কবিতাঃ অশ্বারোহীর কলম – চয়ন ভৌমিক

অশ্বারোহীর কলম
চয়ন ভৌমিক

একটা অদৃশ্য কশা, হাওয়ার ভিতর আওয়াজ তোলে। আর শুরু হয়ে যায় শ্বাসমোচী দৌড়। এই মেঘের সোনালী বারান্দায় পায়চারি, তো পর মুহূর্তেই দুর্গম ঘাটিপথে জঙ্গল ফেড়ে ফেলা আলোর ছুরিতে। তেনুঘাটের তিনশো গ্রাম নিশ্চিহ্ন করা বাঁধ কিংবা কিরিবুরুর লোহাখনির নীচে চাপা পড়া হাতিদেবতার অভিশাপ চলতে থাকে পাথুরে নেভিগেশনের নির্দেশে। আপেক্ষিক গতিতে ঘড়ি থমকায়, হারিয়ে যায় তির্যক তরঙ্গপথ। স্টেশন থেকে স্টেশনে, ট্রেন থেকে ট্রেনে রাত জাগার প্রস্তুতির মধ্যেই মোমবাতি জ্বলে ওঠে। নদীর দীর্ঘশ্বাস, পাহাড়ের মাথায় জমে থাকা ধূসর মেঘ, বাষ্প ও বৃষ্টি নামায় হাইওয়ের মাইলস্টোনে। অথচ ছাতার দোকান খুঁজে পাই না আমি। কখনো সখনো ঘুম ভাঙে স্বপ্ন চোখে। পর্দা উড়লে নজরে পড়ে তিলাইয়া ব্যারেজের স্থির অন্ধকারে ভেসে আছে একাকী এক ন্যুব্জ পানসি। অনেক দূরে তার ছায়াহীন ঝুঁকে আসা ছিপ। আমি থামি। অদৃশ্য চাবুকও। গভীর জলের দিকে তাকাই। আমার চোখের ব্যথার নীচে বিছিয়ে যেতে থাকে কমলারঙের চমৎকার। তিরতির করে চতুর্দশীর নগ্ন হাওয়া। ধুলোহীন আকাশ মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় আমার। সদ্যোজাতদের হাসি ছড়িয়ে যেতে থাকে আমার সমস্ত কালো-ক্লান্তির গভীরে।

One thought on “কবিতাঃ অশ্বারোহীর কলম – চয়ন ভৌমিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *