চ’লে যেতে হয়
রুদ্রপলাশ মণ্ডল
কত কিছু তো ছেড়ে এসেছি— ছেড়ে আসতেই হয়
ফেলে এসেছি সদ্য জন্মানো কলা পাতার মতো শৈশব
আর পেরিয়ে এসেছি কাঁচা হলুদ রাঙা কৈশোর
বৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব কখন যে দুলে উঠেই ঝরিয়ে দিয়েছে রং
লাগা সুগন্ধি গোলাপখাস সর্বহারার বিগত যৌবনের মতো তা-ও
বুঝবার আগে পেরিয়ে গিয়েছে সময়ের ধারা স্রোত
এখন আমরা
মধ্যাহ্নের খর রৌদ্রে পুড়তে পুড়তে যারা কামনা করছি
মেঘের চাদরে ঢেকে নেমে আসুক নারী — কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি বুকে,
ভিজিয়ে দিক গভীরতম প্রদেশের রুক্ষ বিন্দু
জানি তাদেরও মধ্যাহ্ন মুহূর্তের টানে ঢল নেবে ঠিক সায়াহ্নের দিকে
পাখিদের নীড়ে ফেরা দেখতে দেখতে ক্রমেই এগোতে হবে
রজনীগন্ধায় নিমজ্জিত সান্ধ্য আঁধারের তীরে
যেখানে ঘুঁটি সাজিয়ে ব’সে আছে বিদগ্ধ বাতাস
সেই খেলা ছেড়েও যে উঠে যেতে হবে মধ্যরাত্রির দিকেই,
সাদা ফুলের পাপড়িগুলো উন্মুক্ত আহ্বানে নিশ্চয়তা দেবে
গভীর ঘুমের
রাত্রির গর্ভে— কোনও সুবাস উঠুক আর নাই উঠুক তবু
ছেড়ে চ’লে যেতে হবে
চ’লে যেতে হয়
প’ড়ে থাকে সমুদ্রের লোনা জলের মতো অতৃপ্তি
তখন হয়তো পৃথিবীর দূরতম জ্যোতিষ্কের
নির্জন বায়ুমণ্ডলের কোনও এক স্তরে
অনর্গল ঝরতে থাকবে বৃষ্টির বিষণ্ণ ধারা