গ্রন্থ সমালোচনাঃ (শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধান-শুভজিৎ অধিকারী) রাধাকৃষ্ণ গোস্বামী (রাধু)

গ্রন্থের নাম – শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধান
অস্তমিত বৈষ্ণব
মহিমা ও উত্তরণ
লেখক – শ্রী শুভজিৎ অধিকারী .

প্রকাশক – নৈঋত প্রকাশন,
৫৫, সদানন্দ স্মৃতিপথ,
বালটিকুরি বকুলতলা (উঃ)
হাওড়া – ৭১১১১৩.
প্রচ্ছদ – মৃণালকান্তি দাস,
মুদ্রক – সুষমা প্রিন্টার্স,
৬২, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, কলকাতা – ৭০০০৬৯.
মুখ্য পরিবেশক – দে’জ পাবলিশিং
১৩, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলকাতা – ৭০০০৭৩.

সমালোচনা না করে আলোচনায় অগ্রসর হতে চাই। দেখা যাক কতটা আলোচনা করা যায়। সর্বমোট ১৯২ পৃষ্ঠার ‘ শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধান ‘ গ্রন্থটিতে আগে থেকে সূচীপত্র বা ঘোষণা না থাকলেও চারটি অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অধ্যায় – রহস্যে মোড়া অন্তর্ধান কাহিনি । দ্বিতীয় অধ্যায় — শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধানের পর ‘ চৈতন্য বিহনে’, তৃতীয় অধ্যায় — শ্রীপাট আন্দোলন ও চতুর্থ অধ্যায় — ব্রিটিশ – বঙ্গে বৈষ্ণব বিকাশ। এই গ্রন্থের মধ্যে শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধান যেমন আছে তেমনই আছে অস্তমিত বৈষ্ণব মহিমা ও উত্তরণ সব মিলিয়ে চারটি অধ্যায়ে সর্বমোট ১৯২ পৃষ্ঠায় গ্রন্থটি সমাপ্ত হয়েছে। লেখক শ্রী শুভজিৎ অধিকারী আজীবন অনুসন্ধিৎসু মানসিকতায় এই চারটি অধ্যায়ে বিভিন্ন বর্ণিত বিষয়গুলো সংগ্রহ করেছেন। প্রয়োজন হয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রমের।
প্রথম অধ্যায়ে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের অকস্মাৎ অন্তর্ধানের ঘটনাটি নিয়ে নানা মুনির নানা মত শোনা গিয়েছিল। শ্রীচৈতন্য জীবনীকার স্বয়ং কৃষ্ণদাস কবিরাজ বলেছেন –
প্রভুর গম্ভীর লীলা না পারি বুঝিতে।
বুদ্ধি-প্রবেশ নাহি তাতে না পারি বর্ণিতে।।
সব শ্রোতা বৈষ্ণবের বন্দিয়া চরণ।
চৈতন্য চরিত বর্ণন কৈল সমাপন।।
(চৈ.চ. অন্ত্য.পরি.২০)
লোচনদাসের শ্রীচৈতন্য মঙ্গলে দেখি ১৫৩৩ খৃ. আষাঢ় মাসে শুক্লা সপ্তমী তিথির তৃতীয় প্রহর বেলা রবিবার দিনে –
জগন্নাথে লীন প্রভু হইলা আপনে …
(চৈ. ম. শেষ খ. ১৭৪-১৭৮ শ্লোক)
শ্রীচৈতন্য লীলার ব্যাস বৃন্দাবন দাস লিখেছেন গুন্ডিচা মন্দিরে ভাবের আবেশে শ্রীশ্রী জগন্নাথ দর্শন করে ও স্পর্শ করে ধন্য হবেন – এই কামনায় ছুটে প্রবেশ করে ও সর্বক্ষণের সঙ্গী গদাধর পণ্ডিতকে নির্দেশ দিলেন – ….আমি আগে যাই তুমি আসহ পশ্চাতে।।…
প্রায় আধ ঘন্টা অপেক্ষা করে গদাধর বুঝলেন প্রভুর গমন। প্রভুর বিরহ গদাধর কি চুপ করে থাকবেন?
আচম্বিতে গদাধর হৈল অন্তর্ধান।
না পায় দেখিতে কেহ বলে- রামঃ রামঃ।।
এই মতে মহাপ্রভু গদাধর লৈয়া।
নিজ স্থানে গেলা প্রভু অন্তর্ধান হৈয়া।।
(চৈ.ভা. অন্ত্য. অধ্যায় ১২)
দুই রথের মাঝখানে শুক্লা সপ্তমী তিথিতে তৃতীয় প্রহরে তাঁরা ছাড়াও স্বরূপ দামোদর নাকি শোকে মন্দিরের পথে বুক ফেটে মারা যান।

শ্রীশুভজিৎ অধিকারী এসব কথা বিভিন্ন শ্রীচৈতন্য চরিত রচনা‌ সমূহ ও অন্যান্য রচনা সমূহ পড়ে ফেলেছেন। সঙ্গে শ্রীচৈতন্যদেবের অকস্মাৎ অন্তর্ধানের পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের আভাস পান।‌ জানেন কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোনোর মত কতই না কান্ড ঘটে আরও বিপদ বাড়তে পারে। এইসব অনুসন্ধানের ফলাফল নিয়ে আগেও যথেষ্ট গন্ডগোল হয়েছে, এমনকি প্রাণহানিও ঘটেছে।

চৈতন্য বিহনে সারা দেশে প্রায় পঞ্চাশ বছর বাংলা উড়িষ্যা আসাম ত্রিপুরায়‌ কেউ হরিনাম করতে সাহস পর্যন্ত করে নি। খেতুরী সম্মেলন পর্যন্ত এই দমবন্ধ অবস্থা চলেছে। তারপর থেকে আবার সব স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। উত্তরণ হয়েছে বৈষ্ণব মহলের। তা নিয়েই বিস্তারিত লিখেছেন শুভজিৎ।
এরপর শুরু হয়েছে তৃতীয় অধ্যায় যাতে বিভিন্ন প্রান্তের ছোট ছোট গড়ে ওঠা শ্রী পাটের বর্ণনা করা হয়েছে। ছোটবেলায় শুনেছি আমাদের বাড়ির গ্রামের নামও‌ নাকি ছিল শ্রীপাট পঞ্চসার। আসলে এটা ছিল বিক্রমপুর পরগণার বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চসার এলাকায়।‌ অনিসন্ধিৎসু বৈষ্ণব জনেরা শ্রীপাটের নামগুলো পেয়ে উপকৃত হবেন সন্দেহ নেই।
এরপর ব্রিটিশ বঙ্গে বৈষ্ণব বিকাশ বর্ণনা করতে গিয়ে প্রিয় শুভজিৎ অধিকারী গৌড়ীয় মঠের কথা, গৌড়ীয় মিশনের কথা এক এক করে প্রায় সব ইতিহাসই আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন। বাদ যায়নি মতুয়া সম্প্রদায়ের কথা , এমনকি বৈরাগীদের কথাও। ধন্যবাদ শুভজিৎ ভাই। ধন্য তোমার পরিশ্রম আর করেছেন নিরপেক্ষ ভাবে এক একটি বিষয়ের বর্ণনা। অনেক বৈষ্ণব জন ছাড়াও বাংলার সাধারণ মানুষ সত্যিই জানতে পারবেন অনেক অজানা তথ্য। শ্রীমান শুভজিৎ অধিকারী সকল মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছেন তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম আর পুঙ্খানুপুঙ্খ নিরপেক্ষ বিচারের জন্য। শুভজিৎ দীর্ঘ জীবী হয়ে মা বীণাপাণির সেবায় রত থাকুন আরও দীর্ঘ কাল – এই কামনা।
[5/8, 10:36] radhakrishna goswami: গ্রন্থ টির মূল্য ধার্য হয়েছে ₹৩৫০/- মাত্র। (এই অংশটি প্রথম দিকে যোগ হবে)
[5/8, 10:36] radhakrishna goswami: গ্রন্থ আলোচনা

গ্রন্থের নাম – বেদ-বৈদিক বৈষ্ণব প্রবাহ সৃষ্টিরহস্য ও বিবর্তন
_

লেখক – শ্রী শুভজিৎ অধিকারী

প্রকাশক – নৈঋত প্রকাশন,
৫৫, সদানন্দ স্মৃতিপথ,
বালটিকুরি বকুলতলা (উত্তর),
হাওড়া – ৭১১১১৩.
প্রচ্ছদ – মৃণালকান্তি দাস,

মুদ্রক – সুষমা প্রিন্টার্স,
৬২, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, কলকাতা – ৭০০০৬৯.
মুখ্য পরিবেশক – দে’জ পাবলিশিং,
১৩, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলকাতা – ৭০০০৭৩.

মূল্য: ৩৭৫ টাকা মাত্র।

উৎসর্গ করা হয়েছে :-
স্বর্গীয় বৈষ্ণব গোঁসাই ও বাবা-মাকে

এরকম একটি ২৮২ পৃষ্ঠায় সমাপিত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থটির আলোচনা করার সুযোগ পেয়ে সর্বাগ্রে নিজেকে ধন্য মনে করছি। লেখক শ্রী শুভজিৎ কত না শ্রম দিয়ে এই গ্রন্থের রসদ সংগ্রহ করে সেসব আবার সাবলীল বাংলা ভাষায় পাঠকদের জন্য পরিবেশন করেছেন !
বৈষ্ণব ধর্মের শিকড় সন্ধানে সবার আগে দেড় হাজার কোটি বছর আগে আজকের জগৎ সৃষ্টি রহস্যের উন্মোচন করতে গিয়ে মহাবিস্ফোরণের বা বিগব্যাংয়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। এক সময় এই ব্রহ্মাণ্ড শুধু এক অদৃশ্য শক্তিতেই ভরপুর ছিল যার অস্তিত্ব ছিল অপার বা অপরিসীম। এই অপরিসীম শক্তিতে পদার্থ বা বস্তুকণার ভর সৃষ্টির প্রসঙ্গে গত শতাব্দীর সত্তর দশকের ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হিগসের গবেষণা উল্লেখ করেছেন। আমাদের বাঙ্লার বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুও অনেক গবেষণা করে এই ধরনের কণার অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন। হিগস-বোসন কণার কথা জানা হল। অদৃশ্য অপ্রকাশ্য অবর্ণনীয় নিরাকার ও সাকার কণার মধ্যে লেখক ঈশ্বরের অস্তিত্ব অনুভব করলেন। তিনি জানাচ্ছেন ২০১২ সালের সার্নের লার্জ হ্যাড্রন কলাইডারে দুটি প্রটোন কণার মুখোমুখি সংঘর্ষে মিনি বিগব্যাং বা ছোট আকারের মহাবিস্ফোরণ ঘটানো হয় আর সেখানেই ধরা পড়ে হিগস-বোসন কণার আসল রূপ যার নাম রাখা হল গড পার্টিকল বা ঈশ্বর কণা। যা নাকি মহাশক্তিধর মহান। এই মহাশক্তিধর ঈশ্বরের নানান নাম নানান দেশে নানান ধর্মবিশ্বাসে । এ প্রসঙ্গে শ্রী গৌরাঙ্গ তথা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর রচনা করা শিক্ষাশ্লোকাষ্টকের দ্বিতীয় শ্লোকটি উদ্ধৃত করি :-
নাম্নামকারি বহুধা নিজসর্বশক্তিস্তত্রাপির্তা নিয়মিতঃ স্মরণে ন কালঃ।
এতাদৃশী তব কৃপা ভগবম্মমাপি দুর্দ্দৈবমীদৃশমিহাজনি নানুরাগঃ ।।
অর্থাৎ, হে ভগবান, তোমার এরকম করুণা যে , তোমার বিভিন্ন নামসমূহে তুমি বহুধা নিজসর্বশক্তি দিয়ে রেখেছ এবং সেই সব নাম স্মরণ করার জন্য অনেক অবসরও দিয়েছ, কিন্তু আমার এমনই দুর্ভাগ্য যে সেই নামে অনুরাগ জন্মালো না।

আবার ফিরে আসি মূল গ্রন্থের আলোচনায় – লেখক শ্রী শুভজিৎ আধ্যাত্মিক বিষয়ের সঙ্গে আধুনিকতম বিজ্ঞান ও জগৎ সৃষ্টি রহস্যের উন্মোচন করেছেন। বিশাল এই বিষয়। তা নিয়ে বেশি দূর এগিয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে বোধহয় আর সম্ভব হবার নয়।
লেখক বৈষ্ণব ধারা বর্ণনা করতে গিয়ে বেদ থেকে কীভাবে এক এক করে নয়‌ রকম সৃষ্টির কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন – ‘ সৃষ্টির আদিতে ব্রহ্ম নামে এক পরম সত্ত্বা প্রকৃতিকে বিশাল অণ্ড বা ডিমের আকারে রূপান্তরিত করল। এটাই ব্রহ্মাণ্ডের আদিরূপ। তার থেকে ধাপে ধাপে তৈরি হল চরাচর, দেবদেবী সহ অন্যান্য প্রাণী জগৎ ….ফের অণ্ডের বিভাজন ঘটালেন স্বয়ং ব্রহ্মা। উর্ধভাগে নিজের শক্তিরূপ ধারণ করে বিরাজ করতে লাগলেন। মধ্যভাগে স্থিতিশক্তিরূপ হলেন শ্রীবিষ্ণু আর অধোভাগে ধ্বংস বা প্রলয় শক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করলেন শিব। ‘
সৃষ্টির বিস্তার ঘটাতে গেলে প্রয়োজন মানুষের ব্রহ্মা কয়েকজন ঋষি সৃষ্টি করলেন, কিন্তু তারা সব সময় ধ্যানে মগ্ন থাকেন। ব্রহ্মা নিজ মূর্তির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জন্ম দিলেন স্বয়ম্ভুব মনু ও শতরূপার আর শুরু হল নারী পুরুষের মিলন। শতরূপার গর্ভে জন্ম নিল প্রিয়ব্রত ও উত্তানপাদ দুই ছেলে এবং আকুতি, দেবাহুতি ও প্রসূতি তিন মেয়ে। শুরু হলো আজকের মানবজাতির আত্মপ্রকাশ।
আর পৃথিবীতে শ্রী বিষ্ণু স্থিতিশক্তিরূপে বিরাজ করছিলেন জলে বা নারায় , তাই বিষ্ণুর আরেক নাম নারায়ণ যেমন ব্রহ্মারও এক নাম ঐ নারায়ণ। এরপর জলের কীট মধুকৈটভের দীর্ঘকাল বাস সমাপ্ত হলে শুরু হল অবতারবাদ। স্বয়ং শ্রীবিষ্ণুর প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে এক এক করে মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নৃসিংহ, বামন, পরশুরাম, রাম, (কৃষ্ণ শুধুমাত্র অবতার নন তিনি অবতারী তাই) বলরাম , বুদ্ধ ও কল্কি অবতারের নাম পাওয়া যায়। শ্রী বিষ্ণুর অবতার নিয়ে বা সৃষ্টি তত্ত্ব যতই মতভেদ থাক সব ঘুরে ফিরে কিন্তু ঐশ্বরিক (নাম তাঁর যা-ই হোক) শক্তিকেই সবাই মেনে নিয়েছেন।
প্রাগৈতিহাসিক যুগের ধর্ম ও পুজো লেখক বলেছেন হিন্দুদের দেব দেবীর মহিমা কীর্তন শুরু হয়েছে ভারতে বৈদিক সভ্যতা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই যার তখন ই সৃষ্টি তত্ত্বে পরম ব্রহ্মার লীলা জানা গিয়েছে। তাঁর অন্ডরূপ বিস্ফোরণে আবির্ভূত হয়েছেন বিষ্ণু, মহেশ্বর থেকে অবতার গণ। প্রস্তর যুগে পুজো চর্চার চল ছিল বলে অনুমান করা যায়। মৃতের সৎকারের সময় তাঁর পছন্দের জিনিসপত্র এমনকি ব্যবহৃত অস্ত্র ও দেহের সঙ্গে কবর দেবার রীতির কথা জানা যায়। ভল্লুক মেরে পুজোর প্রচলন ছিল। এমিল বাচলার এক পুরাতত্ত্ববিদ ভল্লুক পুজোর অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়েছেন।
নতুন প্রস্তর যুগে বিপ্লবী ধারণাই ধর্ম। নৃতত্ত্ব বিজ্ঞানী জ্যাক কভিনের মতে পৃথিবীতে ধর্ম নামক মোহ , ত্যাগ, তিতিক্ষার জন্ম এই নতুন যুগে। দেবী পুজো ও ষাঁড়ের পূজার ধারণা এই নব্য প্রস্তর যুগে শুরু হয়েছিল। এভাবে পছন্দের পশু-পাখি দেবদেবীর মর্যাদা পেয়ে তৈরি হল মেগালিথিক, কুকুটেনি, কুকুটেনি ত্রিপোলি, সংস্কৃতি প্রভৃতি সংস্কৃতি। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধর্ম তৈরি হল। ভারতীয় উপ মহাদেশে ধর্মের বিকাশ ব্রোঞ্জ যুগ পেরিয়ে সিন্ধু সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। প্রত্নতাত্বিক দের মতে যিশু খ্রিস্টের জন্মের দশ লক্ষ বছর আগে এই উপ মহাদেশে মানব বসতি গড়ে ওঠে।
এবার আবার ব্রহ্মার কথায় আসা যাক। ব্রহ্মার সৃষ্টি সাতজন ঋষি – মরীচি, অত্রি, অঙ্গিরা, পুলস্ত্য, পুলহ, ক্রতু ও বশিষ্ঠ এক মন্বন্তরের জন্য। তাঁরা পরম ব্রহ্মের সঙ্গে লীন হলে শুরু হয় নতুন মন্বন্তর। এই রকম ১৪ টি মন্বন্তর নিয়ে গঠিত হয় এক একটি কল্প।
কল্পের হিসাব: ১৭ লক্ষ ২৮ হাজার বছর সত্য যুগ + ১২ লক্ষ ৯৬ হাজার বছর ত্রেতা যুগ + ৮ লক্ষ ৬৪ হাজার বছর দ্বাপর যুগ + ৪ লক্ষ ৬৪ হাজার বছর কলিযুগ। এই চারটি নিয়ে ১টি মহাযুগ আর ৭১ টি মহাযুগ মিলে এক একটি মন্বন্তর অর্থাৎ ৩০ কোটি ৬৭ লক্ষ ২০ হাজার পর্যন্ত একটি মন্বন্তর। এরকম ১৪ টি মন্বন্তর নিয়ে গঠিত হয় এক কল্প।
ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর লীলাতে এই জগৎ এবং তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আছেন ও থাকবেন শিব মহাদেব। জগৎ সৃষ্টির পরে এই মেদিনী সৃষ্টির মূলে আছে জল যার এক নাম ‘ নারা ‘ আর এই নারা থেকে নারায়ণ বা পরম বিষ্ণু। এই প্রসঙ্গে বলা যায় হিন্দু ধর্ম ও তার অন্যতম মূল ধারা বৈষ্ণব ধারা অব্যাহত গতিতে প্রথম থেকেই চলে আসছে। লেখক শ্রী শুভজিৎ প্রথম বৈষ্ণব আচার্য ব্রহ্মা থেকে শুরু করে নারদ , শিব , সনৎকুমার, কপিল মুনি, স্বয়ম্ভুব মনু , প্রহ্লাদ, রাজা জনক , পিতামহ ভীষ্ম, বলি মহারাজ, শুকদেব মুনি, যমরাজ এরকম বারোজন বৈষ্ণব আচার্যের কাহিনী সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন।
শ্রীহরির নাভিপদ্ম থেকে ব্রহ্মার আবির্ভাবের পর তাঁকে সৃষ্টির জন্য যে জ্ঞান বিষ্ণু দান করেছিলেন সেই দিব্যজ্ঞান নিয়ে ব্রহ্মা সৃষ্টির বিস্তার করেছিলেন। প্রজাপতি ব্রহ্মাই হলেন প্রথম বৈষ্ণব। তিনি পালনকর্তা শ্রীহরির প্রতি ছিলেন শ্রদ্ধাবনত।
ব্রহ্মার মানস পুত্র দেবর্ষি নারদ একাধিকবার জন্মগ্রহণ করেন। সফল বৈষ্ণব আচার্য নারদ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের তথা শ্রীবিষ্ণুর তপস্যা, তাঁর গুণকীর্তন, সঙ্গীত এবং বৈষ্ণব ধর্মের আকর গ্রন্থ ‘ পঞ্চরাত্র ‘ লিখেছিলেন। তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন কাহিনী বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছেন লেখক শ্রী শুভজিৎ।
মহাজাগতিক শক্তির তিনটি রূপ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর। স্বয়ং মহেশ্বর শিব শ্রীমদ্ভাগবত (৪র্থ স্কন্ধের ৭ অধ্যায়ে ৫০ শ্লোকে) বলেছেন – আমি জগতের কারণ স্বরূপ, সকলের আত্মা, ঈশ্বর, সাক্ষী স্বরূপ আমিই ব্রহ্মা ও মহাদেব।
” অহং ব্রহ্মা চ সর্বশ্চ জগতঃ কারণং পরম্।
আত্মেশ্বর উপদ্রষ্টা স্বয়ংদৃগবিশেষণ ।।”
আবার শ্রীমদ্ভাগবত ৮ম স্কন্ধ ৭ ম অধ্যায়ে ২১ শ্লোকে দেখি সমুদ্র মন্থনের সময় সর্বপ্রথম তীব্র বিষ উঠে এল এবং সেই বিষের জ্বালা থেকে পৃথিবীর প্রজাদের রক্ষা করতে পারেন একমাত্র শিব মহাদেব। প্রজাপতি গণ তাঁর শরণাপন্ন হয়ে শিবের স্তব করলেন –
‌‌ ” দেবদেব মহাদেব ভূতাত্মন্ ভূতভাবন ।
ত্রাহি নঃ শরণাপন্নাং স্ত্রৈলোক্যদহনাদ্ বিষাৎ।।”
অর্থাৎ, হে সর্ব ভূতময়, ভূতপালক, দেবদেব, মহাদেব আপনি শরণাগত আমাদের ত্রিলোক তীব্র বিষ থেকে রক্ষা করুন। ভগবান শিব শংকর দেবী সতীর অনুমোদন সাপেক্ষে সমস্ত জগতের মঙ্গলের জন্য সেই বিষকে নিজের হাতে পান করলেন –
” ততঃ করতলীকৃত্য ব্যাপি হলাহলং বিষম্।
অভক্ষয়ন্মাহাদেবঃ কৃপয়া ভূতভাবনঃ ।। “

এছাড়া শ্রীমদ্ভাগবত বলছেন – ” বৈষ্ণবানাং যথাশম্ভুঃ।” (১২/১৩/১৬ )

চতুর্থ বৈষ্ণব আচার্য সনৎ কুমার চার ভ্রাতৃগণ। এঁরা ব্রহ্মার মানস পুত্র তাঁর মন থেকে উদ্ভব। এঁরা প্রজা সৃষ্টি বিস্তারে অনীহা প্রকাশ করতে ব্রহ্মার কাছে এলেন কিন্তু সে সময় তিনি সৃষ্টির কাজে ব্যস্ত থাকায় তাঁদের উপদেশ দিতে অসমর্থ হলেন। তখন ভগবান শ্রীবিষ্ণু হংসাবতার রূপে এসে তাঁদের মুক্তির মার্গের পথ বাৎলালেন। এঁরা চার ভাই (মহাভারতে চার নয় সাতপুত্রের – অনিরুদ্ধ, সন, সনৎসুজাতা , সনক, সনন্দন, সনৎকুমার, কপিলা এবং সনাতন) বিশেষ করে সনৎকুমার শিবপুরাণের একটি অন্যতম খণ্ড সনৎকুমার সংহিতা রচনা করেছেন যেখানে ছত্রে ছত্রে হরিনামের গুণকীর্তন করা হয়েছে। এই চার ভাই বিষ্ণু এবং শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা পদ্ধতি ভক্তদের মধ্যে প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

বৈষ্ণব আচার্য কপিল মুনি সাংখ্য দর্শনের সৃষ্টি করেন। স্বামী বিবেকানন্দের কথা – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনস্তাত্ত্বিক কপিল (লেখক শ্রী শুভজিৎ জানিয়েছেন মহান দার্শনিক কপিল মুনি ছিলেন বঙ্গবাসী)। বেদ উপনিষদের অনেক আগে থেকেই এই সাংখ্য দর্শনের অস্তিত্ব জানা যায়। শ্রীমদ্ভাগবত গ্রন্থে সাংখ্য দর্শনের আস্তিক্যবাদী ধারাটি প্রাধান্য পেয়েছে। বিভিন্ন ধারা ও সম্প্রদায়ের মধ্যে কপিলের সাংখ্য দর্শন প্রাধান্য পেয়েছে। এমনকি বৌদ্ধধর্মের মূলতত্ত্বের উৎসও এই সাংখ্য দর্শন। নাথ সম্প্রদায়ের সঙ্গে কপিল মুনি সাংখ্য দর্শনের মিল পাওয়া যায়। এই লোকায়ত দর্শন সম্পর্কে গার্বে লিখেছেন – ” In Kapilas doctrine, for the first time in the history of the world, the complete independence and freedom of the human mind, its full confidence in its own powers were exhibited.” লেখক শ্রী শুভজিৎ প্রমাণ দিয়েছেন এই সাংখ্য দর্শন বাংলা তথা ভারতের প্রাচীনতম দর্শন।
সৃষ্টির শুরুতে ভগবান শ্রীবিষ্ণু যখন গভীর চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে অলৌকিক শক্তি পর্যবেক্ষণ করছিলেন, তখন তাঁর শরীর থেকে দুটি রূপের আবির্ভাব হয়েছিল। পুরুষ রূপে স্বয়ম্ভুব মনু আর নারী রূপে শতরূপার আবির্ভাব হয়েছিল। তাঁদের দুই পুত্র প্রিয়ব্রত ও উত্তানপাদ আর তিন মেয়ে আকুতি, দেবহুতি ও প্রসূতির জন্ম হয়েছিল। তাই মনু ও শতরূপা আমাদের সকল মানুষের আদি পিতা ও মাতা। কাজেই তাঁদের সন্তানদের মধ্যে একটাই বর্ণ হবার কথা। তবু মানুষদের মধ্যে জাতি ভেদ বর্ণভেদ থাকার কথা নয়। মনুসৃষ্ট মনু স্মৃতি বা মনু সংহিতা নামক অনুশাসনতন্ত্রে ব্রাহ্মণ্যবাদকে প্রাধান্য দেওয়ায় বর্ণে বর্ণে ভেদ বিদ্বেষ প্রকট হতে দেখা যায়। নারী ও শূদ্রদের কঠোর ভাবে অবজ্ঞা করা হয়েছে। অথচ মনু সংহিতা ৩য় অধ্যায়ে ৫৬ ক্রমিক নং শ্লোকে দেখি:-
” যত্র নার্যস্তু পূজ্যন্তে রমন্তে তত্র দেবতাঃ।
যত্রৈতাস্তু ন পূজ্যন্তে সর্বাস্ত্রত্রাফলাঃ ক্রিয়াঃ।।” – অর্থাৎ, যেখানে নারীগণ সম্মানিতা হন, সেখানে দেবতারা প্রীত হন। যেখানে এঁরা সম্মানিত হন না, সেখানে সকল কর্ম নিষ্ফল হয়।
বৈষ্ণব আচার্য স্বয়ম্ভুব মনু কৃত ‘মনুসংহিতা’য় স্ত্রী ও শূদ্রদের নিয়ে অনেক আপত্তিকর মন্তব্য থাকলেও ঐ সংহিতায় তাঁদের অনেক জায়গায় প্রশংসা করে উচ্চ স্থানও দেয়া হয়েছে। লেখক শ্রী শুভজিৎ সেসবেরও উল্লেখ করে অবশ্যই ধন্যবাদার্হ হয়েছেন।
সপ্তম বৈষ্ণব আচার্য প্রহ্লাদ যিনি শ্রী বিষ্ণুকে একেবারেই পছন্দ করতেন না সেই দৈত্য কুলের রাজা হিরণ্যকশিপুর ছেলে হয়েও হরির পরম ভক্ত হয়ে উঠেছিলেন, তাঁর কাহিনী সবিস্তারে জানালেন। জগতের সর্বত্র শ্রীহরি বা শ্রী বিষ্ণু বা শ্রীকৃষ্ণ বা অন্য কোনো নামের ভগবান পরমেশ্বর থাকতে পারেন, একথা জগৎ বাসীকে জানিয়েছিলেন এই ভক্ত প্রহ্লাদ।
অষ্টম বৈষ্ণব আচার্য রাজা জনক একদিন যজ্ঞভূমি কর্ষণ করার সময় লাঙলের ফলায় তৈরি হওয়া রেখায় ফুটফুটে শিশু কন্যা পেয়ে তার নাম রেখেছিলেন সীতা। যথাসময়ে বিষ্ণুর অবতার শ্রীরামচন্দ্রের হাতে কন্যা সীতাকে সম্প্রদান করেছিলেন। রাক্ষসরাজ রাবণ সীতাকে লাভ করার জন্য তাঁকে অপহরণ করেছিলেন। ফলে মা সীতাকে উদ্ধার করার জন্য শ্রী বিষ্ণুর অবতার শ্রীরামচন্দ্র রাবণের লঙ্কাপুরী অবরোধ করে যুদ্ধে তাঁকে পরাজিত ও নিহত করে সীতাকে উদ্ধার করেছিলেন। ঋষি বাল্মীকির হাতে লেখা হল এই ঘটনার বিস্তারিত কাহিনী আর তৈরি হল হিন্দু ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ রামায়ণ।

নবম বৈষ্ণব আচার্য পিতামহ ভীষ্ম ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের পরম ভক্ত, অথচ মহাভারতের বিশাল যুদ্ধে তাঁকে কৌরব পক্ষে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করতে হয়েছে। বিপরীতে পাণ্ডবদের পক্ষে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণকে তাঁদের মঙ্গল সাধন করার জন্য থাকতে হয়েছে। কুরুক্ষেত্র মহাপ্রাঙ্গনে ভীষ্ম মোট ৫৮ দিন শরশয্যায় শুয়ে ছিলেন। মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের ৮মী তিথিতে যোগযুক্ত হয়ে ইচ্ছা মৃত্যু বরণ করেছিলেন। নিজে শ্রীকৃষ্ণের স্তব করে এবং বিষ্ণুর সহস্র নাম পাঠ করে পরম বৈষ্ণব হিসেবে আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন। লেখক শ্রী শুভজিৎ লিখেছেন – আর সেই সঙ্গে সূচনাও হয় বৈষ্ণব ধর্ম বিস্তারের মহাসমুদ্র সম ইতিহাসের একটি বড় অধ্যায়ের। “

দশম বৈষ্ণব আচার্য বলি মহারাজা দৈত্য কুলের রাজাধিরাজ দয়ালু, দানশীল ও ধার্মিক কিন্তু অহংকারী ছিলেন। প্রহ্লাদের নাতি বলি রাজের বামন রূপী ভগবান শ্রীবিষ্ণুর মাত্র তিন পাদ ভূমি প্রার্থনা তাঁকে সর্বস্বান্ত করে দেয়। এমনকি দৈত্য গুরু শুক্রাচার্যকে পর্যন্ত অমান্য করতে দ্বিধা করেননি। তাঁর স্মরণে দাক্ষিণাত্যের বিশেষ করে কেরলে ওনম উৎসব পালিত হয় সাড়ম্বরে দশদিন ধরে , জানালেন লেখক শ্রী শুভজিৎ।
একাদশ বৈষ্ণব আচার্য শুকদেব মুনি ছিলেন ঋষি ব্যাসদেবের পুত্র। তিনিই মহারাজা পরীক্ষিৎকে শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ করে শোনান। লেখক বলেছেন – বৈদিক শাস্ত্র যদি দুধ-সাগর হয় তাহলে সেই সাগরের ননী বা মাখন হল শ্রীমদ্ভাগবত। ” কত সুন্দর কথা বলেছেন তিনি। সত্যযুগে ধ্যান, ত্রেতাযুগে যজ্ঞ, দ্বাপর যুগে অর্চনা দিয়ে যা লাভ হয়, কলিযুগে শুধু শ্রীকৃষ্ণ নাম সঙ্কীর্তন দিয়ে তা লাভ হয়ে থাকে।

দ্বাদশ বৈষ্ণব আচার্য যমরাজ যাঁকে ঋগবেদে সূর্যের পুত্র বলা হয়েছে। সৃষ্টি সম্পূর্ণ হবার পর তিনি একমাত্র নশ্বর স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করেছিলেন, তাই তাঁকে প্রজাপতি ব্রহ্মা মরণের দেবতা বলেছেন। যমরাজের একটি মাত্র মন্দির দিল্লির কাছে হিমাচল প্রদেশের চম্বা জেলার ভারমোর এলাকায়। সকলের পরিচিত কাহিনী : ব্রাহ্মণ অজামিল পাপী হলেও মৃত্যুর সময় নিজের নাতির নাম ‘নারায়ণ’ ডেকে সর্বপাপ মুক্ত হলে যমদূতদের জায়গায় বিষ্ণুদূত এসে তাকে বৈকুণ্ঠে নিয়ে যান। যমরাজ তাঁর অনুগামীদের বলেছেন – পরমেশ্বর ভগবান শ্রীহরির নাম কীর্তনের মধ্যেই রয়েছে মানব সমাজের মুক্তির পথ।
এই দ্বাদশ মহান আচার্যদের উপদেশ, পরামর্শ, ভাগবত তত্ত্বের সহজ ব্যাখ্যা বৈষ্ণব ধর্মকে হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠ ধারা হিসেবে তুলে ধরেছে। যুগ যুগ ধরে ভাগবত ধারাকে প্রসারিত করেছে।

এরপর লেখক বৈষ্ণব ধর্মের বিবর্তন প্রবাহ শুরু করেন বৈদিক বৈষ্ণব থেকে বঙ্গে বৈষ্ণব প্রবাহ, শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাব ও সঙ্কীর্তনের প্রভাব, জাহ্নবা থেকে বিভিন্ন নারীর উত্থান সব লেখক শ্রী শুভজিৎ বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছেন। পরিশ্রম প্রচুর পরিমাণে করেছেন। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বৈষ্ণব ধর্মের ধারা পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছেন। তাঁকে অবশ্যই বারবার ধন্যবাদ জানাতেই হয়। এরকম গ্রন্থ এর আগে দেখিনি। পাঠকদের কাছে অনুরোধ, অন্তত একবার পড়ে দেখুন আর লাভবান হতে এগিয়ে আসুন।

One thought on “গ্রন্থ সমালোচনাঃ (শ্রীচৈতন্যের অন্তর্ধান-শুভজিৎ অধিকারী) রাধাকৃষ্ণ গোস্বামী (রাধু)

  1. দুটি গ্রন্থ সম্বন্ধে আলোচনা পড়ে গ্রন্থ দুটি পড়ার আগ্রহ জন্মাবে পাঠকের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *