জ্বর
সৌমী চক্রবর্ত্তী
গভীর রাতে মিশমিশে কালো রঙের মধ্যে
তাপমাত্রা মাপে থার্মোমিটার।
বেহুঁশ হয়ে ধুঁকছে শরীর।
উত্তাপ কমা-বাড়ার সঙ্গে অবিরাম অস্থিরতার ঝরে পড়া
ঠিক কালো মেঘের মনখারাপের মতো।
প্রেমিকার গালে থার্মোমিটার বিলাসিতা তখনই হয়
যখন দেখি ঝুপড়িবাসীদের মৃত চোখ; অস্বচ্ছতা ভরপুর যেখানে।
সস্তার কাব্য লিখতে বসে এদিক-ওদিক নজর চলে গেলেই বিপদ।
হড়হড়িয়ে ম্যানহোল থেকে পচা জলের মতো অবসন্ন-নির্জীব-হাঁটুতে গুঁজে থাকা মুখ এইসব শব্দবাচ্য মনে আসে।
জ্বর; নিরীহ শব্দের ডাক পাঠিয়ে কাপপ্লেটে বসাতে পারলেই কেল্লাফতে।
অচেতনে গুঁঙিয়ে যেতে যেতে এই পৃথিবীর সব সুখ;সব আহ্লাদ শেষ হয়।
ওই যে নীচুজমির ঘরবাড়ি- বৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া খাটের পায়া,শুখাতে ঝলসানো চামড়া
পান্তা ভাতের জীবন; হাতের বাঁধুনি শক্ত করে লড়ে যায় কিংবা হেরে যায় যারা
তাপমাত্রা ওজন মাপার মতো নড়েচড়ে কিন্তু ব্রেককষা জীবন থমকেই থাকে,
জ্বর; শব্দটি তাদের জন্যই তৈরি।
স্বাদহীন মুখে সাধ করে আর নাই বা বললাম-উষ্ণতা মাপো,
নাই বা করলাম কাব্যকথার লেজুড়বৃত্তি
নাই বা করলাম…!