চিত্রাঙ্কন এবং মুক্তগদ্যঃ পৌলমী চক্রবর্তী

অন্য মায়ার চোখে
পৌলমী চক্রবর্তী

রোজ সকালে যে ফুলের রং গুলো আমাদের মন ভরিয়ে দেয়, একরাশ রূপ আর রঙে, মুগ্ধতায় লোভ সামলাতে না পেরে মুঠো ফোনে ছবি তুলে পাঠিয়ে দেই বন্ধু আত্মীয় পরিজনদের, “সু সকালে” বা “শুভ রাত্রির” শুভেচ্ছা বার্তায়, অথবা ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখি! কেউ কি খোঁজ রাখি রাতের অন্ধকারে কতোটা ভয় পেয়েছিলো তারা? উত্তরের হাওয়ায় কতোটা শরীর কেঁপেছিলো ওদের? ঝড়ের পূর্বাভাসে কতোটা দুরু দুরু বক্ষে ছিলো?নাঃ, বোধায় খোঁজ রাখিনা, হয়তো বা ভাবিইনা কোনোদিন। শুধু মালী আর গাছ পাগল কিছু মানুষ বোধয় একটু খোঁজ রাখে, কিন্তু সবাই তো আর সেরকম হয় না ! পরিবেশ সচেতনতা গড়তে বিভন্ন অনুষ্ঠান গুলোতে গাছ/বৃক্ষ দান এটা একটা হাল ফ্যাশন। তবে সেগুলো বাঁচিয়ে রাখাটাও যে দায়িত্ব সেটা কি আর খেয়াল থাকে? স্পষ্ট দেখলাম এক অনুষ্ঠানে ,সম্মাননা দেওয়া উত্তরীয়টা হাত ব্যাগে চলে গেল এক গণ্য মান্য বেক্তির , আরেক জনের মিষ্টির বাক্স ও সাবার কারোর বা সেটা ব্যাগবন্দী, তা বলে গাছ টাও? প্লাস্টিক মুড়ে গিট বেঁধে চেপে ব্যাগে? সেদিন আরো এক বিয়ে বাড়ীর অনুষ্ঠানে, পরিবেশ সচেতনতার মহান আদর্শ ছড়িয়ে দিতে রিটার্ন গিফট চারা গাছ। কেউ শাড়ি আর ধুতির কোঁচা ঠিক করতে গিয়ে গাছ গেলো ভেঙ্গে, তো, কারোর গাছের যত্ন নেওয়ার সময়ের বড্ডো অভাব , কারোর বা নিজেদের থাকারই জায়গা নেই আবার গাছের জায়গা বাহুল্! কেউবা খেতে বসে পায়ের সামনে গাছটা রেখে ভুলেই গেলো বাড়ী পর্যন্ত নিয়ে যেতে! কারোর বা আবার সেই ব্যাগ বন্দী সেই গাছ! আজকালকার মানুষদের বড্ডো বোলে বোলে জাগাতে হয়, জাগে কিনা না, না জেগে ঘুমায় সেটাও বোঝা দায়। ওহে — গাছেরও যে প্রাণ আছে বহুদিন আগে জগদীশ বোস সেটা আবিষ্কার করে গেছেন । নাঃ, বৃথাই বলা ! কেউ দেখলো ও না হাতে নেওয়া গাছ গুলোর পিপাসা পেয়েছিলো কিনা।

চিত্রাঙ্কনঃ রং বাহারী

রং বাহারী, মাধ্যম: মিশ্র মাধ্যম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *