কবিতাঃ ঐশ্বরিক – অপূর্ব পাল (কলকাতা)

ঐশ্বরিক •••••••••••••••••••♦

জানালা খুলি দরজা খুলি ব্যালকনিতে দাঁড়াই 
দূরে এক মৃৎশিল্পী সারাদিন খড় মাটি ছেনে ছেনে 
বাঁশের কাঠামোয় কি মায়া দিয়ে প্রেম দিয়ে মূর্তিখানি গড়ে !
মাটি ছেনে ছেনে এক মেয়েকে গড়ছে… মাকে গড়ছে ; 
কোথায় এই রূপ আসে ? এমন সাধুরূপ ! শুদ্ধ অবয়বে !
দুটি হাতের কিনারে ? 
নাকি অন্য কোথায় কোনো মানস সরোবরে ? 
মাটি থেকে উঠে আসে মা…
কোথা থেকে নদী উঠে আসে ? 
আঙুলের ছোঁয়ায় নারী জন্ম নেয় ! 
#
আরো ভিতরের জানালা খুলে দেখি 
তার অন্দরে এক নারীরূপ উঁকি দেয়
গারো পাহাড়ের দেশ, আরোও গভীর 
কোনো ঘোরের দেশ অতিক্রম করে গেলে 
বৃষ্টির পাপড়ির মতো মেলিছে দুচোখ 
হৃদয়ের রক্ত দিয়ে, ঘাম মাটি ছেনে ছেনে 
কি এক অলৌকিক মূর্তি গড়ছে ভাস্কর ! 
চোখে তার জল আসে কেনো ? 
দৃষ্টিপথ ঝাপসা হয়ে আসে ; নিজেকে ধুয়ে নেয় কারিগর ; 
দুচোখের দিব্য জল মিশে যাচ্ছে মূর্তির মাটিতে ; 
কুলিক পক্ষীনিবাসে আদরে বাড়ছে মায়াপাখি, পক্ষী শাবক ;
পাতার গভীরে বাড়ে কোমল কুঁড়ি ; গাছের গোপন ! 
#
ব্যালকনিতে দাঁড়াই…জানালা খুলি… দরজা খুলি  
কেউ কোথাও নেই ; তেপান্তরে খাঁ খাঁ পড়ে আছে…
কোনো মৃৎশিল্পী নেই, নদী নেই, মন্দির নেই, ঈশ্বর নেই 
কয়খানা বুকের পাঁজরে এক মূর্তি দাঁড়িয়ে রয়েছে ; 
আশ্চর্য! 
এ রক্ত, এই মাটিচন্দন, চোখের জল…
বড় চেনা চেনা লাগে ; 
আমার আত্মরূপে 
আমারই আত্মীয়া আমার সম্মুখে ! 

One thought on “কবিতাঃ ঐশ্বরিক – অপূর্ব পাল (কলকাতা)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *