কয়েক বছর আগে একটি লিটল ম্যাগাজিনে কবি প্রমোদ বসুর স্মৃতিচারণা করেছিলেন পার্থ। সেই লেখাটি পড়ার সময় ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি যে ওকে নিয়ে আমাকে এই রকম একটি লেখা লিখতে হবে। কিন্তু জীবনের সব কিছু তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পার্থ আর আমি দুজনেই একই ব্যাঙ্কে কাজ করতাম। ও যে কবিতা লিখত তা আমি প্রথম থেকেই জানতাম, যদিও পরিচয় হয়েছে অনেক পরে। ওপরে যে নামটি লিখেছি সেটি ওর পোশাকী নাম, তবে ও লেখালিখি করত পার্থ বসু নামে।ওর প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম ছিল ‘ব্যাঙ প্রথামতো জিব উল্টে নেয়’। আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন কাব্যগ্রন্থের নামকরণে ও প্রথম থেকেই একটি ভিন্ন আঙ্গিকের আশ্রয় নিয়েছে। পরবর্তী কাব্যগ্রন্থগুলিতেও সেই একই স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত কন্ঠস্বর ও অব্যাহত রেখেছিল। “নারী বশীকরণ জানে না”, ‘কবিতা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর”, “শূকর পরাস্ত হোক” ইত্যাকার নামকরণের মধ্যে যেমন কিছুটা কৌতুক নিহিত আছে তেমনি একটা প্রচ্ছন্ন ব্যাঙ্গের আভাষও দীক্ষিত পাঠকের নজর এড়ায় না। কবিতাগুলি পাঠ করলে এই বোধ তীব্রতর হয় । তাঁর কবিতার সব থেকে বড় গুণ তাঁর ভাষার সারল্য। ছন্দের ওপর ছিল তাঁর এক অনায়াস দখল। যার জন্য বিষয়ের গভীরতা সত্ত্বেও তার কবিতার স্মরণযোগ্যতা অবিস্মরণীয়। আপনারা যারা তার তর্পণ ও মাকে কবিতা দুটি পড়েছেন, তারা নিশ্চয় এই ব্যাপারটি অনুধাবন করেছেন। ছন্দের ওপর তিনি একটি নিবন্ধও লিখেছিলেন বিজিত কুমার ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘সাহিত্য’ পত্রিকায়।
পা্র্থর সব থেকে বড় গুণ ওর আত্মপ্রত্যয় এবং প্রাণবন্ত স্বভাব। নিজের বিশ্বাসে ও ছিল অনড়। বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারে ও ছিল এক নিরলস কর্মী। বাংলা পক্ষ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে ও ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল। ওর এই আকস্মিক প্রয়াণে আমরা একজন মহৎপ্রাণ কবিকে হা্রালাম যে শুধু তাই নয়, বাংলা ভাষার একজন একনিষ্ঠ সহযোদ্ধাকে হারালাম। এ এক অপূ্রণীয় ক্ষতি।
একদম সহমত। আপনাদের এই স্মৃতিচারণা বারবার ওনাকে মনে করিয়ে দেবে।
শ্রদ্ধেয় কবি তাঁর লেখার মধ্যে দিয়ে সকলের সাথে থাকবেন ।
একমত।
অলোক বাবু, আপনার সঙ্গে একমত।
লেখাটা পড়ে আরও একবার স্মরণ করলাম কবিকে 🙏