গুচ্ছ কবিতাঃ ঋভু চট্টোপাধ্যায়

গুচ্ছ কবিতাঃ ঋভু চট্টোপাধ্যায়

যে সব জন্মদাগ

যে সব জন্মদাগ এখনো অবধি অদৃশ্য বা অর্ধেক
উপলব্ধির ঘরে তার হাত ছুঁয়ে জন্ম হওয়া
সব ঠিকানাতে বাড়ি তৈরি, অথচ থাকবার জায়গা
খুঁজলেই এখনো সেই ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড।
একটা বানানো আকাশের এককোণে তিন বিত্তের পৃথিবী।
যেখানে হাল দেবার জন্য শরীর মুনিষ হয়,
পাশের দলিল ঘাঁটে বে’পাড়ার বেড়াল।
এখন শুয়ে থাকলেই ছায়া পড়ে। মাছিদের সংসার থেকে
তুলে আনা খাবারে এখন যকৃত বন্ধুত্ব।
খোলা বাহানা পাশ কাটিয়ে যেভাবে যুদ্ধ সেখানেই জন্ম
নেওয়ার আগে তৈরি হচ্ছে কয়েক কদম ভাবনার পাখনা ও লেজ।

উপলব্ধির আরেক বোধ

উপলব্ধির সংস্কার বোধ থেকে জন্ম হওয়া শারীরিক
রূপকথার ভেতরেই তুমি জন্ম।
এপর্যন্ত সকালের দরজায় এক কথায় প্রকাশের রাস্তার পাশে
উত্তর দিকে মুখ করে বসে থাকছে উনকোটি ভ্রুকুটি।
এখন ঠিক খিদে নেই, লোম ভেবে ছুঁয়ে থাকা জঙ্গল
বেঁচে আছে নিজস্ব দ্রাঘিমায়। আমাদের শেষের পাথর বাটির
ভাঙা থেকেই সব শুরু। আগামীকাল মানুষের জন্ম দিবস।

যে সব ব্যাকরণ মানে না

যে সব মেঘ জানে বৃষ্টির ব্যাকরণ যে নদী মাঝ বুকে
পেতে দেয় নৌকার জ্যোৎস্না তার থেকে দূরে থেকে
লাভ ক্ষতির অঙ্ক মেলেনা। এখন সেমিকোলনের মাঝপথেও
অস্থিরতা, বাঁকা থাকবার কোন গোপন কারণ না থাকলেও
জোর করে অঙ্ক মেলানো একটা গণিতের যোগাযোগ।
উৎস থেকে দূর পর্যন্ত না যাওয়া হলেও মাঝ রাস্তায়
নামিয়ে দেবার নাম বোকা দেশের বাসিন্দা।
এখন দু’হাত পেতে থাকবার থেকে গড়িয়ে পড়া আঙুল
জানে ঠিক কার কাছে উপকৃত উপপাদ্যে ছড়িয়ে
দেওয়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে আস্ত সাম্রাজ্যের সমাপতন।
যদি রাস্তা নাও থাকে চাপিয়ে ঘরে ফেরার জন্যে
এখন অপেক্ষার জানলায়, বেকার রোদ সময় কাটানোর দাবায়।

জল ছাপ এক হয়

বাড়তি প্রেম নেই, শরীরের মৃতদেহ ফেলে বাড়ি গেলে
সেই এক ঢোল এক সুরে কাঁসির পান্তা পেঁয়াজ।
ডুব দিয়ে যতটা থাকা যায় তার থেকে আরো
একটু এগোলেই পড়ে থাকা জল ছাপ এক করে
বোঝা যাবে ঠিক কার হাতে এখন সংসার খঞ্জনি।
বনমালি বড় বেশি দাম নিলে বাঁধাকপি,
আমি সেই ভোররাতে মাঠ ফেরা শেয়াল সাক্ষী,
এ পর্যন্ত আর কোন ভুল করিনি।

যে নামের ব্যাকরণ

পায়ের তলায় মাটি না থাকলেও চাটার থেকে
বড় ব্যাকরণ আর নেই। পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে
সামনের চেয়ারে বসার নাম লক্ষ পূরণ না হলেও
বান্ধবী ও বাতকর্মের ভেতর কতটুকুই বা পার্থক্য আছে?
এখন সেই ঘাড় নিচুদের দলে, একে চন্দ্র দুইয়ে পক্ষ
গুটিয়ে গোপাল ও রাখালের মাঝে একটা ছোট পতাকার
দ্বন্দ্ব সমাস পড়ালেই ভবিষ্যত ও দরজা একই সারিতে।
এখন বন্ধু নেই অথচ হঠাৎ মুক্তি পাওয়া অবৈধ গন্ধে
ঘুম ভাঙছে, যদিও সত্যি জেগে আছি কিনা এখনও জানি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *