কবিতাঃ রাঢ়বনের ধারে – অনিরুদ্ধ সুব্রত

রাঢ়বনের ধারে
অনিরুদ্ধ সুব্রত

সমস্ত কলকাকলি আর কুহু বাদ দিলেও শুধু রোদ্দুর
তুমি গাঢ়— হে দুপুর, রাঢ়বনের নিঃস্ব শাখার নেশায়
বহুকালের মদিরা মেশা, মোহ, রক্ত-পলাশ গুচ্ছ গুচ্ছ ।

ছড়ানো মোরামের রূঢ় পরিণাম, সে তুমি তো জানো
মরমে পরম অপরিণাম, স্বপ্ন-সঙ্গমে তবু যে নামো
দূর থেকে আনো দুর্বিসহ, একটি নাম, আপাত তুচ্ছ।

নিকটবর্তী বিকেলের বিক্ষোভ, অফসলী, অনভ্যস্ত
সমস্ত পতিত পাপড়ির গল্পকে বাদ দিলেও, একান্ত
তুমি আপ্রাণ রক্ত-পুষ্প, পাপ-পূণ্যে পদাঘাত পর্যন্ত।

এই যে অনন্ত ধূ ধূ, না তাকে হত্যা করেছ শুধু, চরম
চুরমার করে যে, বেদনার দহ সেঁচে, বৃন্তে এনেছ মধু
বেফাঁস দুপুর, বাতাসের ঢেউয়ে, ছুঁইয়ে দিয়েছ কান্ত।

এই যে উঠেছো ফুটে, এই যে ধূসরের লাল লাল সাধ
এখানে স্থিতি, ঘন মেঘশূন্য আর্দ্র-দহনে, না’ সারারাত
এতো তীব্র রং, অস্ফূট কামনার এবং, পাথরের কষ্ট।

যেন কোথাও বেজেছে গান, পুলক পুচ্ছ, এক রাঢ়বন
তবু কি জানো, অসুখের আবহ-মতো, চিরবসন্ত আহত
চির ক্ষত হতে গজানো নরমে, চরমে কত দগ্ধ কাল নষ্ট।

অথচ এই-ই সৃজন, তোমার খাঁ খাঁ পথে, হাহাকার মাঠে
পথ-ভিখারির ভিক্ষা পাত্র পূরণ, কিন্তু তেষ্টা যে মেটে না
তুমি প্রগাঢ় দুপুর, চিত্ত চৈত্র, রৌদ্র বিরুদ্ধ, উঠেছ ফুটে।

3 thoughts on “কবিতাঃ রাঢ়বনের ধারে – অনিরুদ্ধ সুব্রত

  1. ভালো লাগলো। কবিকে শুভেচ্ছা জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *