সুখ
মৌসুমী অধিকারী
আমি জ্যোৎস্না ভালোবাসি
তাই তোমাকে ডাকি চাঁদ,
এখনো বসন্ত ছড়িয়ে আছে বাতাসের গায়ে,
তুমি বলো “তুমি কেনো কবিতা ভালোবাসো?”
আমি ভাবি তুমি কি জানো ঐ রুপোলী চাঁদ আমায় টানে,
বসন্ত অরণ্য চাঁদ সব আমার কতোটা প্ৰিয়…..
পরে একদিন মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি তুমি আমার কবিতা পড়ছো,
আমি চুপ করে শুয়ে পড়েছি তোমাকে বুঝতেই দিইনি আমি জেনে গিয়েছি তুমিও কবিতা ভালোবাসো,
মনে পরে,বদ্রীনাথ যাওয়ার সময় তুমি আর আমি আইস স্কেটিং করেছিলাম……
আমার কপালে ছড়ানো বরফের গুঁড়ো তুমি অনায়াসেই ফুঁ দিয়ে ওড়াতে চেয়েছিলে, পারোনি…..
তারপর পকেট থেকে রুমাল বের করে মুছিয়ে দিলে আমার মুখের বরফ…..
তার একবছর পর যখন ছেলে হলো তুমিই নামকরণ করলে ‘কাব্য ‘….
তোমার সাথে প্রথম সাক্ষাতে আমি জানতে চেয়েছিলাম “তোমার প্ৰিয় মানুষ কে? “
আমার বেশ মনে আছে তুমি একটুও দ্বিধা না করেই একগাল হেসে উত্তর দিয়েছিলে “কে আবার সবার গুরু কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “…..
সেদিনই তোমাকে মনে মনে আমি ভালোবেসে ফেলেছিলাম কখন নিজের মনের অজান্তেই……..
সেই তুমি যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করো আমি কেনো কবিতা ভালোবাসি বেশ হাসি পায়……
নিজেও যে কবিতা ভালোবাসো স্বীকার না করলেও জানি চুপিচুপি তা আমিও ……
গতকাল অফিস থেকে ফিরে এসেই আমাকে জড়িয়ে তোমার বুকের কাছে নিয়ে এসে বললে “আজ তোমার কাছে বসন্ত রাগটা শুনবো”…..
আমি যখন গাইছিলাম তুমি দুচোখ বন্ধ করে আমার গান শুনছিলে তন্ময় হয়ে,
হঠাৎ নজর পড়লো তোমার দুচোখের কোণে জল চিক চিক করছে……
রাত্রে আমায় প্রশ্ন করলে “রাই তুমি কি এখনো বসন্তকেই ভালোবাসো…..?”
আমি একটু হতোচকিত হয়ে পড়েছিলাম তোমার হঠাৎ করা এমন প্রশ্নে,
তারপর তোমার মাথাটা আমার কোলে নিয়ে চুলে বিলি কাটতে কাটতে বললাম “বসন্ত ক্ষণস্থায়ী, আমি তোমাকেই রোজ দেখি চাঁদ,
আমি ভালোবাসি শুধু তোমাকেই “
পরের কথাটুকু আর কথা ছিলোনা
খাটের উপর বাকি রাত জ্যোৎস্না মাখামাখি হলো সাদা চাদরে রুপোলী আভায়,
খোলা জানলায় ঐ সুদূরের চাঁদ আর তার আলোয় ভাসলাম,আমার চাঁদের সাথে আমি সোহাগে…….
তুমি ভালোবেসে এই প্রথম আমাকে বললে “জানো রাই একটা কথা বলবো?
আমি বললাম কি বলো….
তুমি বললে,তুমি কবিতা ভালোবাসো বলেই আমি তোমাকে ভালোবাসি রাই …..”
“কবিতা ছাড়া ভালোবাসা হয়না……”
অপূর্ব। অপূর্ব। অপূর্ব। ধন্যবাদ।