কবিতাঃ স্মৃতির সরণী বেয়ে – শুভ্রাশ্রী মাইতি

স্মৃতির সরণী বেয়ে
শুভ্রাশ্রী মাইতি

ফেলে আসা ছেলেবেলার ভেতর এক শান্ত মুনিয়া পাখি রাধেকৃষ্ণ ডেকে যায় অবিরাম। তার কৃষ্ণনামের ভেতর ভিজে ভিজে যায় একটা নরম রসকলি পথ। একতারা গ্রাম। আমজামবটের ছায়া। মেঘেদের মায়া নিরন্তর।
এমন ছেলেবেলার কাছে ফিরে আসতে পারি না বলে, বৃষ্টি পড়ে…বৃষ্টি পড়ে কোথায় যেন খুব। বৃষ্টির ভেতর ঝাপসা হয়ে আসে পাইন পাতার চরাচর। ঝুম চাষের আঁচল। লতাপাতার ঘরদোর।
আমার সমস্ত বিষণ্ণতা থিক নাত হানের কবিতা হয়ে কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া বৌদ্ধ গুম্ফার দিকে অপলক চেয়ে থাকে শুধু।

“উঁহু, মোটেও তা নই। আমি নারীবাদী হলে অনেক আগেই আপনার কথার প্রতিবাদ করতাম। কিন্তু কিছুই বলিনি।”

“কোন কথার?”

“ওই যে আপনি তখন বললেন না যে পুরুষ হিসেবে আপনার কর্তব্য নারীদের প্রোটেক্ট করা…”

“কই না তো? …কখন বললাম?”

“ওই তো বললেন বন্ধুর বিয়ে খেতে গিয়ে মোবাইল হারানো একটি কাতর মহিলাকে পুরুষ হিসেবে সান্ত্বনা দেবেন। ওই কথাতেই আমি আপনার সঙ্গে ঝগড়া করতাম, যদি নারীবাদী হতাম। …আমি নারীবাদী নই,তাই কিছুই বললাম না। চুপ করে গেলাম।”

“এই যে কৃষ্ণকলি ম্যাডাম, নামের সঙ্গে মিল রেখে বেশ তো পলিটিক্যাল স্টেটমেন্টকে আপনি নিজের মতো করে মনের মাধুরী মিশিয়ে অন্য শব্দযুক্ত করে বলে দিলেন, যা আমি মোটেও বলিনি।”

“আরে বাবা, মুখে না বললে কী হল! ভাবটা তো ওই ছিল। মোদ্দা কথা হল– ‘পুরুষ হিসেবে আমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার দায়িত্ব আপনার উপর বর্তায়’।” 

“আপনি তো বেশ ঝগড়া করতে পারেন! উরিব্বাবা, আপনাকে দেখে তো মনে হয় না যে আপনি এমন  ঝগড়ুটে!”

কৃষ্ণকলি হেসে বলল “দেখে যদি সব বোঝা যেত তা হলে তো নচিকেতা গানই করতেন না ‘চেনা-চেনা মুখের সারি আদতে চেনা নয়, সবটুকু চিনতে লাগেই জীবনের সঞ্চয়…’”

“বাহ্‌! বোঝা গেল গান আপনার খুব প্রিয় বিষয়। নচিকেতার এই গানটা তো গেয়ে শোনাতে পারতেন। তাহলে বেশ জমত ভালো।”

“আমি গাইতে পারি না, শুনতে ভালোবাসি। গানের কথাগুলো মন দিয়ে শুনে বুঝতে চেষ্টা করি। …ব‍্যস, ওইটুকুই। এর থেকে বেশি চেষ্টা করলে বাসের লোকজন গত পঁয়তাল্লিশ মিনিট জ্যামে বসে আটকে থাকার সব রাগ আমার উপর ঝেড়ে দেবে।”

“আমি?”

(হেসে) “আমি বলতে পারেন জ‍্যাক অফ অল ট্রেডস … ওই একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করি। আর তার সঙ্গে  ইতিহাস নিয়ে এম.এ. করার চেষ্টা করছি।”

“আপনাকে বন্ধু বলে ভাবতে ইচ্ছে করছে। আপনি খুব গুণী মহিলা। …আমরা কি তা হলে বন্ধু হতে পারি?”

“এতে আর এত কিন্তু-কিন্তু করার কী আছে? …তা হলে আমার ফোন নম্বর নিয়ে নিন। বেশ কথা বলা যাবে।”

“মায়ের কাছে ফোন করেছেন তো; ওখান থেকেই নাম্বার পেয়ে যাব।… আপনি তাহলে বিয়ের আগেই মা হয়ে যাচ্ছেন?”

“মানে??”

একটু হেসে “যদিও একটু লেম জোক, তাও বলি–ওই যে বললেন না এম. এ. করছেন– তাই বললাম।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *