অণুগল্পঃ শিউলীর আমন্ত্রণে – স্বাগতা ভট্টাচার্য ( নবগ্রাম, বাঁকুড়া)

শিউলীর আমন্ত্রণে
স্বাগতা ভট্টাচার্য

তখন ভোরের আলো ফুটবো ফুটবো।
কোথা থেকে একমুঠো সুবাস আমার নাকে মুখে চোখে বুলিয়ে দিয়ে গেলো।
মোনটাকে জাগিয়ে দিলো। বোধায় কাছেপিঠে কোথাও শিউলি ফুটেছে।
আমি বেরিয়ে পড়লাম সেই সুবাসের টানে। যেখানে থমকে দাঁড়ালাম সেটা সত্যিই একটা শিউলি গাছ।যার তলা বিছিয়ে আছে শুভ্রতা আর বৈরাগ্যর মেলবন্ধন।

আমি টুপ করে বসে পড়লাম বারো তেরো বছরের কিশোরীর মতন। আর আমার মাঝ বয়সী আঁচলে একটি একটি করে তুলে নিতে থাকলাম শরতের শুভ্রতা আর বৈরাগ্য।
জানি না কতক্ষণ! যখন সম্বিত ফিরে পেলাম,তখন দেখি শাড়ীর আঁচল ভিজে গেছে শরতের শিশিরে।আর এত ফুল কুড়িয়েছি যে নিয়ে আসা সম্ভব নয়।
যখন ভাবছি এত ফুল নিয়ে কি করবো,পাশে একটা বাঁশের বেঞ্চেে এক বয়স্ক ভদ্রলোক আর একজন ভদ্রমহিলা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছেন। বোধায় স্বামী-স্ত্রী । মর্নিংওয়াক করতে আসেন।
আমার আঁচল ভরা শুভ্রতা আর বৈরাগ্য মেলে ধরে বললাম কাকু নেবেন?বয়স্কাা ভদ্রমহিলা তাঁর শাড়ীর আঁচল পেতে দিয়ে বললেন “শিউলি ফুল আমাদের দুজনেরই খুব প্রিয়।কিন্তু দুজনের কোমরেই বেল্ট বাঁধা আছে। তাই ঝুঁকে কুড়াতে পারিনা।তাই সুবাস নেবার জন্য রোজ ভোরে এখানে এসে বসে থাকি। “
ফুলগুলি ওঁদের দিয়ে গন্ধটুকু বুকে নিয়ে যখন বাড়ি ফিরছি,তখন পূব দিগন্তে টকটকে রাঙাভোর…

2 thoughts on “অণুগল্পঃ শিউলীর আমন্ত্রণে – স্বাগতা ভট্টাচার্য ( নবগ্রাম, বাঁকুড়া)

Leave a Reply to দয়াময় পোদ্দার Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *