কবিতা ক্যাম্পে
অনিরুদ্ধ সুব্রত
অস্থায়ী তাঁবুতে শব্দ বর্ণের পালা-গানে
শুধু লেখা হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছি
এ ঘোর জঙ্গলে, শহরকে ভুলে গিয়ে
ঘুরে ঘুরে, নিজেই নিজস্ব নিভৃত রচনা করে
কবিতার ক্যাম্প একদিন
উঁচু পাহাড়ের নীচু পাদদেশে।
প্রিয় এক প্রেত আমাকে তাড়াত
স্বপ্নের অথবা নেশা-রাত্রির ঘন তিমিরে
ঘনতর পৃথিবীর থেকে দূরে, কিছু দূরে অন্তত
কবিতা লালিত ঘরে সুশান্ত মন্ত্রে মননে
জীবনের যন্ত্র-পেষিত ক্ষয়ীষ্ণু প্রাচীন ছন্দ
যেন চিরতরে ভুলে যেতে।
তাঁবু-যাপনের মৃদু আলো আজ
নষ্ট ধ্বংস ছেঁড়া কাগজে,তাপ আছে, শেখালো
পেতল-রঙা সিঁড়ি বেয়ে যে নামত কখনও
মধ্য-যামিনী জীবনে কলম ছুঁয়ে দিতে
যে লেখাত শেষ রাত অবধি, সে-ই এসে
নূপুর নিক্কন না করে, ধীরে ডেকে এনে
ক্যাম্পের তাঁবু সে নিজ হাতে বেঁধে দিল।
সারারাত সঞ্চিত অভিশাপ এখানে ভেজে
তাঁবুর বাইরে শিশিরে, তারপর
মাটির মেঝেতে জ্বলে ছোটো মোম আলো আলোকিত হলো গৃহ বোধ যত
কবিতার ফুল ফোটে তাই পুরোনো শরীরে
অবয়ব টেনে প্রেত বসে, জীবনের মুখোমুখি
আমি দেখি, লিখি, তার বৃন্ত ছুঁয়ে ছুঁয়ে
আনকোরা পংক্তির রাশি
ওরে মন তুই সুখী, তুই দুঃখী।
ছন্নছাড়াকে আচ্ছন্ন করেছ এই শেষ
কবিতা ক্যাম্পে, নির্জনে, অতীত ভেঙে
খনি শ্রমিকের মতো খুঁড়ে খুঁড়ে
কাল গেছে জ্বালানি উত্তোলনে
খেয়েছে অর্ধেক, ক্ষয়ে ক্ষয়ে খননের বেগে
পুনর্জন্ম দিয়েছ তাকে, এই কবিতা ক্যাম্পে।
ভালো লাগলো। খুব ভাল লেগেছে।
ভাল লাগল।