ইভ ও আদম
শুভ্রকান্তি মজুমদার
একটা পাহাড় ছিল, বেশ পুরুষালি পাহাড়।পাহাড়ের বুকে একটা ঝর্ণা ও ছিল। পাহাড়টা ঝর্ণাকে খুব ভালোবাসত। কিন্তু ঝর্ণা আবার পাহাড়টাকে পছন্দ করতনা। মানুষজন পাহাড়টার বুকে যন্ত্রপাতি বসিয়ে গ্র্যানাইট পাথর কেটে নিত বলে পাহাড়ের গায়ে নোংরা ধুলাবালি লেগে থাকত,যা ছিল ঝর্ণার একদম নাপসন্দ।
ঝর্ণা ভালোবাসত সাগরকে, কিন্তু সে সাগরের কাছে পৌছতেই পারেনি তাই ঝর্ণা বাধ্য হয়ে পাহাড় থেকে নেমে এসে নদীতে মিশে ছিল। পাহাড় ঝর্ণাকে পায়নি। ঝর্না ও সাগরকে পায়নি।
এদিকে নদী ভালোবাসত পাহাড়কে। কিন্তু উল্টো স্রোতে উজান বেয়ে সে পাহাড়ের কাছে পৌছুতে পারেনি। নদী পাহাড়কে ভালোবাসলেও কাছে পায়নি।তাকে বাধ্য হয়ে সাগরের কাছ আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল,এটাই নাকি বিধাতার বিধান।
আকাশ ভালোবাসে মেঘকে, আকাশ সারাজীবন মেঘকে বুকে ধরে রাখতে চায় ভালোবেসে। কিন্তু আকাশ চিরকাল মেঘকে বুকে ধরে রাখতে পারেনা। মেঘ ভূমিকে ভালোবাসে কিন্তু ভূমির কাছে আসতে পারেনা। ভূমির কাছে আসতে তাকে রূপ বদল করতে হয়, রূপান্তরিত হয়ে বৃষ্টি হয়ে। তখন সে অন্য মানুষ।
বৃষ্টি ভালোবাসে ভূমিকে,গর্ভবতী ভূমিকে প্রসব করানোর অনুঘটক হয়ে সে পৃথিবীর ভূমির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পৃথিবীর বীজের অঙ্কুরোদগম হয়ে জন্মগ্রহন করে নতুন বৃক্ষ। পৃথিবী হয়ে ওঠে সবুজ।
পাহাড় ভালোবাসত ঝর্ণা কে, ঝর্না ভালোবাসত সাগরকে, নদী ভালোবাসত পাহাড়কে,আকাশ ভালোবাসত মেঘ কে,মেঘ ভালোবাসত ভূমিকে, কিন্তু এরা কেউই তাদের পছন্দের ভালোবাসাকে পায়নি।
একমাত্র বৃষ্টি আর ভূমি তারা পরস্পরকে ভালবেসে তাদের ভালোবাসাকে পেয়েছিল তাদের মনের ইচ্ছে অনুযায়ী।
ঠিক আর ইভ ও আদমের মত।।
দারুণ