অমিত চক্রবর্তীর ৩টি কবিতা –
সুরা বা সাকি নয়
সুরা বা সাকি নয়, চোখ, অপলক চোখ দিয়ে
সে ঘিরে রেখেছে টলমলে পুরুষটাকে
পায়ে পায়ে সাজিয়ে আসবাব,
যাতে ঠোক্কর না খায়, কিন্তু পা হড়কালেই
একটা ধরবার জিনিস। হয়তো কোণাগুলো
ছুঁচোলো কোথাও, তবু সীমারেখা
আঁকা এখানে, আঁটোসাঁটো আয়তক্ষেত্রের
কঠিন টানে বাঁধা রয়েছে নিঁখুত বিন্যাস।
সরলরেখা কিছুই নেই আর, গোপন রহস্য
আর তাদের ভারসাম্য নিয়েই চলা
দুজনের। নিরুদ্বেগ। অনেকে অবশ্য বিষয়টিকে
সরলীকরণ করেছেন, বলেছেন বায়োলজি হল
আসল ধ্রুবপদ – বাঁধন কিন্ত অমর্ত্য গান,
সুরা বা সাকি নয়, একটা স্বর্গীয় গৎ,
সা পা বাঁধা শরীরে তানপুরার ভঙ্গিমা।
=============================
বেশি বয়সের প্রেম
বেশি বয়সের প্রেমে তাহলে জাদু আছে কোথাও
মৃদু স্পর্শকাতর তাড়া, ভেলভেটের আচ্ছাদনে ঢাকা
দুটো ন্যাড়া রুগ্ন শরীর। রাগী শব্দ আর
ফুঁড়তে পারে না এখানে,
বুকে হাত রাখলেই তরল হয়ে যায় গুচ্ছ অভিমান
অথবা নষ্ট ভুল, তার কপট স্তুতি, নিন্দাচ্ছলে
কথা সাজানো অলংকার।
সময়ের বেয়াড়া জোয়ারে যদি মন
অবসন্ন হয়, “কী যে তোমার এত কথা,
এত ব্যস্ততা, কথামালা”, বেরিয়ে আসে মুখ থেকে
অযত্নে বা অনিচ্ছায়,
উত্তর ফেরত আসে, “বাবুল, বাবুল, চুনরি মে দাগ” …
=============================
একটুও পছন্দ নয়
ভালবাসব না আর একফোঁটাও
সমপর্ণের জল হাওয়া,
কবিতা স্নিগ্ধ হয়ে যাচ্ছে আমার
একটুও পছন্দ নয় দূর্বাদল ।
আমি চাই অঞ্জন ঘাস, কি ধমন ঘাস
অথবা বাগভেরেন্ডা
আমি চাই বেতগাছ কি ক্যালামাসের চাবুক
অথবা কঙ্করের গ্রিট
অথচ স্বয়ম্বরা, কবিতা স্নিগ্ধ হয়ে যাচ্ছে
তোমার তাঁতের শাড়ির মত –
নরমশরম, গোলাপি বডি, পাড় বর্ণনা
একটুও পছন্দ নয়