কবিতাঃ বাস্তুহারা – পার্থ রায়

বাস্তুহারা
পার্থ রায়


তখন ছিল গনগনে রোদ্দুর
মেইল ট্রেনের গতি,
এখন স্তিমিত আঁচধূসর অতীতে আত্মরতি;
সম্মোহিত আমি হেঁটে যাই
সাদা কালো ফ্ল্যাশব্যাক
রবিবারের বারান্দাটা দেখতে পাই;
মার্জারের দৃষ্টিতে তুতো ভাইবোনেরা পাত পেড়ে বসে
কলাপাতার ওপরে ভাতের গর্তে কখন মাংস পড়ে,
মা কাকিমা জ্যেঠিমারা গড়িয়ে পড়ে হেসে;
চোখে পড়ে সেই চিলেকোঠার ঘর
প্রেমিক অলোকেশদা সাম্য চেয়ে পিঠে বুলেট নিয়েছিল
রাঙ্গাদি ঝুলছে কড়িকাঠে নিথর;
খেজুর নারকেল গাছের মায়ায়
নিষিদ্ধ পুকুর পাড়
পুতুলদি আমার হাত টেনে রাখছে ওর বুকের ছায়ায়;
আকাশের বুকে বাবা কাকাদের একান্নবর্তী মুখ
কাছে এসে জানতে চায়, “কেমন আছিস অঘোর?
”থমকে যায় নিশি পরিক্রমার সুখ;
জোর করে বুজে রাখা চোখে একরাশ ভয়
জানতে চাইলে বলতে পারব না-
বাস্তু সাপ দুটো কোথায় গেছে?
অথবা সাদা লক্ষ্মী পেঁচা দুটো?
ন-কাকিমা বলতেন ওদের দেখলে শুভ হয়,
গন্ধরাজ, বাতাবি লেবু আর জিরাফ গলার নারকেল গাছ
মায়া ভরা আঁচলে জড়ানো ছায়া
খলবল করছে কাতলা মৃগেল শোল মাছ;
পায়রার খোপে স্বাচ্ছন্দ্য রাখা
হনন করেছি একান্নবর্তী মায়া বৃক্ষ
এভাবেই ভাল থাকা;
এখন যেখানে গ্রাউন্ড প্লাস ফোর
সেখানে ছিল আমাদের স্নেহঘেরা পাঁচ ঘর।

9 thoughts on “কবিতাঃ বাস্তুহারা – পার্থ রায়

    1. সবাইকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা। উত্তর দিতে বিলম্ব হল বলে আন্তরিক দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।

  1. কি সুন্দর লেখা! শেষ লাইন দুটো বড়ো ভালো লাগলো। মন কেমন করে উঠলো।

  2. শেষ পঙক্তি দুটি মন ছুঁয়ে যায়….! অনবদ্য প্রকাশ! ভালো লাগলো।

  3. অপূর্ব- হনন করেছি একান্নবর্তী মায়া বৃক্ষ – অপূর্ব সুন্দর এক বিশ্বাস আর স্বগতোক্তি। আরও লিখুন।

Leave a Reply to radhakrishna goswami Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *