মুক্তগদ্যঃ ভাষা দিবসের জন্য – অরিন্দম মুখোপাধ্যায়

ভাষা দিবসের জন্য
অরিন্দম মুখোপাধ্যায়

আজ যে সময়ে এসে আমরা অর্থাৎ এই বাঙালী জাতি দাঁড়িয়েছি সেখানে আর আনন্দ উল্লাস আসছে না। সবসময়ই মনে হচ্ছে একটা জাতিকে মুছে দেওয়ার উল্লাসে মত্ত হয়ে উঠেছে তার চারপাশ। অথচ জাতিটা এখনো নিদ্রিত। আচমকাই বেশ নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে আর তাই সে বুঝতেই হয়তো পারছে না যে তাকে হত্যার জন্য দাঁত নখ বার করে ফেলেছে এই শ্বাপদ সঙ্কুল এই পৃথিবী। ইতিহাস বিস্মৃত এই জাতি যা আন্দাজ ও করে উঠতে পারছে না, তাই প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের লেখা ” আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই, আমি আমার আমি কে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই” আজ যেন ভীষণ ভীষণ আত্মার গান বলে মনে হয়। মনে হয় এক জাতির দৃপ্ত ও বলিষ্ঠ উচ্চারণ। আমি দেশ বলতে বুঝি বাংলা। যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন কোন বাংলা? আমি বলবো যে বাংলা সকল বাঙালীর অন্তরে আছে – বৃহত্তর বাংলা ( অতি নিদেন পক্ষে আকবরের রাজত্বকালের সূচনা লগ্নের বাংলা )। যদি কেউ জিজ্ঞেস করে আপনার পরিচয়? আমার উত্তর হবে আমি বাঙালী। সত্যিই যেখানে বাঙালীর বাস আমারও বাসস্থান সেখানেই আমি সর্বপ্রথম একজন একজন বাঙালী তারপর আমি যা খুশি তাই। আমি দেখেছি ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সেখানকার সরকারি দপ্তরে ও বিভিন্ন স্থানে তাঁরা সেই ভাষা ছাড়া কোন অন্য ভাষা ব্যবহার করেন না। একজন গুজরাটি যদি আমাকে এমনকি সরকারি কাজে বাধ্য করেন গুজরাটি ভাষা কে জেনে বা তর্জমা করে পড়তে তাহলে একজন বাঙালী হয়ে আমি কেন নিজের ভাষার মর্যাদা রাখতে পারবো না? সারা পৃথিবী যে জাতিটাকে সম্মান করে সে জাতির একজন মানুষ হয়ে আমি আত্মমর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হব না কেন? আজ ভারত বলতে যাঁদের সারা পৃথিবী স্মরণ করেন দেখা যাবে দু একজন বাদে সকলেই বাঙালী। তাই আমি সর্বদাই জাতি ও ভাষা কে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিই আর তাই আমি আগে বাঙালী তারপর ভারতীয় আমার দেশ আগে বাংলা তারপর ভারত।
ইতিহাস চিরকাল বড়ই নির্মম কারণ ইতিহাস সময়ের কথা বলে আর সময়কে কখনো স্তব্ধ করে দেওয়া বা স্তব্ধ রাখা যায় না, সে বয়ে চলে তার নিজস্ব ছন্দে, নিজস্ব গতিতে। ফলে আর যাই হোক না কেন ঘটনাটা একই থেকে যায় তা সে যে যেমন করেই সেই ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে থাকুন না কেন (যেমন ইংলন্ডে লেডি ডায়নার মৃত্যু)। তবু ঘটনা বা ঘটনা প্রবাহ সেই ইতিহাস কে বারবার আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে একটা জাতিকে অন্য এক বা একাধিক জাতি সম্মিলিত ভাবে কেন বার বার ভাঙতে চেয়েছে, বিচ্ছিন্ন করে দিতে চেয়েছে তার স্বজাতিদের থেকে। কেন এর উত্তর আমি দেব না আমি শুধু ইতিহাসটাকে আপনাদের সামনে এনে রাখবো যা বোঝার আপনারা বুঝবেন। ১৫৮২ সালে তোদার মল বা টোদার মল বা টোডার মাল (Todar Mal) আকবরের নবরত্ন সভার অন্যতম রত্ন, যিনি উত্তরভারতীয় হিন্দু ছিলেন, রাজস্ব ব্যবস্থার সুবিধার কারণ দেখিয়ে বাংলার ২৪টা জেলাকে ভেঙে ১৯টা বাংলার জন্য রাখলেন আর ৫টা জেলা নিয়ে উড়িষ্যা নামক একটা নতুন রাজ্য স্থাপন করলেন এবং নতুন রাজ্য উড়িষ্যার বাঙালীদের লোভ টোপ সব দেখিয়ে অর্থাৎ এক বাঙালীদের আর এক বাঙালীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিলেন। “বঙ্গ সুবা” নতুন নাম নিল “ঢাকা সুবা” হিসেবে। সেইদিন ও এই জাতি একাট্টা হয়ে লড়াই করেছিল বা বলা ভালো করতে চেয়েছিল কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহিতার ভয় দেখিয়ে ও বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় অত্যাচার করে সেই আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর ব্রিটিশদের সঙ্গে নিয়ে বাঙালী জাতিকে বারংবার উপড়ে ফেলার চেষ্টা হয়েছে আর ১৭৫০-১৭৫৭ এই সময়টা যেন সেই দিকেই ইঙ্গিত করে। যে সময়টাকে ধরা হয় বাঙালী জাতির প্রথম পশ্চাৎপসারণ। খুব তির্যক হলেও কথাটা ভীষণভাবে সত্যি – বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজের হত্যা। তর্কের খাতিরে আমি মেনেই নিলাম যে সিরাজ পিতৃসূত্রে পার্সি ছিলেন (যদিও তাঁর মতো স্বাধীনচেতা একজন বাঙালী খুব কমই জন্মেছে বাংলার মাটিতে)। এবার দেখবো সিরাজকে সরালো কারা? কেন তারা সরালো? সিরাজের বিরুদ্ধে যাঁরা ষড়যন্ত্র করেছিলেন তাঁদের যতোটা না লক্ষ্য ছিল সিরাজ কে ক্ষমতাচ্যুত করা তারচেয়ে অনেক বেশি উদ্দেশ্য ছিল বাঙালী জাতিকে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল ও প্রশাসনিক ক্ষমতা খর্ব করা (ব্রিটিশদের ফোর্ট উইলিয়াম পুনরুদ্ধার সেই ইঙ্গিত বহন করে)। তার মানে বাঙালীরা কোন ক্ষমতার অলিন্দে বসে থাকবে না। মজার বিষয়টা হল এটা যাঁরা চেয়েছিলেন তাঁদের একজনকে বাদ দিলে বাকিরা সকলেই অবাঙালী। সিরাজের (কম্যান্ডার ইন চিফ) সেনাপ্রধান মির জাফর না হয় বাংলার সুবা দখলের লোভে পড়ে এই ষড়যন্ত্র করেন, কিন্তু মির বকসি, ইয়ার লুতুফ খান, আমীর চাঁদ, জগৎ শেঠ, রাই দুর্লভ ও মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র এঁরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে গেলেন কেন? এঁরা তো প্রত্যেকেই বনিক (আজকের ভাষায় ব্যবসায়ী) সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন এবং সঙ্গে অবাঙালী, কেবল কৃষ্ণচন্দ্র বাদে। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও বনিক ছিলেন, নদীয়ার রাজবংশের হলেও তিনি মূলত ছিলেন বনিক (এই তথ্য হয়তো অনেকের জানা নেই)। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই একটা প্রশ্ন জাগে যে ষড়যন্ত্র হওয়ার কথা ছিলো সুবাদারদের মধ্যে বা সেনাপতি, মন্ত্রী আমলা বা রাজকর্মচারীদের দ্বারা সেটা না হয়ে হল বনিকদের দ্বারা হল কেন? আরও স্পষ্ট করে বলি হিন্দু (সর্বজন বিদিত) ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের অবাঙালী বণিকরাই একত্রে সামিল হয়েছিলেন এই ষড়যন্ত্রে। তাহলে মূল ষড়যন্ত্র কারা করলো? বেশ চাপিয়ে দেওয়া ইতিহাসকে যদি মেনেই নিই তবু প্রশ্ন জাগে ব্রিটিশরা তাহলে কোথায় আঘাত হেনেছিলেন? আবার সেই একই চাপিয়ে দেওয়া ইতিহাসের কারণে যদি মেনেই নিই যে ব্রিটিশের কাছে তখন বাংলা যেন-তেন প্রকারেণ দখল করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য তখনও সেই একই প্রশ্ন জাগে কেন? একটু তলিয়ে দেখলেই দেখা যাবে যে এর পিছনে বাণিজ্যই ছিলো মূল কারণ। আসলে বাংলার, বাণিজ্যিক পরিভাষায় পশ্চাৎভূমি (হিন্টারল্যান্ড) ছিল লোভনীয়, শুধু ছিল কেন বলছি তা আজ সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক ও সঙ্গে লোভনীয়। এরপর ১৮২৪ সালে বাংলার সুবা বা ঢাকা সুবা থেকে আলাদা করে দেওয়া হল বার্মা কে যা ১৯৪৭ এর পার্টিশানের আগেই আলাদ দেশ হিসেবে ইংরেজরা চিহ্নিত করে গিয়েছিল। আমি এই দেশ ভাগকে পার্টিশানই বলি কারণ টেবিলে বসে চুক্তি সাক্ষরিত হতে পারে কিন্তু তাই বলে স্বাধীনতা কে ছিনিয়ে নেওয়া যায় না। ১৮৭৪ সালে পৃথক অসম টেরিটরি করে দিয়ে আবার বাংলাকে টুকরো করলো ইংরেজ। এই সময়েও বাঙালী জাতি তাঁর ভাষাকে আঁকড়ে ধরে আন্দোলনে ব্রতী হয়েছিল কিন্তু সেই সময়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চাপে এবং ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেসের গঠন বাংলা ভাষা আন্দোলনকে স্তিমিত করে দিয়েছিল বটে কিন্তু পরবর্তীতে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত পত্র পত্রিকা তে এই নিয়ে বিস্তর লেখালিখি হয়েছিল। ১৮১৮ সাল থেকে শ্রীরামপুর থেকে প্রকাশিত “সমাচার দর্পণ” পত্রিকাতে এই নিয়ে প্রায় নিয়মিত লেখা প্রকাশ হত এবং বঙ্গ বিভাজনের কারণে ব্রিটিশ সরকারের মুণ্ডুপাত করা হত যার ফল স্বরূপ সমগ্র অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের মধ্যে বাংলায় ব্রিটিশ বিরোধী হাওয়া সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ও জোরদার ছিল। আর একটা ঘটনা তো আমারা সকলেই জানি যে লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গ ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে হয়েছিল এবং সেই সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিবাদ স্বরূপ “রাখী-বন্ধন” তাছাড়া সেই সময়ের বিদ্বান ও জ্ঞানীগুনী মানুষদের লেখা পত্রের মাধ্যমে প্রতিবাদ, আমি আর এইসব বিস্তারিত বলে অযথা সময় নেব না। তা যাই হোক বাঙালী জাতিকে কোনঠেসা করার ইতিহাস এর পরও শেষ হয়নি। ১৯৪৭ ব্রিটিশ অবিভক্ত ভারত এর পার্টিশান হল পাকিস্তান-ভারত-পূর্ব-পাকিস্তান। ১৯৪৮ সালে জহরলাল নেহেরু নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলা সুবা বা বেঙ্গল প্রভিন্স কে ভেঙে বিহার তৈরি করলেন এবং আজকের পুরুলিয়াকে বাংলা থেকে আলাদা করে বিহারের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন সঙ্গে এই মর্ম জারি হয়েছিল যে ওই নবগঠিত প্রদেশের ভাষা সকলকে অর্থাৎ প্রাদেশিক জনজাতিকে সেই ভাষা জানতে, পড়তে লিখতে ও বলতে হবে। কিন্তু পুরুলিয়ার ওই অঞ্চলের মানুষরা আবার প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে। তাঁদের ভাষা আন্দোলন এতোটাই জোরালো আন্দোলন ছিল যে তার সামনে সরকারকে নতি স্বীকার করতে হয়েছিল। এটাই ছিল বাঙালীদের প্রথম ভাষা আন্দোলনের জয়। এতদিন যে পথে হেঁটেছিল বাঙালী সেই পথে সুদীর্ঘ পথ পেরিয়ে জয় এলো আর ভাষাকে কেন্দ্র করেই তাঁরা জয়ী হলেন। ভাষাকে কেন্দ্র করে এই জাতির লড়াইয়ের ইতিহাস এখানেই শেষ নয় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ঢাকার রাজপথে পাকিস্তানি পুলিশ ও সেনার গুলিতে নিহত হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার সহ আরও অনেকে আহতের অসংখ্য (সংখ্যা তত্তে গিয়ে বিতর্ক বাড়াতে চাইনা)। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকারের জারি করা আইনের কারণে যে আইনে উল্লেখ করা ছিল যে পাকিস্তানের(পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান) রাষ্ট্রভাষা উর্দু। এ ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয় ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কার্যত পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিকভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিল না। ফলস্বরূপ বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ ইত্যাদি বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ক্রমবর্ধমান গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা প্রবর্তিত হয়। সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৭ সালে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের আইন জারি করে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা এবং কৃষ্টির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
এতকিছুর পরেও আজও কি বাঙালী জাতি ও ভাষার উপর আক্রমণ এতটুকুও কমেছে? বাংলাদেশের বাঙালীদের লড়াই হয়তো থেমেছে কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে পশ্চিমবঙ্গবাসীর কি লড়াই থেমেছে? আজ বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ বাঙালীদের বাধ্য করেন তাঁদের ভাষায় কথা বলতে। আমি বাংলার এক নামী দৈনিকে এক উত্তরভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেখেছি, তাঁরা এই মর্মে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন যে চাকুরিতে লোক নেওয়া হবে শূন্যপদে কিন্তু আবেদনকারী যেন বাঙালী হলে আবেদন পত্র খারিজ হয়ে যাবে – বাংলায় বসে এমন বিজ্ঞাপন যারা দেন তাঁরাই আবার গলা ফাটিয়ে বলেন যে তাঁরা নাকি ভারতীয়। তাহলে বাংলা কি ভারতের নয়? তাহলে তাঁরা বাংলায় আছেন কেন? বাংলা ছেড়ে চলে যান! এতে যদি কারোর বা কোন গোষ্ঠীর বা দলের মনে হয় যে আমি বিচ্ছিন্নতাবাদী কথা বার্তা বলছি বা আচরণ করছি তাহলে তাঁকে বা তাঁদের আমার বিনীত জিজ্ঞাসা যে কোম্পানিটা এমন বিজ্ঞাপন দিল তাঁরা কি বিচ্ছিন্নতাবাদী আচরণ করলেন না? আর বাঙালীদের উচিত সেই দৈনিককে বর্জন করা যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন যে আর যাই হোক জাতি হত্যা ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকে আর যাই হোক বাঙালীরা প্রশ্রয় দেন না। সমগ্র ভারতে বাঙালীদের উপর ও তার ভাষার উপর আজও আক্রমণ হয়, হেয় প্রতিপন্ন করা হয়, আইন করে বাঙালীদের ভিটে-মাটি ছাড়া করার প্রয়াস চলছে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীদের উপর ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে নানা আঙ্গিকে আক্রমণ নেমে আসছে। সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত ও জনগোষ্ঠী-সম্প্রদায় ভিত্তিক ভাবে বাঙালী জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে বা প্রক্রিয়া চালান হচ্ছে যাতে করে জাতিটা আবার একাট্টা না হতে পারে। তাই আমার সকল বাঙালীর কাছে বিনীত অনুরোধ, আসুন আমরা সকলে একসঙ্গে বেঁধে বেঁধে থাকি যাতে আমাদের কেউ আলাদা না করতে পারে, এই মহান ২১শে কে স্মরণ করে শপথ গ্রহণ করি যে আমারা বাঙালীরা, জাতি ও ভাষার জন্য প্রাণ দিতে পর্যন্ত যেন প্রস্তুত থাকি। – “আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন / আমি বাংলায় বাঁধি সুর / আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে / হেঁটেছি এতটা দূর # / বাংলা আমার জীবনানন্দ / বাংলা প্রানের সুর / আমি একবার দেখি / বার বার দেখি / দেখি বাংলার মুখ”

5 thoughts on “মুক্তগদ্যঃ ভাষা দিবসের জন্য – অরিন্দম মুখোপাধ্যায়

  1. তথ্য সমৃদ্ধ এক অসাধারণ লেখা। অনেক কিছু অজানা ছিল, জানলাম, ঋদ্ধ হলাম।

  2. বাঙালী জাতির লড়াই সত্যিই আজও শেষ হয়নি। আমরা এক মহা সঙ্কটের মুখে দাড়িয়ে। লেখাটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।

Leave a Reply to অনন্যা মিত্র Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *