল প্রলাপ। ধুনুচি পুকুরে টলমল করে এসরাজ দুপুর। মরচে পড়া প্যালেটে মাকড়সা গান ফুটিয়ে চলে। কোনও এক ঘোড়সওয়ার বিকেলে কুর্চিবনের পাতা উলটে ভরাট হয়েছিল কিশোরীসন্ধ্যার অনুভূমিক মাঠ।পাশ দিয়ে পেরিয়ে যাওয়া ফুলছাপ ভীরুতায় মেঘজ্বলা চৈত্র নেমেছিল বিদুষী খোলের জ্যোৎস্নায়। রানুমাসির ইষ্টিকুটুম পাখিটি ডেকে উঠেছিল অকারণ।
সেদিন সন্ধ্যাকাজলে নীলকণ্ঠ আলো মেখে জ্বলজ্বল ময়নামতি গ্রাম! কুহু আঁকা ডানার নিচে দুকুল ছাপানো জ্যোৎস্নায় ভিজেছিল ডাগর চোখের পাতা ।
আজ সে পাহাড়ি সোঁতায় নামিয়ে রেখেছে ধৈবতের ঝালা। টুপ টুপ বৃষ্টিগানে মুখরা পয়ার সন্ধের ঝালর। শান্ত ঢেউগুলো কখন যেন ডমরু হয়ে বাজিয়ে যাচ্ছে চরাচর। এখনই যেন ক্ষীণতোয়ার বুক চিরে ভেসে উঠবে নীলকন্ঠ মায়াকোরকের স্বপ্ন নিয়ে!