টাচডাউন
চয়ন ভৌমিক
যতবারই ফিরে আসি আমি,
ছত্রিশ হাজার ফুট থেকে, ঘুরপাক খেয়ে
যখন, ছোটো থেকে ক্রমশ বড় হতে থাকে
গঙ্গা নদী, সল্টলেক স্টেডিয়াম, নিউটাউনের চকচকে রাস্তা
‘ঘট’ শব্দে খুলে যায় প্লেনের চাকা,
সিটবেল্ট বেঁধে নিতে বলে সেবিকা,
আর, তারপর দুড়ুম করে সেই রাস্তায়
নেমেই, কষে ব্রেক মেরে, ক্রমশ গতি হারাই আমি !
তখনই কেমন যেন মনে হয়,
আচমকাই, অচেনা হয়ে গেছে শহর।
এই শহরের অন্ধকার নতুন, ক্যাবের ঠিকানা নতুন,
রাস্তার আঁকা জেব্রা ক্রশিং অদৃশ্য,
মায় আকাশ ও ফুটপাথও অভিনব ;
#
আমি ভাবতে চেষ্টা করি, ঠিক কী অবস্থায়
ছেড়ে গিয়েছিলাম আমাদের ছোট্ট সরু গলিটাকে,
টবে পোঁতা নতুন হলুদ গাঁদার চারাগাছটাকে,
ছোট্ট বিড়ালবাচ্চাটাকে –
ওরাও কী বদলে গেল তবে? পালটে গেল কী
সেই সরল চোখগুলো, ওই ঘাসের উপর
শান্ত পড়ে থাকা শিশির বিন্দু…
এই যে খানিক আগে আকাশ থেকে দেখা,
অট্টালিকাগুলো কেউ কেউ ছবি তুলে রাখছিল
#
সে’সব হাইরাইজ, খেলার মাঠ আর
পুরনো শিকড় উপড়ে,
উঠে দাঁড়ানোর আগে ও পরে
নিশ্চয়ই এরকম করেই
#
একের পর এক প্লেন নেমে এসেছিল বিমানবন্দরে –
নেমে এসেছিল অনাবশ্যক অচেনা ভবিতব্য –
#
তীব্র হাওয়া ও সময়ের দ্রাঘিমা জুড়ে
বালিকার নারী হওয়ার চিরন্তন কবিতা।