কবিতাঃ অক্ষয় কুমার বৈদ্য

কবিতাঃ অক্ষয় কুমার বৈদ্য

(১)
মৃত্যুহীন একচ্ছত্র আঁধারের অধিকার

গোধূলির আলো যখন ক্লান্তিতে চোখ
বোজে
তখনও তুমি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করো
খুঁজে বেড়াও সেই প্রথম পুরুষ
দূরত্বের অনন্ত দাহ।
একদিন সূর্য আঁকতে তো চেয়েছিলাম
চেয়েছিলাম শোনাতে শিশির ভেজা মাটির তারে ঝংকৃত আহির ভৈরব।
কিন্তু সে কথা তোমাকে বোঝাতে পারিনি
ঘুমন্ত মেঘফুলগুলো সেও আমাকে বুঝল
ভুল
ব্যথাহীন চেতনায়। দেখি ধুলোঘর ধূসর আকাশ।
আমার রংহীন হৃদয়কে বয়ে বেড়াই অপ্রত্যাশিত ভাবে
আজও
মৃত নদীর বুকে খোঁজ করি সন্ধ্যার স্বর্ণাভ জলে
মানিনী তোমার
গতিময় স্বপ্ন অবরুদ্ধ
অথচ একদিন তুমিও তো
স্বপ্নের পাশাপাশি
কাছাকাছি
হেঁটে যেতে চাইতে।
অচেনা অন্ধকার
দাঁড়িয়ে
তুমি খোঁজ করো আলো
আর আমি আগলে রাখি একছত্র মৃত্যুহীন আঁধারের অধিকার।

( ২)
নির্বাক ভাঙনে জীবন্ত এপিটাফ

ধরো তোমার বুকের ভেতরে চলছে নির্বাক ভাঙন
আর বুকের ওপরে জন্ম নিচ্ছে সুউচ্চ পাহাড়।
পাদদেশে অসংখ্য আঁচড় আর ধূসর মৃত্যু
জীবনের স্বপ্নে জীবন্ত ইপিটাফ
অথবা মৃত্যুর মতো প্রাণহীন উন্মত্ত
অসংখ্য বিষন্নতা হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে।
মেঘের স্পর্শ থেকে অনেক দূরে প্রেম
অথচ প্রত্যয়ও অপ্রতিরোধ্য পৃথিবীর কাছে, ছোঁয়াচে।
ইচ্ছেনদী স্রোতহীন
ইচ্ছেমতী তোমারও শরীরের বাঁকে।
কাঁচা অরণ্যের মতোন সবুজ তোমার যৌবন
আলো ঝরে পড়ে ঝুলন্ত পাতায়। অঙ্কুরিত হৃদয়ে রসের উৎস্রোতে
উৎসারিত গর্ভবতী বৃষ্টি নামে তোমার এলোচুলে।
মানিনী, সৌন্দর্য তো মিলনের জন্য
অথবা সৃষ্টির নবীন প্রকাশে।
ধরো তোমার ভিতরে জড় হচ্ছে
সৌখিন মায়াবী গন্ধ
ভেসে যাচ্ছে লাজুক অভিধান।
আমার হৃদয়ে মরুঝড় ধ্বনিত
একগুচ্ছ নীলাভ নীরবতা
পরিযায়ী অভিমানের বিবর্ণ সাম্পান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *