কবিতাঃ অনিন্দ্য গোস্বামীর দুটি কবিতা

অনিন্দ্য গোস্বামীর দুটি কবিতা

নিস্তার

জ্বালানির কাছে উবু হয়ে বসে
দেখেছো কি বাছাবাছি করে শিখা?
দেখেছো কি বাতিল করছে আগুন
আহুতির পর অরুচিতে ইন্ধন?

দেখোনি কারণ আগুনের প্রাণ
চায় শুধু আরও দীর্ঘ জীবন,
সে জীবন যে মানের ই হোক
দাবানল অথবা দূর্বার প্রাণ।

এ চূড়ান্ত লোভ বা এমন অন্ধতা
ছাড়া কি বা আর আশা করা যায়?
মন জ্ঞান হীন, ওর শুধুই গ্রহণ।
ভোগ দেহে ওর বাড়ে আস্ফালন।

তবুও তো একবার নিভে আসে,
থেমে যায় পোড়া শেষ হলে।
পড়ে থাকে অরুচিতে ছাই,
ছাই চেটে স্বাদ নেই আগুনের জিভে।

তার মানে সমস্ত গেলেনা আগুন,
তার ও আছে বাছাবাছি।
যেমন গেলে না ক্ষুধার্ত শ্বাপদ
যা কিছু চলে তার কাছাকাছি।

যখন গেঁথে যায় দেহে শিকারীর দাঁত
ভয়ে হিম দেহ থেকে উষ্ণ রক্তপাত,
আরও শীত নিয়ে এসে নেভায় জীবন।
সেই দেহ জারিত হয়ে জ্বেলে রাখে-
শিকারীর প্রাণে জ্বলা আরেক আগুন।

এইভাবে ঘিরে থাকা আগুনের বেদী
নিস্তার পায়, শেষবার নিজে পুড়ে।

আলোর সারল্য

আলো,
তুমি থামিয়েছো সোজা পথে চলা।

ভরসার যে চোখ আমার দিকে চেয়ে,
তাকে দেখি আজ অন্য কোনো মুখী।
যে আঙ্গুল কিছু দেবে বলে ছুঁয়ে আছে
ঝড়ের সাথে উড়ে যেতে তাকে দেখি।

উজ্জ্বল যে আলো চোখের সামনে জ্বলে,
জানি সেই দিকে তাকাইনি কোনোদিনই,
যে ঘরের দেয়াল চার পাশে দেখি,
আমি জানি, সে ঘরের ভিতরে ঢুকিনি।

তুমি এইবার আলো, সোজা পথে চলো
না হলে আর সারল্য কোথায় পাব বলো?

One thought on “কবিতাঃ অনিন্দ্য গোস্বামীর দুটি কবিতা

  1. অসাধারণ দুটি কবিতা পড়লাম। অভিনন্দন আর অনেক শুভেচ্ছা দিলাম।

Leave a Reply to ভূমিকা গোস্বামী Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *