কবিতাঃ অভিমান – শিখা কর্মকার (আটলান্টা)

অভিমান
শিখা কর্মকার

সব সেতু পুড়িয়ে দিলাম। ভাসিয়ে দিলাম শেষ সুতোটুকু ।
জতুগৃহে বসে তুমিও কখনো যেন মনখারাপ কোরোনা ।
ভুলে যেও বুকের মধ্যে গাঁথা হাসিটুকু ।
এরোগ্রামের নীলে ভুল করে পাঠিওনা রাতজাগা চিঠি ।
শিশিরের সঙ্গে মিশিওনা নিঃসঙ্গ দুঃখফোঁটা ।
হলই বা তা নিজস্ব। তাই আজই চলে যাচ্ছি চিরকালের মত ।
যে পৃথিবীর ঠিকানা তুমি জানোনা ততটাই দূরে।
তাই-ই তো চেয়েছিলে একদিন, যত কাছে যেতে চেয়েছে প্রাণোৎসারিত উচ্ছ্বাসময় শব্দঙ্কুর,
সরিয়ে দিয়েছ তাদের স্বভাবগত ছলে ও ছুতোয়;
ভেবোনা ভুলে গেছি, বুক ফাটিয়ে নামা অকস্মাৎ অভিমানের বন্যা।
এত বুঝিয়েছি তবু প্রাণপণে আদেখলার মত বুকে চেপে ধরছে
এক জন্ম আগে আকাশ ভাসিয়ে দেওয়া আদর-অক্ষর ।
এক পৃথিবী মোম মসৃণ ভালোবাসা ।
কত বলি তবু বুকের গভীরে আদিম বাউল-স্বভাবটি কিছুতেই সরে না যে।

দিয়ে গেলাম সুরভিত অন্ধকার রাতে
উজ্জ্বল হয়ে ফুটে ওঠা রাতফুলেদের সহজ গল্প,
অচেনা বৃক্ষের দেহ ছুঁয়ে নড়ে ওঠা নিভৃত শেকড় ,
আর আমার প্রিয়তম আকাশ।
যে আকাশে আছে শুধু শুদ্ধবুদ্ধ টান,
আর উদার হৃদয়ের আলোময় মুক্ত সম্পদ,
যেখানে পরকীয়া বলে কিছু নেই।
গহন-গভীর নিষ্কাম প্রেমে পর বলে যে কিছু থাকতে নেই,
সেখানে শুধুই আপন। তাই ফিরে যাচ্ছি বিছিয়ে দিয়ে সবটুকু প্রীতি
পায়ের তলার কণা কণা ঘাসের মত, আর স্নেহে-যত্নে বড় করে তোলা হাওয়াবাতাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *