কবিতাঃ যন্ত্রণা – স্বপন নাগ

যন্ত্রণা
স্বপন নাগ

যার কথা বলছো, তাকে আমি চিনি ;
সে আমার সমবয়স্ক সঙ্গী।
সত্তরের জঙ্গম অন্ধকারের মত তার রঙ,
ভয়ঙ্কর ছায়ার মত
সে আমায় জড়িয়ে আছে এতদিন।

অন্ধকারে নদীর ভাঙা পারে দাঁড়ালে একা
কিছু পুরোনো দিন খুব কাছে এসে দাঁড়ায়,
হাওয়ায় হাওয়ায় ভাসে শৈশবদুপুর
ভেসে ওঠে সেদিনের এক নিজস্ব স্বাধীন আকাশ,
সেরকম দিনে আমার সঙ্গে থাকে সে।
মনে পড়ে, মায়ের জ্বলন্ত চিতার পাশে
সে আমার কাঁধে তার হাত রেখেছিল।

একসাথে বেড়েওঠা সহোদর আমার
খুব সকালে যার নাম ধরে ডাকলে
পাখি ডেকে উঠত, কল্লোলিত হত
মাধবী গাঁ-এর এক শীর্ণ নদী ;
যার নাম ধরে ডাকলে চঞ্চল হত
স্ফুটনোন্মুখ ফুলের পাপড়িরা …
মনে পড়ে, ভারি বুটের শব্দ
আর বোরখার চেয়ে তীব্র অন্ধকার
সর্বনাশ ছিঁড়েছে তাকে নির্বিবেক।
যার কথা বলছো, সেই ত্রস্ত রাতে
আমার সঙ্গে ছিল সে, সহোদর ছিল না।

যার কথা বলছো, তাকে চিনি।
সমবয়সী বন্ধুর মত
কাঁধে নিরবচ্ছিন্ন হাত রেখে সে হেসে ওঠে
আমার দিন আর রাত্রির অনিবার্যতায় !

One thought on “কবিতাঃ যন্ত্রণা – স্বপন নাগ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *