আত্মহত্যা অথবা..
অনিরুদ্ধ সুব্রত
ঘরের ভিতর দুলছে শরীর
যদি ছিঁড়েও যায় দড়ি কিছুক্ষণ পর
তাতে কী, পুরণ হয়েছে মৃত্যুর অবকাশ
দরজার ছিটকিনি ভেঙেচুরে
বাইরে থেকে চিৎকারে হোক যাই উদ্ধার
আশ্চর্য ভাবে শিহরিত হোক নিকট দর্শক
ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ জীবনের সিলেবাস।
নাসারন্ধ্রের কাছে হাত পেতে
দেখে নেওয়া হয়ে গেছে, স্তব্ধ নিঃশ্বাস
ঝুলে পড়া হাত তুলে, নাড়ীর সংবাদ
আর খুব তৎপর হলে তখন আসপাশ
দড়ি কেটে নামানো হচ্ছে উপস্থিতি, তোমার
এরপর অশ্রুধৌত আনুষ্ঠানিকতা অন্তে
তোমারই উল্লেখ যাচ্ছে খুব জোর মর্গে
কেননা পরবর্তী খবরে, তুমি থাকবে
বিবৃতির আরাম স্বর্গে।
ঠিক এইরকম একটা সাংকেতিক সিনেমায়
তোমাকে বারংবার রিহার্সাল করতে হয়
একবারে ফাইনাল টেক দিতে পারো না—
কিন্তু কেন, স্ক্রিপ্ট লিখেছিলে তো তুমি
আত্মবিসর্জনের আবেগ ছিল তোমার থিসিস
তারই প্রাকটিক্যাল এ্যাকশন শুরু হলে
শববাহী গাড়ি দেখেই তোমার কেন যে
এমন মন খারাপ হয়।
তুমি কোনটা চাও— বিফল সিনেমা নাকি
অসফল সংকেতে নষ্ট নাট্যরস—
যে কোনো একটা পরাজয় তোমাকে নিতে হবে
শ্রেষ্ঠ পরিচালকের গল্প শুনতে শুনতে
অস্কারজয়ী চলচ্চিত্রের বিবিধ ইতিহাস
পড়তে পড়তে বিভোর হয়েছ তো সারারাত
এবং তার পর তুমি নেমেছ ঠিক, এই
আত্মহত্যার নবতর সিনেমায়।
একটি প্রশ্নহীন সিনেমা তৈরি করতে গিয়ে
একটি মিষ্টি-আত্মহত্যা, ছিল নির্বাচিত বিষয়–
ফুলবাগানের ভিতর একটা ঘর, ঘরের ভিতর
স্বপ্ন অথবা ঘুম, আর ঘুমের ভিতর দিয়ে
একটা ফ্যান্টাসির রাস্তা, যার হাতছানি
পার্থিব পোকারা উপেক্ষা করতে পারে না
এবং শেষ পর্যন্ত তারা প্রাকটিস করতে করতে
নিঃশেষ হয়ে যায়, তারপর ভীষণ হাসি
এবং হেসে গলায় পরতে হয় দড়ি।
যদি ছিঁড়েও যায় দড়ি কিছুক্ষণ আগে
তখন তো চিত্রনাট্য বদলাতে হবে
তাছাড়া মিষ্টি-আত্মহত্যার গল্প বদলে গেলে
তুমি কী করবে, কেননা কুশীলবের গলায় দাগ
আংশিক ভেঙে গেছে হাড়, থেঁতলে গেছে
শ্বাস নেবার দীর্ঘ নল, শিরা উপশিরায় তখন
কঠিন রক্তচাপ অথবা চিরতরে বন্ধ বাক
ঝুলে থাকা শরীরটাকে নামানোর পর
আহত এক উদ্ধারের খবর।
কিছু কিছু কবিতা পড়ে শরীরে শিহরণ অনুভব হয়। এযেন তেমনি একটি কবিতা।
আমার মনে হয়, এসব মন্তব্য কেউ দেখবেন না। তাই প্রাণ খুলে লিখলাম। 🙏
কমেন্ট মন খুলেই করার বিষয়। অনেক কমেন্ট জমা হয়। পড়াও যায় ইচ্ছে হলেই। পড়ার জন্য এবং কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ। এভাবেই সঙ্গে থাকুন।