KOBITA: PINTU

কমলা ও হাজার কাপুরুষ
পিন্টু ভট্টাচার্য্য
তেমাথার মোড়ে থমকে গেল কমলা—
বাঁ পাশে সারি সারি অটো,
ডানপাশের দোকানে একদল কলেজ পড়ুয়া,
রাস্তার ওপারে পোশাকের স্তুপ থেকে
খুঁটে খুঁটে পোশাক তুলছে কয়েকজন,
রাস্তায় অগুণতি দ্রুত চলমান মাথা
অগণন বিচিত্র যানের আনাগোণা।
চিরকাল ভীড় এড়িয়ে চলা মেয়েটি
মানুষের ভীড়ে আশ্বস্ত হয়ে
ফুটপাথের একপাশে বসতে যেতেই—
বাঘের ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে পড়ল
এতক্ষণ পিছু নেওয়া কাল-গোখরো।
ঘটনাটা সহস্র কামাতুর ভয়ার্ত চোখের
নজর এড়িয়ে গেল ;
কেননা গোখরোটি নিজের দেহ দিয়ে
আড়াল করে রেখেছিল
কমলার দেহ এবং লজ্জাস্থান।
শুধু চারজন লোক তাড়া দিল
সামনের অটো-ওয়ালাকে।

তার নির্বিকার দৃষ্টি মোবাইলের স্ক্রিনে—
অনায়াস দক্ষতায় ধরে রাখছে দৃশ্যপট।
গোখরোটি তখন উপগত হচ্ছে
পরম নিশ্চিন্তে ; সিঁদুর-লাল দুচোখে
ঠিকরে বেরোচ্ছে চরম পুলক।
নিস্তেজ হয়ে আসছে অসহায় নারীদেহ,
বিকৃত মুখমন্ডল।
মধ্যরাতের ছায়াচিত্র ব্যস্ত দশটার ফুটপাথে।
একজন মধ্যবয়স্ক লোক
কানে মোবাইল আটকে
“ হ্যালো , পুলিশ-স্টেশন
তেমাথার মোড়ে এই মুহুর্তে—”
বলতে বলতে পাশ কাটিয়ে গেল।
ক্রমে মহাশূণ্যে বিলীন হল কা কা শব্দ,
সামনের অটোটা যাত্রা করল গন্তব্যে,
চারপাশের দৃশ্যপট যেমন ছিল
তার কোন পরিবর্তন দেখা গেল না।
শুধু কমলার মাথার কাছে
এসে দাঁড়াল আরক্ষক—
তখন নিশ্চিন্তে নিদ্রা নামছে
রাতজাগা ক্লান্ত চোখে,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *