কবিতাঃ সাক্ষী এবং আলো, শব্দ, কবিতা – অনঞ্জন

সাক্ষী
অনঞ্জন

কালো-আঁধারি বর্ষা তাকিয়েছিল তার দিকে
তাতেই জ্যোৎস্নার লাবণ্য ভেঙ্গেচুরে একশেষ,
হু হু করে ওঠে নদী- জ্যোৎস্নাই যদি না থাকে
এত বর্ষা নিয়ে করবটা কি?
উথালি পাথালি নদীর গর্জনে কাঁপতে থাকে,
কাঁপতে থাকে মাটি কাঁপতে থাকে বটের শিকড়।
কালো-আঁধারি বর্ষা, সে অনন্ত যৌবনা বর্ষা
মুচকি হাসে, তারপর কোলে নেয় ভগ্ন জ্যোৎস্নাকে
আস্তে আস্তে পরম আদরে জোড়া লাগায়-
তার সমস্ত লাবণ্য নিয়ে জেগে ওঠে জ্যোৎস্না
ভরে যায় সারাটা আকাশ নদী চরাচর,
প্রগলভ নদী জ্যোৎস্নার চুম্বনে শান্ত হয়;
আঁধারি বর্ষা সৃষ্টির সমস্ত সম্ভার নিয়ে
বহুদূরে মেঘের ভিতরে সাক্ষী হয়ে থাকে।

আলো, শব্দ, কবিতা
অনঞ্জন

আলো পাতলা না আলো গভীর – এ প্রশ্ন
তাকে টেনে নিয়ে চলে অন্ধকারে
যেখানে লাবণ্যময়ী দুঃখ তাকে
ভালবেসে পাত পেড়ে খাওয়ায়,
যেখানে চোখের জল মানে আলো,
চাঁদের ওষ্ঠ থেকে রক্ত ঝরে পড়ে
বুকের গভীরে অযুত দীর্ঘ স্তব্ধ
ঝলকায় সুরের মায়া; তার আকুতি
বাঁধ মানেনা, আসে শব্দ আসে মায়া-
কবিতা আর নিঃসঙ্গ থাকেনা,
মায়াবী শব্দেরা লুকোচুরি খেলে
তাকে নিয়ে চলে নৈশব্দের পথে
রোদ-বৃষ্টির এক্কা-দোক্কা ছন্দে, সেখানে
কোথাও বাসনার জল, কোথাও-বা
আগাগোড়াই তৃষ্ণা, বানভাসি বিরহ
কিম্বা সময়ের নীল তাণ্ডব!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *