আমার নববর্ষ
কেতকী বসু
অপরিণত কাঁচা বয়সে ঘুম ভাঙতো মায়ের ডাকে ,বারান্দার ওপারে তখন মিঠে বাতাস ,আর গনগনে আগুনের সামনে উত্তাপের আড়ম্বর, ঝাপসা হওয়া চোখের সামনে,বাবা মা,দিদি।
নববর্ষের সকালে প্রথম আলো দেখা,
পুরানো সব আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলার মধ্যে দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে,সুন্দর দিনের আহ্বানে মেখে নেওয়া উত্তাপ।
তারপর শুরু হত নিয়ম মেনে নিমপাতা আর হলুদের আলিঙ্গন,সারা শরীরে মায়ের নরম হাতের স্পর্শে মনে হোত, সারাজীবনের মতো অসুখ বুঝি বিদায় নিল এবার।
বড্ডো বেশি মায়া আর ভালোবাসা দিয়ে ভরে থাকা সংসারে আড়ম্বরের সম্ভার।
পোশাক এলো লাল,ছাপা,ফ্রকের সামনে কোচকানো ফুল,বেশ মানানসই,
রুচিশীলতায়,আর সৌন্দর্যে মা আদর করতেন কতো।
বড়দের প্রণাম আর আশীর্বাদে মনে হত লক্ষ পাহাড় ও পার করা যাবে এবার।
বিকেল হলেই সাজ সাজ রব,
গোষ্টের মেলায় যাওয়ার তোড়জোড়,
বাবার হাত ধরে হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে
শক্ত করে থাকা।
হারিয়ে গেল আমার ছেলেবেলার নববর্ষ।
মোবাইলে আঙ্গুল টিপে শুধুই শুভেচ্ছা বার্তায় আন্তরিকতা,
মিষ্টি মুখের মিষ্টি ,শুধু কথায়,আর আশীর্বাদ অলক্ষের অন্তরালে।
নীরব হয়েছি মধ্যবর্তী সময়ের কাছে,
সৌখিনতাকে বশ করে বিগত স্মৃতিকে আকড়ে ধরেছি নববর্ষের নতুন প্রভাতে।