কবিতাঃ ‘ চরৈবেতি ‘ – সৌমী চক্রবর্তী

‘ চরৈবেতি ‘
সৌমী চক্রবর্তী

ইতিহাসের খোলা পৃষ্ঠায়
ইতিউতি দেখতে পাওয়া যায়-লোহার জং ধরা অস্ত্র,
যাকে আমরা অতীত বলে ডাকি।
অতীব জঘন্য, আবার স্মৃতিমেদুর।
আবছা অন্ধকারে মাতৃ জঠর ভেঙে উঠে আসে শিশু,
শ্রান্ত অথচ পবিত্র হাসিতে উজ্জ্বল।

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ-বেঁচে থাকার সমার্থক শব্দ।
পুট-পাঁচ-এক-তিনের ছক্কা গুটি গুটি করে
এগিয়ে আসতে আসতে টপ করে
মুখে পুরে নেয় অন্ধকার।
কালো কালো মনের দাগ, ক্ষণস্থায়ী কিন্তু অভিশপ্ত।
পাপ বোধ ঘিরে ধরে
মাতৃ অংশ লজ্জায় উলঙ্গ হয়ে দাঁড়াতে ভয় পায় আলোর সামনে, মায়ের সামনে।
সহজ হয় দূর্যোধনের ঊরুভঙ্গ।

কতশত যুগ ধরে বয়ে চলেছে নদী
বলে চলেছে -‘পরিত্রাণায় সাধুনাং…. ‘
হরের কৃপায় নরের মুক্তি সোনার পাথরবাটি।
অন্ধকারে পূজারীর কৃপায় আতশবাজির রোশনাইয়ে
ধাঁধিয়ে যাওয়া চোখে
বোধিবৃক্ষ উপড়ে ফেলে
চলেছি মানুষের দল মানুষ হতে।

ঘন অন্ধকার বেয়ে যেখান থেকে এসেছি আমরা সবাই ,
আসছে নতুন যারা
‘সম্ভবামি যুগে যুগে ‘ শ্লোগানে শ্লোগানে
মিটিংয়ে মিছিলে রোদ পড়ুক তাদের গায়।
কাঠফাটা রোদ, নরম শীতলপাটির ছোঁয়ায়
গয়না বড়ির সঙ্গে প্রেম বিলাক মানুষে- মানুষে, ধর্মে-ধর্মে, বর্ণে-বর্ণে।
আর একটা নীলাচল যাত্রীর অপেক্ষায় পৃথিবীর ঘাস-মাটি সবাই।
আসুক, সে আসুক দ্বিধাহীনভাবে,
নির্লিপ্ত অথচ উষ্ণ অভ্যর্থনায়।

One thought on “কবিতাঃ ‘ চরৈবেতি ‘ – সৌমী চক্রবর্তী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *