পার্বণী
সৌমী চক্রবর্ত্তী
অমানিশি আন্ধারের বুক চিরে ছুটছে মহাকাল
জীবন একটা বাঁশের সাঁকো,
দোদুল্যমান- ছ্যাতলা ধরা নীতিমালার বুলিতে ভরপুর
উসকো-খুসকো এক জং পড়া বকলস।
কোলাব্যাঙের লাফ
জীবনের বাঁক
গভীর ঘুমে ডুব।
মাঝখানে পড়ে থাকে জেগে থাকার ব্যর্থ কাহিনি।
আমরা আদ্যন্ত স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে শুতে শুতে রোদ্দুর মাখা হাতে গ্রাস তুলতে ভুলে গিয়েছি।
পড়ে আছে জেগে থাকা শরীরের ভালোবাসাহীন ফসিল।
২
প্রথম অক্ষর লেখার সময়
নড়বড়ে অচলপ্রায় বৃদ্ধের মতো।
যৌথ জীবনের অদেয় যা কিছু
সব তোলা থাকে বালিশের নিচে,
চোখের আঙিনায় বিন্দু বিন্দু ফোঁটা জড়ো হলে
জমা কথাগুলো উড়তে থাকে,
একের পর এক বৃষ্টিধারা টুপটাপ ঝরে
শুকনো মেঘ হয়ে গেলে পরম্পরা ছিন্ন হয়।
শরীয়তি মতে অক্ষর-দাসকে মুক্তি দিতে আসে কাতারে কাতারে ধড়হীন লাশ।
৩
রোদেলা দিনের শুভেচ্ছা দিয়ে শুরু করলে
জুঁইয়ের গন্ধের মতো ভেসে আসে সহজপাঠের গপ্পো।
নীল নীল নকশা কাটা খামে উড়নচণ্ডী তুলো মেঘ
আনন্দের হিল্লোলে উড়িয়ে নিয়ে যায় মা মা গন্ধে ভেজা শাড়িখানি।
পুরোনো দোয়াত-কঞ্চির কলম আবার বিল্বপত্রের গায়ে বুনে চলে অক্ষরজাল।
কাশের শরৎ
বেতার তরঙ্গ
বোধনের মুখ
মনখানি স্বপ্নিল নদী হয়ে ভেসে যায় ডিঙি নৌকো নিয়ে।
অ-সুরের মায়াজালে বিভোর মহাকালের চক্ষুদান হলে
ভৈরব-ইমন-বিলাবল-দুইয়ের পিঠে তিন
ত্রিকালজ্ঞ শক্তি বিভূষিতার মায়া কাজল দিয়ে
মুছে যায় সব আন্ধার।
আলোকবর্তিকা মেয়েটির নাম দিই-পার্বতী,
পিঠে-পুলি-পায়েসের পার্বণীর এপিঠের এপিটাফে জ্যান্ত হয় মানুষের দল,
সানন্দে;নিবিড় ভালোবাসায়।