কবিতাঃ হেমন্তের পাগলা ফকির – অনিরুদ্ধ সুব্রত

হেমন্তের পাগলা ফকির
অনিরুদ্ধ সুব্রত

আলের সীমানায় গাঢ় মুথা ঘাস নিশিথ প্রহরীর মতো ঘিরে তাকে রেখেছে
কৃষকের হে আনন্দ ধান, ক্ষেতের মাটিকে শুকিয়ে তোলার মতো দিন আজ
সমস্ত ফলিত রস পরিপক্বতার কাঠিন্য নিয়েছে জীবন-চর্যার অস্তাচলে, ভরে
উঠেছে গভীরের শাঁস আবারও ছড়ানো মাটিতে ফলিয়ে ওঠার শান্ত বোধে,
এসেছে এক বেদনা-বিলাসী হেমন্তের কুয়াশা দিন,পাকা ফসলের মৃত্যুর কথা
তার যেন বলা চাই, ধান কাটা সারা করে শূন্য মাঠে মাঠে অঘ্রাণের কষ্ট রাত্রির
ছেঁড়া চাদরে ছিন্ন-বিচ্ছেদ যত ঢেকে রাখা চাই,পৃথিবীর রাত বেয়ে স্তব্ধ চোখের
কোণে শিশিরের জল টুপ টাপ ফেলা চাই তার, সেই যে তার চির দীর্ঘ নিঃশ্বাস,
কাছে এসে দাঁড়াবার তারুণ্য-অনুরাগ বৃথা,বৃন্দাবনী সারং-এ সূচনা হয়ছে তার,
হাত ছোঁয়া দূরত্বে ঐ জীবন-রাত্রির প্রথম প্রহর, চুপে চুপে সরে যাওয়া পরিসর
তবু এক আধ খাওয়া চাঁদ আনে টেনে ব্রহ্ম জ্ঞানে, সোনালী ধানের বুকে তাই
সহস্র বছরের পুরনো এক বেহালা বাজে যখন সন্ধে নামে, এই বিস্তীর্ণ চরাচরে
হেমন্তের পাগলা ফকির পোড়ো প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষে একা সে ধ্বনি শোনে।

                                                                                           

4 thoughts on “কবিতাঃ হেমন্তের পাগলা ফকির – অনিরুদ্ধ সুব্রত

  1. জীবন বোধ প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে এক অসাধারণ কবিতার জন্ম হয়েছে। অভিনন্দন কবিকে।

Leave a Reply to ভূমিকা গোস্বামী Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *