শারদীয়ার সম্পাদকীয়ঃ মন্দিরা গাঙ্গুলী

ছবি – ঈশিতা গাঙ্গুলী

নমস্কার। শুভ শারদীয়া।
আমাদের একমাত্র পরিচয় আমরা বাঙালী। বাংলায় কথা বলি। বাংলা ভাষা আমাদের কাছে আদরের নাম, আবেগের নাম, আমাদের মায়ের নাম। কখনো ভুলে যেতে পারিনা এই ভাষার জন্য শহীদ হয় আমাদের ঘরের ছেলেরা। দেশে বিদেশে পৃথিবীর প্রতিটা কোণে যেখানে যত বাঙালি আছে সবাইকে একসাথে বেঁধে ফেলার যোগসূত্র, একটা সুযোগ শারদ উৎসব। বাংলা বিরোধী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদও বটে।
পঞ্চাশ বছর ধরে অবেক্ষণ পত্রিকা চলেছে, মাঝে থেমে যাবার পরও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আবার চলেছে একটাই স্বপ্ন নিয়ে তা হল, এই বাংলা ভাষায় বাংলা সাহিত্যের চর্চা এবং সেই চর্চার মধ্যে দিয়ে নিজেদের জীবনে সাহিত্য এবং ভাষাকে আরো বড় করে পেতে চাওয়া। এই শারদ সংখ্যা সেই স্বপ্নকে লালন করে সার্থকতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিশ্চিত ভাবে সাহায্য করবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সংস্কারের সমস্ত ভেদাভেদ মুক্ত এই পত্রিকার উঠোন, যেখানে খোলা হাওয়া শুধু মিলনের গান গায়। লেখক ভালোবেসে লেখেন, পাঠক ভালোবেসে পড়েন।
অবেক্ষণ গোষ্ঠীর প্রত্যেকের অকৃত্রিম ভালোবাসা, নিষ্ঠায় প্রকাশিত হল ‘শারদ সংখ্যা ১৪২৭’। সমস্ত লেখক, কবি তাঁদের সেরা লেখা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছেন পত্রিকার পাতা। ভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন কথার লেখাগুলি নানা রঙে রঙিন হলেও, সমস্ত লেখায় আছে শুভ চিন্তা, উত্তোরণ আর ভালোবাসার কথা। সবার ছবি এবং জায়গার নাম তাঁদের লেখার সাথে দেওয়া হল। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, উঃ ২৪ পরগনা, আলিপুর দুয়ার, শিলিগুড়ি, কলকাতা, বনগাঁ, হাওড়া, রিষড়া, মেদিনীপুর, বর্ধমানের পর রাজ্য ছাড়িয়ে ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্র তারপর বাংলাদেশের ঢাকা, সিলেট, টাঙাইল, রাজশাহী এবং সুদূর আমেরিকার নিউ জার্সির কয়েকজন লিখেছেন এই শারদ সংখ্যায়। বিন্দুতে সিন্ধু দেখার মত আমরা বিশ্বের সমস্ত বাঙালিকে এক করে দেখতে পেলাম লেখক সূচীতে।
পত্রিকার এই সংখ্যা প্রকাশের প্রস্তুতিতে উৎকন্ঠা ছিল ভালোবাসা ছিল, পরিশ্রমও ছিল তারপরেও ছিল অপার আনন্দ। একসাথে অনেকগুলি উৎকর্ষ সাহিত্য পাঠের আনন্দ মানুষকে স্বর্গসুখ দিতে পারে সেতো সাহিত্যপ্রেমী সমস্ত পাঠকেরই জানা। সম্পাদনা করতে গিয়ে সেই সুখে আমরা বিভোর হয়েছি। অবেক্ষণ পত্রিকার প্রিয় পাঠক, এখন আপনারা এই সুখ নিজের করে নিন।

আমরা সবাই অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করছি । মহামারিতে অনেক পরিচিত, অপরিচিত জনকে হারিয়েছি, তাঁদের অকাল প্রয়াণে শোকাহত অবেক্ষণ পরিবার। এই ভয়ঙ্কর অসুখের সাথে লড়াই করে , নিজেদের জীবন বিপন্ন করে অনেক মানুষের জীবন দান করে চলেছেন যেসব চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী তাঁদের সকলকে অবেক্ষণ পত্রিকার পক্ষ থেকে অনেক শুভেচ্ছা আর প্রণাম । পৃথিবী সেরে উঠুক এই প্রার্থনা।সকলে নিরাপদ থাকুন, ভালো থাকুন। উৎসবের দিনগুলো আনন্দের হোক।

15 thoughts on “শারদীয়ার সম্পাদকীয়ঃ মন্দিরা গাঙ্গুলী

  1. পড়া শুরু করলাম। প্রথমেই দুর্দান্ত সম্পাদকীয়। সাফল্যের সাথে অবেক্ষণ কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অভিনন্দন। অনেক শুভ কামনা রইল।

  2. অপূর্ব হয়েছে সম্পাদকীয় লেখা। শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই।

  3. সম্পাদকীয় লেখা পড়ে মন ভরে গেলো । সম্পাদিকাকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই । খুব ভালো থাক।

  4. অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে সার্বিক প্রতিকূলতা সত্বেও অবেক্ষণের অস্তিত্বই এর সাফল্য। অবেক্ষণের সাফল্যের পথে সম্পাদিকার নিরলস পরিশ্রম, উদার দৃষ্টি এবং দক্ষতা দৃষ্টান্তমূলক।

    1. আন্তরিক শুভেচ্ছা। খুব সুন্দর হয়েছে পত্রিকা। সম্পাদনায় রুচির ছাপ সুস্পষ্ট। সম্পাদকীয় এক কথায় অনবদ্য।

    2. ভরসার জায়গা গুলোর ভিত শক্ত হলে অসাধ্য সাধন হয়। নিজের ক্ষমতার বাইরে গিয়েও সফল হওয়া যায়। অশেষ অবিরাম শুভকামনা

  5. খুব ভাল লাগল সম্পাদকীয়।একদম নির্মেদ, ঝরঝরে…❤️🌼🙂

  6. অবেক্ষণ পত্রিকার ঐতিহ্যর সাথে সাযুজ্য বজায় রেখে লেখা সম্পাদকীয় ভীষণ ভাল লেগেছে। সাধুবাদ সম্পাদক ও টিম অবেক্ষণকে।

  7. কি অসাধারণ সম্পাদকীয়। সহজ, সরল, সুন্দর এবং যারপরনাই সত্যি। অনেক অভিনন্দন আর আন্তরিক শুভেচ্ছা ।

Leave a Reply to Krittika Bhaumik Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *