ভোটাধিকার!
রোজী নাথ
স্মৃতির পাতায় ভেসে ভেসে যায় সুখ-দুঃখের কতো
ম্রিয়মাণ অতীত।
মনের একপাশে স্তুপে স্তুপে জড়ো হয় দুঃশ্চিন্তার বিশাল পাহাড়।
মনে মনে ভাবি অতীতটাই বোধ হয় সগর্বে নিজের কাছে ছিল।
আজকাল আমি সাঁতার কাটি আধপেটা অভাবের জলে।
এ যেন গোলক ধাঁধায় বাঁধা এক বেরোজগেরে অসহায় জীবন!
ক্রমশ জটিল হয়ে আসা আঁধারের সাতপাকে নিত্য অভাব লেগে থাকে চোখের খোলা পাতায়।
দুঃস্বপ্নেরা ভেসে ভেসে চুমু দিয়ে যায় আমার সন্তানের খিদে মাখা পেটে।
অসহায়, অপদার্থ এই আমিটা জরাজীর্ণ স্ত্রীর শুকিয়ে যাওয়া ঠোঁটের একটু হাসি দেখব বলে চাতকের মতো দাঁড়িয়ে থাকি, এদিকে দিন চলে যায় দিনের নিয়মেই।
এ সংসারে অভাবের দোরগোড়ায় বেঁচে থাকা বিড়ালটা পায়ের কাছে গুটি মেরে বসে থাকে যৎসামান্য দুধভাতের ক্ষীণ আশা বুকের পাশে জড়িয়ে নিয়ে; সে-ও লেজ নেড়ে আমার এই মিছিলে সামিল হয়।
বাড়ি বাড়ি হাঁক দিয়ে ফিরি, ‘কাজ হবে কাজ? দু’মুঠো চাল আর একপ্রস্থ ঘুমের জন্য এক রোজ
কাজ!’
ক্লান্ত অশান্ত শরীরে জেগে থাকা একজোড়া চোখে ভাসে উঁচু উঁচু বাড়িগুলোর জানলায় উৎসুক মুখগুলো ছায়ামূর্তির মতো দূরে সরে সরে যায় ।
বন্ধ ঘরের ভেতর থেকে চিৎকার, ‘কোনো কাজ নেই , দুপুরের ভাত ঘুম দিলে ভেঙে। বেআক্কেলে মানুষটা তাই!’
আমাদের কাজ নেই, নেই কোনো মৌলিক অধিকার;
আছে শুধু সচিত্র পরিচয় পত্র আর ভোটাধিকার!