আসুন, দাঁড়িয়ে পড়ুন…
পলাশ দাস
আসুন, পাশাপাশি দাঁড়িয়ে পড়ুন।আমরা একটা ভিড় বাসের যাত্রী। আর আমাদের গন্তব্য হয়তো ভিন্ন হলেও খানিক দূর
যাব আমরা একসাথে। তাই এই গা ঘষাঘষি করে দাঁড়ানো। খুব বেশি হলে আমরা এইটুকুই বলব, একটু সরে দাঁড়ান। আর পায়ের
উপর পা পড়লে বলব, একটু পা-টা সরিয়ে নিন। আমরা একে-অপরের দিকে তাকাব, কিন্তু তাকাব না। কথা বলার ইচ্ছা থাকলেও
তাকে সংবরণ করে যাব অন্তিম সময় পর্যন্ত।
আসুন, দাঁড়িয়ে পড়ুন।খুব ইচ্ছা না থাকলেও মনে বা মুখে একেবারেই বলতে না চাইলেও আমি আপনাকে দাঁড়াতেই বলছি
আমার পাশে। দাঁড়িয়ে পড়ুন। এই সময়, এরপর আর হয়তো এটুকু জায়গাও অবশিষ্ট থাকবে না। এই জায়গা শেষ হয়ে আসে এর
আগে আপনি দাঁড়িয়ে পড়ুন। আমরা এখন সহযাত্রী।
আসুন, দাঁড়িয়ে পড়ুন। আমি আপনাকে হয়তো চিনি না, আবার হয়তো চিনি। আমরা কতটুকুই বা চিনি। এই যে বুক
ফাটিয়ে চিল্লিয়ে যাকে বলি আমরা চিনেছি, ভালো করে ভেবে দেখুন তো, যখনি খুব গর্বের সাথে বলেন চিনেছি এবার, তখন সেই
মুখটি সব গুলিয়ে দেয় না? তাহলে কী চেনা হল?
আসুন, দাঁড়িয়ে পড়ুন। আর এই দাঁড়িয়ে পড়ার পর পরই যদি কোনো চেনা মুখ এসে যায় চোখের সামনে, আমি ব্যস্ত হয়ে
পড়ব তার সাথে কথা বলতে। তাকে একটু জায়গা করে দেবো আমার আর আপনার মাঝখানে। জানি আপনি কিছু মনে করলেও
মনে করবেন না। আর আমরা গল্প করতে করতে চলে যাব গন্তব্যের খানিকটা পথ। তারপর সে নেমে গেলে আবার আমাদের
নিঃশব্দের চলাচল। আবার আমরা দেখব অথচ দেখব না, তাকাব অথচ তাকাব না, কথা বলার ইচ্ছাগুলোকে খুব খুব করে সংবরণ
করব। কিন্তু, কী অদ্ভুতভাবে আমরা একে অপরের নিঃশ্বাসের ওঠা পড়া শুনতে পাব, ঠিক পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকব। আর
অস্বীকার না রেখেই আমরা এগিয়ে গন্তব্যের বাকি পথ…
বাহ্ বেশ অভিনব লাগল লেখাটা। খুব ভালো।
বাহ্, এক বাস্তব অনুভূতি