কবিতাঃ চৌত্রিশ অক্ষ ১০ – দয়াময় পোদ্দার

চৌত্রিশ অক্ষ-১০
দয়াময় পোদ্দার

সূত্রধর:
অপানে জুহ্বতি প্রানং প্রাণেহপানং তথাপারে।
প্রাণাপানগতি রুদ্ধা প্রাণায়ামপরায়না:।।

অধোগামী বায়ুতে উর্দ্ধগামী বায়ুকে তেমনি অন্য যোগীগন উর্দ্ধগামী বায়ুতে অধোগামী বায়ুকে হোম করেন।
প্রাণ এবং অপানের গতিকে রোধ করে অপর যোগীগন প্রাণায়াম পরায়ণ হন।।
শ্রীমদ্ভগবত গীতা,জ্ঞানকর্মসন্ন্যাসযোগ,২৯তম শ্লোক

মৃত্যু একটা কমা মাত্র। ভুমধ্যসাগরে উড়ে যাওয়া সিগালের ঠোঁটে
কখনও মুগডালে কুমড়ো শাকের স্বাদ পায়না,
মৃত্যু তেমনই নিজে।

তারপরে সন্ধ্যা নামে- শমী বৃক্ষের নিচে রাত্রি মধ্যযামে
এক নীলাভ মানব উদ্যাম নৃত্যে মাতে। সে, তাকে চেনেনা, আর
আমি আমাকে।
আমাদের নৃত্য চলতে চলতে কখন আমরা নগ্ন হয়ে যাই
নিজেরাই জানিনা। শমী বৃক্ষের ডালে আমাদের
প্রথম জন্মদিনে পাওয়া কাপড় ঝুলতে থাকে। তারপরে
কক্ষপথ ভিন্ন। অচেনা বলয়।
নেপালের অর্জুন থাপা এখন কেমন আছে জানিনা!
সে কি এখনও ঘোড়ায় চড়ে সমতলে নামে?
তিস্তার পার ধরে বহুদূরে গিয়ে টিলায় বসে বাঁশি বাজায়,
বরদাঙে তার বউ কি এখনও তার জন্য ছুটে আসে
ঘরে ফিরিয়ে নেবার জন্য?
জন্ম আর মৃত্যু নেচেছে এভাবেই কোনোদিন।
গ্যাংটকের অরণ্যে সোনালি ফেজান্ট
বিদ্যুচ্চমকের মতো দেখা দিয়ে মিলিয়ে যাওয়া!

। ক।

আর মৃত্যুর ভিতর দিয়ে ত্রিশ লক্ষ যোজন হেঁটে আসার
পরে যে জীবন, তার কোন জন্ম নেই
তার কোন মৃত্যুও নেই।
সমগ্র দাড়ি-কমা-সেমিকোলনের উর্দ্ধে রথ ছুটে চলে,
দুটি পাগলা ঘোড়া, অন্ধ সারথী, আর সামনে এবং পিছনে
দুই পক্ষের একজন যোদ্ধা সেই রথের আরোহী।

কখনও আরোহন কখনও অবরোহন;

ততটা সহজ নয়- রাতের শেষে ভোর আসা,
সুস্মিতা মিশ্র’র হাসির মতো, তার হরিণী চলনের মতো
স্বলাজ-প্রতিভের মতো বয়ে যাওয়া…

কখনও সমাপ্ত হয়না। এক আলোকবিন্দু থেকে
আর এক আলোকবিন্দুতে তির্যক অন্ধকার রেখা
বেঁধে থাকে, ছুঁয়ে যায় অস্তগামী সূর্যে প্রাণায়াম!

। হ।

অদৃশ্য আগুন, যে ফারেনহাইটে জ্বলে ছাই হয়ে যেতে পারে
সমগ্র তারামন্ডল, তার থেকেও
তীব্র নাভিবলয় , আর মৃত্যুতো একটা কমা মাত্র!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *