সাম্প্রতিক — ২১ঃ আবার ঘূর্ণিঝড়, আবার পরীক্ষা – অনিরুদ্ধ সুব্রত

আবার ঘূর্ণিঝড়, আবার পরীক্ষা
অনিরুদ্ধ সুব্রত

২১ মে বুধবার আছড়ে পড়ল সুপার সাইক্লোন ‘আম্পান’ পশ্চিমবঙ্গের স্থলভূমিতে । আবহাওয়া অফিস সাবধান করছিল কয়েক দিন আগে থেকেই । সতর্কতা জারি ছিল রাজ্যের সমস্ত দায়িত্বপূর্ণ বিভাগে। তৎপর ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীরা। বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছিল উপকূলীয় নদী ও সমুদ্র বন্দরে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের আপত্কালীন সমস্ত সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছিল । সব রকম মিডিয়ায় চলছিল লাগাতার প্রচার এবং পরিস্থিতির হাল সম্পর্কে চলছিল সরাসরি জানকারী।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে লক্ষ্য ছিল পরিস্থিতির উপর । এমনকি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাব্য জায়গা থেকে সরিয়েও আনা হয়েছিল বেশ কিছু মানুষকে । যদিও দেশ তথা রাজ্য তখন করোনা মহামারীর প্রথম বর্ষের গ্রাসে।
আম্পানে দুর্গত মানুষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বাড়ি ফসলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব সরকারি দপ্তরে নিশ্চয়ই আছে। তবু সঠিক পদক্ষেপ এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও সাহায্যের ব্যবস্থা নিয়ে পরবর্তীকালীন কোন্দোল মোটামুটি রাজ্যের মানুষের জানা।
কিন্তু যে বিস্ময় থেকে বেরনো যাচ্ছে না, তা হলো অতি সম্প্রতি আমরা আরও একটি সাইক্লোনের সম্মুখীন হতে চলেছি— ‘ইয়স’ বা ‘যশ’ । যার নাম করণের দায়িত্ব ছিল মলদ্বীপের।
এমনিতেই ‘কোভিড’ এর দ্বিতীয় ঢেউ পশ্চিমবঙ্গে এখন ভয়াবহ। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। হাসপাতালে বেডের সংখ্যা অপ্রতুল, প্রতিদিনই অক্সিজেনের ঘাটতি বহুল মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অন্যদিকে টেস্ট এবং টিকাকরণ এগোচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় শ্লথ গতিতে। এরই মধ্যে গত ১৬ ই মে থেকে রাজ্য জুড়ে লকডাউন, চলবে ৩০ শে মে পর্যন্ত। গত এক বছরের বেশি সময় শুধুমাত্র করোনা পরিস্থিতির জন্য সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত। মাঝখানে রয়ে গেছে গত মে মাসের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ভয়ঙ্কর স্মৃতি। প্রতিদিন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে যেখানে সরকার থেকে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে হঠাৎ করে নতুন এই ঘূর্ণিঝড়ের খবর রাজ্যবাসীর উপর রীতিমতো মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে নেমে আসছে।


২০০৪ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ১৬ বছরে ভারতে ছোট-বড় প্রায় ৬৩ টি ঘূর্ণিঝড় এসেছে। আমাদের দেশে মোটামুটি মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা রয়েছে। এদেশে অদূর ইতিহাসে ২০০৭ এ ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’, ২০০৮ এ ‘নার্গিস’ পেরিয়ে ২০০৯ ‘আইলা’ ভয়ঙ্কর ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছিল। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং তার সমুদ্র উপকূলবর্তী সুন্দরবন অঞ্চলে এই আইলা ঝড় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি করেছিল যার প্রমাণ এখনো বর্তমান। বিশেষ করে লক্ষ্য রাখার মতো বিষয় হল আইলাও আঘাত হেনেছিল এই মে মাসেই ( ২৫ শে মে)। ঝড়ের কেন্দ্রস্থল ছিল কলকাতা থেকে ৯৫০ কিলোমিটার দক্ষিনে, ভারত মহাসাগরে। যেখানে ঝড়ের গতিবেগ ছিল একশো কুড়ি কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল ছিল বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা। আইলার ক্ষেত্রেও তিন শতাধিক(ভারত বাংলাদেশ মিলিয়ে) মানুষের মৃত্যু এবং বহু ফসল ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির ঘাটতি এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।
২০১০ সালের উনিশে মে বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে জন্ম নিয়েছিল ‘লায়লা’ আরেক ঘূর্ণিঝড় । যেটি আছড়ে পড়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ততোধিক না হলেও সেক্ষেত্রেও বেশ কয়েকজন মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
সাম্প্রতিককালের ভারতে ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাসে 2019 সাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কেননা ওই বছর দুই দুটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল। ২ রাত মে ২০১৯, উড়িষ্যা রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ । উত্তর ভারত মহাসাগরে জন্ম নেওয়া এই তীব্র ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের ওড়িশা রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। যার রেশ এখনো পর্যন্ত সে রাজ্যের বিভিন্ন পরিকল্পনায় লক্ষ্য করা যায়।


২০১৯ এর ৫ই নভেম্বর, বছরের দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে পশ্চিমবঙ্গ সমুদ্র উপকূল এবং বাংলাদেশে। যার নাম রাখা হয়েছিল ‘বুলবুল’ । এমনকি এই বুলবুলের প্রভাব ভারত বাংলাদেশের সীমা অতিক্রম করে ভিয়েতনাম, মায়ানমার, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশকেও ছুঁয়ে যায়। যেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার ।
এরপর এল ভয়াবহ ‘আম্পান’ গত বছর করোনা আবহের মধ্যে। সত্যি কথা বলতে এই আম্পানের ক্ষতিগ্রস্থতা এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষ বিন্দুমাত্র ভুলে যেতে পারেননি। এই স্মৃতি ভুলে যাবার আগেই গত ১৭ ই মে ২০২১ ঘূর্ণিঝড় ‘তাউকেট’ ধেয়ে এলো মুম্বাই এবং গুজরাটের সমুদ্র উপকূলে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে পাওয়া যায়নি।
কিন্তু সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো আসন্ন ‘ইয়স’ বা ‘যশ’। আবহবিদরা জানিয়েছেন আগামী ২২শে মে নাগাদ একটি সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়তে চলেছে। এর‌ও লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে সমুদ্র উপকূল। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল এক্ষেত্রেও বঙ্গোপসাগর। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে এর আংশিক প্রভাব পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক।
একদিকে করোনা মহামারী মানুষের জীবনযাপন এবং বেঁচে থাকা সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। তার মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস রীতিমতো চরম প্রশ্ন চিহ্ন নিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনে ভয়ঙ্কর ছায়ার মত সংকেত দিয়ে যাচ্ছে। ফলে সমুদ্র উপকূলবর্তী সাধারণ মানুষ, সমুদ্র নদীতে যারা মাছ ধরতে যান বা যারা ক্ষেতে ফসল ফলান তাদের দুর্ভাবনাটা সবচেয়ে বেশি। অবশ্য এ ক্ষেত্রে সরকারি পরিকল্পনা ও পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনার সবরকম প্রচেষ্টা আশা করা নিশ্চয়ই অমূলক হবে না।
গভীর সমুদ্রে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের জেরে প্রায় প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়, সামুদ্রিক উচ্ছ্বাস ক্রমে শক্তি বৃদ্ধি করতে করতে এগিয়ে আসে উপকূলভূমিতে। ভারতবর্ষের দক্ষিণের সমস্ত রাজ্য গুলোর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অংশ অতীতে বহু বার এই জাতীয় ঘূর্ণাবর্তের কবলে পড়েছে । আয়লা,ফনী, লায়লা প্রভৃতি অদূর অতীতের অভিজ্ঞতা । সুতরাং এটা শুধুমাত্র আক্রান্ত রাজ্যের একার অভিজ্ঞতা নয়। কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা ও আপত্কালীন ব্যবস্থা গ্রহণের বিভাগের সঙ্গে রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের নিশ্চিত একটা যৌথ পূর্ব পরিকল্পনার স্থায়ী সমন্বয় থাকা খুবই স্বাভাবিক । দেশের দুর্যোগ প্রবণ এলাকা গুলোর জন্য আলাদা করে জনসাধারণের বসবাস, জীবিকা, ও জীবন ধারণের সুনির্দিষ্ট তালিকার পাশাপাশি একটা শক্ত নিরাপত্তা জরুরি। আক্রান্ত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, হাসপাতাল, স্থায়ী ত্রাণ শিবিরের পর্যাপ্ততা একুশ শতকের এই দ্বিতীয় দশকের শেষে এস আমরা কি ঠিক ঠিক আশা করতে পারি ?
দেশ বা রাজ্যের কোন এলাকার মানুষ ( পড়ুন ভোটার) কী কী পেশার সঙ্গে যুক্ত, কী তাদের ঘর বাড়ির অবস্থা, কোন রাস্তা ধরে তারা দৈনিক যাতায়াত করেন, দ্রুত স্বাস্থ্য পরিষেবা সেই সব অঞ্চলে তারা পাবেন কি না ( যে হেতু এটি করোনা নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ) এবং বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে তাদের কতটা কাছাকাছি পরিষেবা গুলো আদৌ পৌঁছাতে পারবে । — এই সব তথ্য গুলো রাষ্ট্র পরিচালকদের কতটা জানা আছে, তা কিন্তু ঝালিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। দেশে পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা এখন যথেষ্ট শক্তিশালী ( বলা হয়) , তাই যদি হবে, তবে সেদিক থেকে উপকূলীয় এলাকা গুলোর জন্য পর্যাপ্ত বিপর্যয় মোকাবিলার পূর্ব পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় সব আয়োজন রাখা হয়েছে ধরে নেওয়া যেতে পারে। অথচ প্রত্যেক বিপর্যয়ের পরে দুঃখ প্রকাশ ও কিছু আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেই ক্ষান্ত হ‌ওয়ার অভ্যাস রয়ে গেছে, যা লজ্জা দেয়।
একটা কথা মনে রাখা দরকার, প্রতিটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যে মানুষ গুলো মারা যান তার নব্বই শতাংশই দরিদ্র, শ্রমজীবী, মৎসজীবী, জন, মজুর বা প্রায় আর্থিকভাবে সমগোত্রীয় । যে তালিকায় থাকে বেশ কিছু শতাংশ নারী ও শিশু । যারা সাধারণত মজবুত বাড়িতে থাকতেন না । জীবিকার সন্ধানে অধিকাংশ‌ই বেছে নিয়েছেন বিপদসংকুল জীবন। যোগাযোগের বা যাতায়াতের সুব্যবস্থা থেকে আংশিক ভাবে হলেও তারা বঞ্চিত এবং আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও যথেষ্ট দুর্বল । অথচ তারা দীর্ঘদিন ধরেই এই দেশ বা রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা ও স্বীকৃত এক একজন ভোটার । কিন্তু শুধুমাত্র মৃতের সংখ্যা দিয়ে এই প্রশ্নের অবতারণা নয়, ক্ষয়ক্ষতির দিক বিচার করতে গেলে আহত ,আক্রান্ত মানুষ গুলো প্রত্যেক বিপর্যয়ের পরে আরও বেশি সমস্যার গভীরে ডুবে যান। শুধু মৌখিক সমবেদনা, অপ্রতুল আর্থিক সাহায্য এবং আবার পরবর্তী বিপর্যয়ের অপেক্ষা না করে, সরকারি এমন একটা স্থায়ী উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত যা আগামী দিনে এই ভাবে মৃত্যু বা ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কষতে বাধ্য না করে। প্রয়োজনে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র থেকে ভুক্তভোগী দেশের গৃহীত পরিকল্পনা ও আধুনিক গৃহীত ব্যবস্থার শিক্ষা নিতে হবে।
সবশেষে বলা ভালো যে, ভূক্তভোগী উপকূলবর্তী মানুষের জন্য কিছু বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা একান্ত প্রয়োজন। প্রয়োজন তাদের জীবনের সুরক্ষায় যথেষ্ট সচেতনতার শিক্ষা। আধুনিক বৈজ্ঞানিক সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় উপকরণ না থাকলে বিপর্যয় মোকাবিলা করার দিশা হারানোর সম্ভাবনা। পর্যাপ্ত ত্রাণ ও প্রশাসনিক তৎপরতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সে কথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
পুনশ্চ সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং সম্পদের জন্য সরকারি বা বেসরকারি সব অনুদান বন্টনে পরবর্তীকালীন পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা যেন থাকে। এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক রাজ্যবাসীর অভিজ্ঞতা ভালো নয় বলেই জানা। মোটকথা দুর্যোগের পূর্বাভাস কিন্তু সতর্কতাকেই জাগিয়ে দিতে। চরম দুঃসময়েও এই ব্যাপারটি যেন দায়সারা গোছের না থাকে। বছর বছর ঘূর্ণিঝড় থেকে আমরা কতটা শিক্ষা নিয়েছি, ‘ইয়স’ নিতে পারে তার বিশেষ পরীক্ষা।
—– অনিরুদ্ধ সুব্রত ২০.৫.২১

3 thoughts on “সাম্প্রতিক — ২১ঃ আবার ঘূর্ণিঝড়, আবার পরীক্ষা – অনিরুদ্ধ সুব্রত

  1. অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখা। অভিনন্দন ।

  2. প্রকৃতির বিরুদ্ধতার সাথে লড়াই করে সভ্যতা এতদূর এগিয়েছে । লড়াইটা যখন প্রকৃতির সাথে না হয়ে মানুষের সাথে মানুষের লড়াই হয়, তখন অগ্রগতি থমকে দাঁড়ায় । বিপদ কাটে না । আপনার সময়োপযোগী প্রতিবেদনের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

  3. ভীষণ সময়োপযোগী গুরুত্বপূর্ণ লেখা। ভালো লাগল।

Leave a Reply to krittika Bhaumik Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *