দুটি কবিতাঃ কুয়াশা রঙের নিচে, একটি বদলের গল্প – সাত্যকি

দুটি কবিতা
সাত্যকি

কুয়াশা রঙের নিচে

বাবাকে সবসময় দেখেছি
গড়ার প্রেরণা দিতে
ছোটবেলায় মশারীর মধ্যে শীতের সকালে
ঘুম ভাঙার পর বাবা ধরত দেশাত্মবোধক গান
তারপর কিছু ব্রতচারীর লাইন

হাওয়ার বিপরীতে বাবাকে দাঁড়াতে দেখেছি
কিন্তু,বাবাকে কোনোদিন কেউ ফুল দেয়নি
কুয়াশা মাথায় নিয়ে বাবা দাঁড়িয়ে খোলা মাঠে !

একটি বদলের গল্প

অনেক দিন পর আজ দেখা। বঙ্কু বাবুর সাথে।
ট্রেনে নিয়মিত দেখা হত। মাঝের কয়েক মাস পর
আজ প্রথম। বরাবরের মতো আজও ঝোলার
পেট মোটা। তবে হাতে বইয়ের বদলে লজেন্স,
সেই দশ টাকা। বঙ্কু বাবু চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বিক্রি
করতেন দশ টাকায়, এখন লজেন্স। আগের
তুলনায় গলা অনেকটাই নিচু চেহারাও শীর্ণ,
কাঁধ ঝুঁকে পড়েছে ব্যাগের ভারে। আগে হাতের
বইয়ের বান্ডিলে সব থেকে উপরে থাকত
বর্ণপরিচয় আর টেন্সের বই এখন সেই হাত
বেমানান লাগছে। এই কয়েকটি মাস বঙ্কু বাবুকে
অনেকটাই বদলে দিয়েছে সাথে ঢাকা পড়েছে
হাসি মুখের ছবিটাও,লম্বা সাদা দাড়ি আর মাস্কের নিচে !

4 thoughts on “দুটি কবিতাঃ কুয়াশা রঙের নিচে, একটি বদলের গল্প – সাত্যকি

  1. ‘কুয়াশা রঙের নিচে’ ভালো লাগলো। কবির অনুভূতিপ্রবন সমাজ দর্শন শব্দ চয়নে স্বচ্ছ, কোনো কুয়াশা তাকে ঢাকেনি।

    1. দুটি কবিতাই চমৎকার। প্রথম কবিতায় “বাবাকে কেউ কোনদিন ফুল দেয়নি” বড্ড মোচড় দিল মনে।
      দ্বিতীয় কবিতার মতো কতজনের জীবিকা আজ বদলে গেছে। বেঁচে থাকার জন্য মানুষকে কত কিই না করতে হয়!

Leave a Reply to Anindya Goswami Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *