কবিতাঃ যদি তোমার ভালোবাসা পাই – নিরঞ্জন রায়(বাংলাদেশ)

যদি তোমার ভালোবাসা পাই
নিরঞ্জন রায়(বাংলাদেশ)

পেঙ্গুইন পাখিটি পাঁচ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসে প্রতিবছর
রক্ষাকর্তা জোয়াওকে তার হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা নিংড়ে দিতে।
শাহজাহান গড়েছে তাজ যমুনার তীরে
যত ভালোবাসা তার মমতাজকে ঘিরে।

সামন্তরাজ খনন করলেন নালিতাবাড়ির সুতানালা দীঘি
সুপেয় জলে বেঁচে থাকবে তাঁর প্রিয় ভালোবাসা কমলারাণী।

আমি রাজাও না রাজ কোষাগারও নেই আমার
তবুও বলবো যদি তোমার ভালোবাসা পাই
গাঁয়ের নদী পুনর্ভবার ওপর একটি বাংলো বানাবো শাল-শেগুনে
নদীকে সামনে রেখে
তোমার জন্য থাকবে বেতের তৈরি একটি হাতলওয়ালা ইজি চেয়ার,
আর আমার জন্য একটি তমাল কাঠের শক্ত আসন
প্রশস্ত বারান্দায় বসে তুমি নদীকে হৃদয়ে ধরবে
পানকৌড়ি ডুবসাঁতার দেবে তোমার বুকে
বলাকা ছায়া ফেলে উড়ে যাবে, চাঁদ খুনসুটিতে মেতে উঠবে, তোমাকে নিয়ে যাবে দূর অতীতে।

শানবাঁধানো ঘাটের পাশেই তৈরি থাকবে একটি ডিঙি নৌকা
যখন ইচ্ছে বিহারে যাবে
আমি তোমার সেবায় নিয়োজিত শখের মাঝি
মুক্ত কন্ঠে মিলন সঙ্গীত গেয়ে শোনাবো তোমাকে।

যদি তোমার ভালোবাসা পাই
বাংলোর দখিনে গড়ে তুলবো একটি ফুল বাগান
নার্গিস, স্থলপদ্ম, হৃদয়লতা, উলট কমলে ভরা,
অজানা বুনোফুল হাসবে, সুগন্ধি ছড়ানো বিদেশি ফুলগাছে ভরিয়ে দেবো।

বাগানের এক কোণে থাকবে রাজরাণীর জন্য একটি লতানো গাছের দোলনা
দখিনা বাতাসে
দোল খাবে, দোয়েল লেজ দোলাবে তালে তালে, টুনটুনি শোনাবে বিয়েবাড়ির গান।

যদি তোমার ভালোবাসা পাই
সকল ইচ্ছার প্রতিফলন দেখবে বাংলোর চার দেয়ালে
একদিকে থাকবে তাজমহল, অন্যদিকে দ্য ভিঞ্চির অমর সৃষ্টিকর্ম, পাশের দেখালে থাকবে কাশ্মীরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য
আর আমার মুখোমুখি দেয়ালে আঁকা থাকবে তোমার তৈলচিত্র
রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেবীকে প্রণাম জানিয়ে বলবো
দেবী আমি তোমারই, যেন তোমারই থাকি আজীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *