কবিতাঃ কুয়াশাবলয় ৬ – সুধাংশুরঞ্জন সাহা

কুয়াশাবলয় : ছয়
সুধাংশুরঞ্জন সাহা

না বলা কত কথাই রয়ে গেল বাকি,
মনের দরজা হাট করে খুলে রাখি।
দেখতে দেখতে দিন শেষ হয়ে গেলো,
হাজার মাইল পথ পাখি উড়ে এলো।
আমার লেখায় ছিল বিন্দু বিন্দু আলো,
আপামর মানুষের হয় যেন ভালো।
আলোয় আলোয় হাসে নির্মল আকাশ,
মনের আলোয় খুঁজি তুরুপের তাস।
দুহাত তোমার দিকে সাক্ষী একা জল,
নদীর দুঃখের দিনে চোখ ছলছল।
তোমাকে ঘিরে এখন পাখির উড়ান,
বিকেলের শান্ত জলে ভেসে যায় গান।
সেই থেকে বসে আছি মেলে যদি পথ,
চোখেমুখে ভাষা ছিল নানাবিধ মত!
পথ তবু পথ নয় কীভাবে বোঝাই!
একটাই কথা ছিল তোমাকেই চাই।

গাছের পাতার ফাঁকে ভাসে যদি গান,
নির্জন নদীও ভুলে যায় অভিমান।
মাঠে মাঠে জেগে ওঠে মানুষের আশা,
পাখিদের ঠোঁটে ঠোঁটে ফসলের ভাষা।
গানের ফাঁকে গায়ক বলে কত কথা!
সেসব কথায় থাকে বেড়ে ওঠা লতা।
লতার আড়ালে থাকে মুহূর্তের ছায়া,
ছায়ায় ছায়ায় বাড়ে জীবনের মায়া।
মায়ার পরতে থাকে মাতাল হাওয়া,
হাওয়ার গানে গানে মন যায় খোয়া।
মনে যদি অভিমান গাঢ় হতে থাকে,
বৃষ্টিভেজা গোধূলিতে খুঁজি শুধু তাকে।
জীবনের দৌড় যদি যেতে থাকে ধ্বসে,
আগুনের ঘোড়াগুলি হাঁটু মুড়ে বসে।
মাটি থেকে কান্না উঠে জলমগ্ন পথ,
পৃথিবীর পথে পথে ছোটে মনোরথ।
রথের কথাই এলো যদি শোনো তবে,
কুয়াশাবলয় কেটে দূরে যেতে হবে।
দূরের কলঙ্ক দাগ বুঝে ওঠা দায়,
তোমার ভুরুর বনে মেলে যেন সায়।

One thought on “কবিতাঃ কুয়াশাবলয় ৬ – সুধাংশুরঞ্জন সাহা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *