কবিতাঃ ইতিকথা – অনিন্দিতা মন্ডল

ইতিকথা
অনিন্দিতা মন্ডল

স্বপ্নবিলাসী

এখানে, এই শহরে
আমি অমর হয়ে থেকে যাবো চিরকাল।
এখানকার প্রতিটি রাস্তা, প্রতি গলি, এমনকি বাড়িগুলো পর্যন্ত আমি নাম দেবো নতুন করে, আমার মতো –
প্রিয় সব নামে তারা অমর হবে ;
যে আসবে সেই চিনে নেবে সেই সব অমোঘ চিহ্ন। এক নিমেষে জেনে যাবে
এ শহরে আমার অনশ্বর অস্তিত্ব –
এইসব কথা বলছিল আমার ভাবুক বন্ধু।
তখন খবরের কাগজের পাতায়
চোখ রেখে পড়ছিলাম,
নদীর ভাঙনে জলে
খসে পড়েছে আমার জন্মশহর।

• খোঁজ

রাস্তায় নেমে বাড়ি খুঁজে পাওয়া আর
বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তা পাওয়া, দুইই শক্ত।
কম্পাস হয়ত দিক ঠিক করে দিতে পারে,
কিন্তু বাড়ি বা রাস্তাটা বলে দিতে পারে না।

• ভূমিকা

ডাক্তারবাবু সম্ভবত বহুকাল প্রেস্ক্রিপশান লেখেন না। নাহলে সামনে বসে থাকা রুগীকে দেখে
তিনি ওষুধের নাম লিখছেন না কেন?
বরং উল্টোটাই ঘটছে।

অধৈর্য রুগী
খসখস করে নিজের ব্যবস্থাপত্র লিখছে –
“স্পেশালিস্ট দেখাতে হবে।”

• নিষ্ফল

ঘাট এখনও বাঁধানো হল না বলে
ওপার থেকে এপারে বা
এপার থেকে ওপারে
কেউ আজকাল যাওয়া আসা করে না।
সবাই নিজের নিজের পারে বসে কথাবার্তা বলে।

কিন্তু নদীটা মাঝে থাকার ফলে
শব্দগুলোও ঘাটে আসতে পারেনা।

• ঘর

ইঞ্জিনিয়ার এসে
তৈরি বাড়ির চাবিটা সামনে রেখে বলল –
আপনার স্বপ্নের বাড়ি তৈরি ;
চাইলে এখনই যেতে পারেন।
নতুন বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আমি।
একটার পর একটা দরজা খুলে চলেছি,
কিন্তু প্রতি দরজার ওপারেই সেই এক সদর ;
আবার দরজা।

এখনো বাড়ির অন্দরে ঢুকতে পারিনি।

One thought on “কবিতাঃ ইতিকথা – অনিন্দিতা মন্ডল

  1. অনেকদিন পর কবির লেখনীর সঙ্গে একাত্ম হওয়া গেলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *