কবিতাঃ পরিধি এবং জাবালি – অরূপরতন হালদার (কলকাতা)

অরূপরতন হালদারের দুটি কবিতা

পরিধি

ব্যর্থকাম নদীটির রক্ত দেখি। কাঁদো শনিচরা, কাঁদো। এই উল্লম্ব বুক। পাঁজর ভেঙে দাও রুদ্ধ মুঠিতে, কাঁধে এসে পড়েছে সূর্যছায়াখানি। এই যে শরীরে শরীর জড়িয়েছ, তারপর আঙুলের বিলাসখনি চলন শ্রাবণের কুহক, ভেসে থাকা ঘর আমার প্লাবন জানেনি এখনো। কৌতুক মিছে হয় যখন লিখিত আমি মুছে যাই আমার দেওয়াল থেকে, তবু এত আর্তরব ; তোমার রাত্রিতে উড়ুক্কু মাছেরা আসে, আসে পীতস্বর। এই স্তব্ধতার কেন্দ্র নেই কোনো, শুধু মহাঅরণ্য আছে, আর সৌম্য শিশিরের আঁচ লাগে হরিণের ঝাঁকে

সুস্পষ্ট বিধি যে গণ্ডীর ভেতরে তার জন্ম দেখে সে এক নির্গুণ পরিধি আসলে, ব্যাপ্ত তৃষা; সেসব ব্যাখ্যা নিয়ে কথা হবে গোপনে। আপাতত গাছটির সালোকসংশ্লেষ নিয়ে সব শব্দ শেষ হোক। যে পরিতাপ তাকে ঘিরে মহড়া নেয় সর্বগ্রাসী নাচের তার মঙ্গলকামনা করি, ঘট বসাই আমার নিকোনো উঠোনে

জাবালি

তুমি কিভাবে দেখছ এই যমপট, ব্যক্তিগত আকাশভ্রমণ, যূথাচার সেসব আমার কৌতূহল থেকে শব্দদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তারা অতিষ্ঠ যে প্রেত নিঃস্বতার জাল বোনে তার কাছে নাড়া বেঁধে এখন চুপ। ডালে ডালে সন্তানকামীদের মানত উড়ছে রঙিন বিবসন বেলুনের মতো, আর বাসা স্থানুবৎ, কতদিন ভেবেছে আমাকে গচ্ছিত রেখে যাবে সকল নিদ্রাহীনতার কাছে। এই ব্যর্থতা নিয়ে আচমন করি, তবু কোষেরা একাদিক্রমে অজ্ঞতা গায়ে মাখে পুষ্পরেণুর মত

হে জাবালি, তোমার এত পশু, তবু মুখ ম্লান নয়, ঝরেছ বন্দীর মতো চৈতন্যপ্রবাহে। ফিরে যাও, ফিরে যাও কুশাগ্রের আলো নিয়ে ওই নদীর কাছে। এই কাল আমার অবসিত প্রাণ, তবু মরচের ব্যাথা আমি বুঝিনি। এই বীতকাম শহরের কাছে আমার গোপন নেই কিছু, তাকে আমি শেষ চুম্বন দিই

2 thoughts on “কবিতাঃ পরিধি এবং জাবালি – অরূপরতন হালদার (কলকাতা)

  1. কবিতা কুহক জানে আর্তিস্বর…ক্ষণপ্রভাটির চেয়েও কতটা মহার্ঘ্য মহিমা ব্যেপে থাকে চরাচর জুড়ে…হে আমার অস্থায়ী মনন দেয়ালা, ক্ষমাপ্রার্থী হও, জেনো তিতিক্ষার চরে পড়ে আছে শেষ মুহূর্তের বিপন্ন আবেশ…

  2. ভালো‌‌‌।।ভাল।। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *